মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : রিপাবলিকান দলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ স্থানীয় ৫০ জন কর্মকর্তা অবস্থান নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তারা পরিষ্কার করে বলেছেন, আমরা কেউই ট্রাম্পকে ভোট দেব না। ট্রাম্পকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে অযোগ্য ঘোষণা করেছেন। বলেছেন, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘মাথাভাঙা’ বা বেপরোয়া প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সোমবার এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক পরিচালক মাইকেল হেডেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির প্রধানও ছিলেন। এছাড়া রয়েছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটিরবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী মাইকেল চেরটফ, ন্যাশনাল ইন্টেলিজিন্সের সাবেক পরিচালক জন নেগ্রোপন্টে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দু’জন ব্যবসায় বিষয়ক প্রতিনিধি কারলা হিলস ও রবার্ট জোয়েলিক। এছাড়া অন্য যারা এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পেন্টাগন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাবেক কর্মকর্তারা। এসব কর্মকর্তা ২০০৩ সালে ইরাক আগ্রাসনের পরিকল্পনা ও তা তদারকিতে সহায়তা করেছিলেন।
এতে বলা হয়েছে, এমনিতেই রিপাবলিকান দলে ভীষণ সমালোচিত হয়ে পড়েছেন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একের পর এক শীর্ষ স্থানীয় রিপাবলিকান রাজনীতিক সরে পড়ছেন, দল থেকে পদত্যাগ করছেন। তার ওপর ৫০ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তার এমন বিবৃতি অবশ্যই প্রচ- চাপ সৃষ্টি করবে ট্রাম্পের ওপর। তাদের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একজন প্রেসিডেন্ট হতে যেমন চরিত্রের, মূল্যবোধের ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন তার ঘাটতি রয়েছে ট্রাম্পের। যুক্তরাষ্ট্র মুক্তবিশ্বের নেতৃত্বে রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেই নৈতিকতাকে দুর্বল করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান, আইন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তার বেসিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ধর্মীয় সহনশীলতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় তার জ্ঞানের গভীরতা নেই। বিবৃতিতে ওই রিপাবলিকান বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমাদের কেউই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেব না। তবে তাদের মাঝে কেউ কেউ ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এই বিবৃতিতি প্রথমে প্রকাশিত হয় নিউইয়র্ক টাইমসে। এতে তারা আরো বলেন, পররাষ্ট্র নীতির দিক থেকে প্রেসিডেন্ট ও কমান্ডার ইন চিফ হওয়ার মতো যোগ্যতা নেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আমরা মনে করছি, তিনি নির্বাচিত হলে হবেন একজন ভয়াবহ (ডেঞ্জারাস) প্রেসিডেন্ট। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও কল্যাণকে ঝুঁকিতে ফেলবেন।
উল্লেখ্য, ৫০ জন শীর্ষ স্থানীয় এই রিপাবলিকানের বিবৃতি সংগ্রহে সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন ফিলিপ জেলিকো। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইসের একজন শীর্ষ উপদেষ্টা ছিলেন। এই বিবৃতিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এ কারণে অনেক মার্কিনি হতাশাগ্রস্ত। বিবৃতিতে বলা হয়, তাই বলে আমেরিকানরা যে ভীতিকর চ্যালেঞ্জের মুখে এই নির্বাচনে তার জবাব ডোনাল্ড ট্রাম্প হতে পারেন না।
আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, যদি ট্রাম্প নির্বাচিত হন তাহলে ওভাল অফিসে তিনি হবেন আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বেপরোয়া প্রেসিডেন্ট। এমন বিবৃতিতে ডেমোক্রেট শিবির থেকে প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়েছে। দলটির পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রিপাবলিকান দল নিউইয়র্কের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীকে মনোনয়ন দিয়ে যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে তারই বহিঃপ্রকাশ এই বিবৃতি। সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগ্রেস এবং হিলারি ক্লিনটনের প্রচার উপদেষ্টা ব্রায়ান কাতুলিস বলেছেন, বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা রিপাবলিকান দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক শাখায় এখনো রয়েছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে প্রাইমারি নির্বাচনে হেরে গেছেন দলের যেসব প্রার্থী তাদের কারো কারো উপদেষ্টা ছিলেন এদের অনেকে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাবেক মুখপাত্র টমি ভিয়েটর বলেছেন, ট্রাম্পকে কমান্ডার ইন চিফ পড়ে অযোগ্য বলাটা খুব কঠিন।
তবে এটা বলা যায়, তার বেসিক মূল্যবোধ সম্পর্কে তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। তবে এ বিবৃতির বিষয়ে জবাব দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের ওয়াশিংটনের ব্যর্থ অভিজাত (ফেইল্ড ওয়াশিংটন এলিট) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, এরাই বিশ্বকে এত ভয়াবহ স্থানে পরিণত করেছেন। রিপাবলিকান দলের এসব ব্যক্তি ও হিলারি ক্লিনটন ইরাক আক্রমণের বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক। তারাই আমেরিকানদের বেনগাজিতে মারা যাওয়া অনুমোদন করেছেন। তারাই আইসিসের উত্থানকে অনুমোদন দিয়েছেন। সিএনএন, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।