Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ইসি এখন আওয়ামী লীগের ভোট সুরক্ষা কমিশন’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকের ভোট নিশ্চিত ও সুরক্ষা করার জন্য। কিন্তু ইসি এখন হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের ভোট সুরক্ষা কমিশন। তাদের ভোট সুরক্ষার দায়িত্বই যেন ইসির। নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল।
আমির খসরু বলেন, আসন্ন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ জয় পেতে চায়। তিনি বলেন, বিগত দিনে যে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি, আজ পর্যন্ত যে ভায়োলেশন হয়েছে, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে যেগুলো ছোট খাটো লঙ্ঘন নয়, মেজর যে লঙ্ঘন হয়েছে বার বার বলেছি সমাধান হয়নি। শুধু সমাধান হয়নি তা নয়, আরও বেশি লঙ্ঘন হয়েছে। সোহরাওয়ার্দিতে আওয়ামী লীগ যা করছে সেটা নির্বাচনের বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। নির্বাচনের দুইদিন আগে এটা করা যায় না। নির্বাচন কমিশন বলছে তারা কিছু জানেন না, আমরা মনে করি তারা ওয়াচডগ হিসাবে সব পর্যবেক্ষন করেন কিন্তু সমাবেশ করছে এটা তারা জানেনই না, এটা আমাদের তাদের কাছে বলতে হয়। সমাবেশে দক্ষিণের প্রার্থীর ব্যানার-পোস্টার নিয়ে লোকজন যাচ্ছে। এটা ক্লিয়ারলি ভায়োলেশন।
ফুটপাতের ওপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ক্যাম্পের বিষয়ে আমরা বলেছিলাম। তারা বলেছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অফিস ভেঙেছে বলে আমার জানা নেই। সবগুলো অফিসই এখনও আছে, রিটার্নিং অফিসার দুঃখ প্রকাশ করেছেন তারা এক্সিকিউট করতে পারছেন না। তাদের প্রার্থীর পোস্টারের মাপেরর ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি, সেগুলোও নামানোর কথা কিন্তু তা হয়নি, কোন পরিবর্তন হয়নি।
নির্বাচন পর্যন্ত দৃশ্যমান অপরাধ না হলে গ্রেফতার হবে না বলে ইসি জানিয়েছিল, কিন্তু গ্রেফতার চলছে উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করা হবে না বলেছিল, কিন্তু সেটিও শুরু হয়ে গেছে। গ্রেফতারও হচ্ছে নতুনভাবে। আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা নাকি কিছু পায়নি। নির্বাচনের যে পরিবেশের কথা বলে আসছি, আওয়ামী লীগের দক্ষিণের প্রার্থীর একজন এমপি, সিনিয়র নেতা সেখানে বসে ছিলেন; এটা ক্লিয়ারলি ভায়োলেশন। ঢাবিতে বসে একজন প্রেসডিয়াম সদস্য বলেছেন কেন্দ্রের ভিতরে বাইরে আশেপাশে দখলের জন্য। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি নাকি বলেছেন বিএনপি নাকি বাইরে থেকে লোক এনে কেন্দ্রে দখল করবে, দেশের একটি মানুষও কি তা বিশ্বাস করবে, উনি নিজে কি বিশ্বাস করবেন?
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) কনসার্ন আমরা বুঝতে পারছি। দেশীয় দলীয় পর্যবেক্ষকদের ২২টার মধ্যে ১৮টির ওয়েবসাইট নেই। আবার দুইটির একই ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও অরেকটিতে চিফ এক্সিকিউটিভ। সেই প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের অবজারভারদের দিয়ে সবকিছু করতে চায়, বাইরের কেউ দেখবে তারা চায় না। নিয়ন্ত্রণের নির্বাচনের মাধ্যমে ফল পেতে চায়। অবজারভার, ইভিএম সেভাবেই করেছে। তবে কমিশনকে অসহায় বলতে পারব না, তাদের দায়িত্ব তাদের নিতে হবে বলে জানান তিনি।
বিজয়ী হওয়ার জন্য নির্বাচনে এসেছেন উল্লেখ করে খসরু বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি শুধু জিতবে না, বহু ভোটে জিতবে। তাই ভোট নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। সবাই মিলে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের পর্যায় নিয়ে গেছে। এখনও আশায় আছি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন চাইলে পরিবর্তন সম্ভব। চাইলেই জনগণের ভোট ফিরিয়ে দিতে পারেন তারা।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে থেকে সিইসি কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহদাত হোসেন চৌধুরী ও বিএনপির পক্ষ থেকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কমিশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ