পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ফিলিস্তিনের পবিত্র মসজিদ আল আকসাকে ‘রেড লাইন’ আখ্যা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়িব এরদোগান। আল আকসার ওপর হস্তক্ষেপকারীদের হাত ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি এই হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত শতাব্দীর সেরা চুক্তি আমাদের নিকট অগ্রহণযোগ্য। ইসরাইল তো একটি অবৈধ রাষ্ট্র, মুসলমানদের পবিত্র মসজিদ আল আকসার ওপর যে-ই হাত বাড়াবে তার হাত আমরা ভেঙে ফেলব। এরদোগান আরও বলেন, শতাব্দীর সেরা চুক্তির মাধ্যমে আমেরিকার প্রধান লক্ষ্য প‚ন্যময়ী নগরী আল কুদসকে (জেরুসালেম) গ্রাস করে নেয়া- আমরা কিছুতেই এটা মেনে নিব না। তথাকথিত শতাব্দীর সেরা চুক্তির ব্যাপারে আরব ইসলামি রাষ্ট্রসম‚হের ভ‚মিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী এই নেতা। ‘ট্রাম্পের মুসলিম বিরোধী চুক্তির বিপক্ষে সউদী আরব এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি; কখন আমরা তাদের আওয়াজ শুনতে পারব’ প্রশ্ন ছুড়েছেন এরদোগান। ‘যেসব ‘বিশ্বাসঘাতক আরব হাত’ ট্রাম্পের ফিলিস্তিনি বিনাশী ওই চুক্তির সমর্থন করেছে, তাদেরও হিসেব দিতে হবে’। ‘যখন আল কুদসের ওকবৃক্ষ ভেঙে পড়বে তখন গোটা বিশ্বই ভেঙে পড়বে, আমরা কিছুতেই সন্ত্রাসবাদী ইসরায়েলের হাতে তা অর্পণ করতে পারি না। ফিলিস্তিনিরা তাদের জন্মভ‚মি ছেড়ে অন্য কোথাও বিতাড়িত হবে- এটাও মেনে নেব না।’ সবশেষে এরদোগান উল্লেখ করেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে তুর্কিরা প‚ণ্যময়ী নগরী আল কুদস ও পবিত্র মসজিদ আল আকসাকে ধারণ করে বাঁচতে চায়, তুরস্ক সবসময় ফিলিস্তিনের পাশেই থাকবে। অপরদিকে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা কখনও মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এ ঘোষণা দিয়েছেন। রাজধানী আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন দল একে পার্টি-র প্রাদেশিক প্রধানদের এক বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি। এরদোগান বলেন, ইসরাইল ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনের যেসব ভ‚খÐ দখল করে নিয়েছে সেগুলোকে ইসরাইলি ভ‚খÐ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াই ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। তবে কথিত এই শান্তি পরিকল্পনা কখনও মেনে নেবে না তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, পবিত্র জেরুজালেম নগরী হাজার বছর ধরে বিশ্বশান্তির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই নগরীকে নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত তুরস্কের বিরুদ্ধে ‘রেড লাইন’ অতিক্রমের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরাইলি ভ‚খÐ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি দখলদারিত্বের ফলে শরণার্থীতে পরিণত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভ‚মিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে; যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী থাকবে না। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ইসরাইলি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এ পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তুরস্ক প্রথম থেকেই ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে। তবে হোয়াইট হাউসে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তিন মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও বাহরাইন। ট্রাম্প বলেছেন, দেশ তিনটি তার পরিকল্পনা সমর্থন করছে। এজন্য তিনি দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অপর এক খবরে বলা হয়, এরদোগান বলেছেন, জেরুজালেম আমাদের জন্য ‘রেড লাইন’। এটি বিক্রির জন্য নয়। ট্রাম্পের তথাকথিত শান্তি পরিকল্পনা আসলে ইসরাইলের দখলদায়িত্বের পরিকল্পনা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পঞ্চম আনাতোলিয়ান মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় এরদোগান এসব কথা বলেন। আনাদোলু, রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।