Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সেতু রক্ষায় পাঁচ নির্দেশনা, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

দেশের বিভিন্ন সেতুর পাশ থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ঘটনা নতুন নয়। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যদিও এগুলোর বিরুদ্ধে খুব একটা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নজির নেই।
বালুমহাল হিসেবে ইজারা না দিলেও অবৈধভাবে বালি তোলায় সংশ্লিষ্ট সেতুর স্থায়িত্ব কমে যাওয়াসহ নানা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সেতুর নিচে অবৈধভাবে মাটি ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটমহাল। এতে নদীর নাব্য কমে যাচ্ছে। সেতুর স্থায়িত্বও নষ্ট হচ্ছে। কোনো কোনো সেতুর হুমকির মুখে পড়েছে। অবৈধ এসব বালি ও ইটমহালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় স্থানীয় জেলা প্রশাসন বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযান চালালেও স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে নির্মিত সেতু রক্ষণার্থে অবৈধ বালি ও ইটমহালের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরকে এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। স¤প্রতি এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। সওজের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর পাঠানো এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় স্বার্থে মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা টেকসই ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে নি¤œলিখিত নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
প্রথম নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সওজ অধিদপ্তরের আওতাধীন নির্মিত সেতুর আশেপাশে বালি উত্তোলন ও কিছু স্থানে বালুমহাল গড়ে ওঠার ফলে নির্মাণাধীন বা নির্মিত সেতুগুলোর পিয়ার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বালি উত্তোলন চলমান থাকলে সেতুগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এতে করে পিয়ারের সন্নিকটে স্কাউরিংয়ের (গোড়ার বালি সরে যাওয়া) ফলে সেতুর স্থায়িত্ব নষ্ট হবে। তাই সেতুর আশেপাশে যেন বালি উত্তোলন বা বালুমহাল গড়ে না ওঠে, সেদিকে নজরদারি করতে হবে ও প্রয়োজনে উচ্ছেদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
দ্বিতীয় নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেতুসংলগ্ন নদীর নাব্য নষ্ট করে মাটি ভরাটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ইটমহাল গড়ে উঠছে। নদীর নাব্য ও সেতুগুলোর স্থায়িত্ব রক্ষার্থে কোনো ইটভাটা যেন গড়ে না ওঠে, সেদিকেও নজরদারি রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে উচ্ছেদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তৃতীয় নির্দেশমতে, দেশের অনেক জায়গায় নির্মিত নতুন সেতু থাকা সত্তে¡ও পাশাপাশি পুরোনো বেইলি সেতু জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এসব পুরোনো জরাজীর্ণ বেইলি সেতু অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিলাম প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে।
এদিকে সেতুর পাশাপাশি মহাসড়কের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে বৃষ্টির পানি জমে মহাসড়ক, সেতু বা কালভার্টগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সড়কের পাশে আউটলেট (ড্রেনেজ ব্যবস্থা) দিয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন মহাসড়কের দুই পাশে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে সওজের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে অবস্থিত সেতুর নিচে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বা ইটমহাল গড়ে তোলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন অনেক সময় এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও তা অনিয়মিত। এতে বিভিন্ন সেতুর স্থায়িত্ব নষ্ট হচ্ছে। ফলে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য।
উল্লেখ্য, সারা দেশে সওজের অধীন ২২ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক রয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক তিন হাজার ৯০৬ কিলোমিটার, আঞ্চলিক মহাসড়ক চার হাজার ৭৬৭ কিলোমিটার ও জেলা সড়ক ১৩ হাজার ৪২৩ কিলোমিটার। আর এসব সড়ক-মহাসড়কে তিন হাজার ৫৪৮টি ছোট-বড় সেতু, ৮৫৬টি বেইলি সেতু ও ১৪ হাজার ৮১৪টি কালভার্ট রয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেতু

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ