Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাভাইরাস : বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৪২ এএম
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)। গতকাল বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠকের পর সংস্থাটির তরফ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয় বলে বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পেছনে কারণ হিসেবে, ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এবং এটি এখন শুধু চীন নয় বরং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এক বিবৃতিতে ডবিøউএইচও-এর প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, ‘জরুরি অবস্থা ঘোষণার পেছনে মূল কারণ চীনে যা ঘটছে তা নয় বরং অন্যান্য দেশে এটা ছড়িয়ে পড়ছে, এটা আশঙ্কার।’ উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে যেসব দেশের স্বাস্থ্যসেবা ততটা উন্নত নয়, সেসব দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া।
এছাড়া চীনের ৩১টি প্রদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। ভূতুড়ে শহরে পরিণত হচ্ছে চীনের বড় শহরগুলো।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ে আফ্রিকার ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে প্রাণঘাতী ইবোলা ছড়িয়ে পড়ায় তখন বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এ পর্যন্ত চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র চীনের মধ্যাঞ্চলের উহান শহর থেকে শত শত বিদেশি নাগরিককে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং নিহতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের উহান থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।
তবে বিস্তার ঠেকাতে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ চীনগামী বিমানের ফ্লাইট বাতিল করছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, এয়ার এশিয়া, ক্যাথে প্যাসিফিক, এয়ার ইন্ডিয়া ও ফিনএয়ার ইতোমধ্যে চীনগামী বিমানের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।
২০০৩ সালে একই গোত্রের ভাইরাস সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় চীনে। সেই সময় সার্সে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবার ছাড়িয়ে গেছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস। চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববাজারে বড় ধরনের ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এখন পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা শুধু চীনেই ৮ হাজারের বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে চীনের বাইরে ১৮টি দেশে ৯৮ জনের শরীরের এমন ভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের বেশির ভাগই চীনের উহান রাজ্য থেকে আসা। তবে চীনের বাইরে এখনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি বলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিগত দশকে পাঁচটি আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। ২০০৯ সালে এইচওয়ান সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের জন্য, ২০১৩ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার প্রাদুর্ভাব, ২০১৪ সালে পোলিও, ২০১৬ সালে জিকা ভাইরাস এবং ২০১৯ সালে আবারও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে ইবোলার প্রাদুর্ভাবের জন্য।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ