গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা সাংবিধানিক নয়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, পৃথিবীতে যুগে যুগে দুই একজন গণবিরোধী স্তাবক ও বিশ^াসঘাতকদের সৃষ্টি হয়েছে যাদের কারনে একটি জাতি স্বাধীনতা হারিয়েছে অথবা করুণ দশায় পতিত হয়েছে। এই পা চাটা গোলামরা শুধুমাত্র নিজেদের পদ ও ক্ষমতার স্বার্থে পুরো জাতিকে ভয়াবহ বিপদের মুখে ফেলে দেয়। তাদেরই মতোই নতুন এক নিলাজ, দলকানা, সেবাদাস প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদাকে জাতির স্কন্ধে চাপিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নুরুল হুদার আচার-আচরণ কাজ-কর্ম কথাবার্তায় মনে হয় তিনি নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক কোন পদে নয় বরং তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আর নির্বাচন কমিশনারকে লীগের অফিসটি দেয়া হয়েছে ইসি ভবনে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত রোববার দুপুরে ইশরাক হোসেনের প্রচারের সময় ওয়ারিতে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী বর্বর কায়দায় হামলা করে। সেই হামলায় তাদের মদদ ও সহযোগিতায় ছিলো পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান তার ওপর মহলের সাথে যে কথাবার্তা বলছিলেন তার ভিডিও ক্লিপ স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তিনি বলছিলেন, ”পরিস্থিতি ‘নরমাল’ (স্বাভাবিক) আছে। ইশরাকের পার্টি মতিঝিল এলাকায় চলে গেছে। আর আমাদের যে পার্টি আছে, (নৌকার লোকজন) ওরা আছে-সেন্ট্রাল উইমেন্সের সামনে। এটা নিয়ে সিইসিকে সাংবাদিকগণ প্রশ্ন করলে তার জবাবে নুরুল হুদা বললেন, “পার্টি মানে পুলিশ, মানে তাদের দল, পুলিশের সাথে যে লোকজন থাকে তাদেরকে পার্টি বলে।”
তিনি বলেন, গণতন্ত্রধ্বংসকারী নুরুল হুদা মনে করেন দেশবাসী সব বোকা আর তিনি খুব চতুর চালাক। তিনি দেশের মানুষকে ব্যাকরণ শেখান! এই সকল ব্যাখ্যার জন্য সাধারণ মানুষ নুরুল হুদা সাহেবকে অনেক আগে থেকেই বিশ্বাস করে না। তাঁর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে সাধারণ আওয়ামীলীগও এতো কঠোর হয় না যতটা সিইসি লীগের জন্য কঠোর। কতটা দলকানা হলে মানুষ এতোবড় নিলর্জ্জ হতে পারে।
নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে সারা সিটিতে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশই তৈরি হয়নি, যাতে করে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়। ইভিএম এর প্রতি যে মানুষের অনাস্থা ও অনাগ্রহ তা দেখা গেছে নির্বাচন কমিশন মসজিদের মাইক দিয়েও ইভিএম এর কার্যক্রম দেখাতে লোক খুঁজে পায়নি। মানুষ এটিকে প্রতারণার মেশিন বলেই মনে করছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের এগারো বছরের শাসনামলে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অগণিত অসত্য ও বানোয়াট মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের ভয়ে নেতাকর্মীরা যেখানে এলাকাছাড়া, ঘরছাড়া সেখানে বিএনপি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ঢাকায় জড়ো করছে, আওয়ামী নেতাদের এধরণের বক্তব্য প্রদানের উদ্দেশ্যই হলো-তারাই বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রধারী দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক চলছে। তাপসের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় এমপি আমির হোসেন আমু সার্বক্ষণিক তার পাশেই ছিলেন। তিনি তাপসের প্রধান নির্বাচনী এজেন্টও। এমপি শফিকুর রহমান প্রকাশ্যে আতিকের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগের এমপি’রা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা আবার এখন দলীয় নেতাকর্মী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোট ডাকাতির ছক তৈরি করছেন-যার খবর ইতোমধ্যেই আমাদের কাছে এসেছে। তারপরেও সকল প্রতিকূলতা ও নীলনকশা উপেক্ষা করে জনগণ ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটারদের প্রতি আহবান জানাই-নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যান, নিজের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন, দু:শাসনের জবাব দিন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কার্যালয়ের নিকট এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির রিজভী। মিছিলে আরও অংশগ্রহণ করেন ছাত্রদলের ওমর ফারুক কাওসার, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মশিউর রহমান রনি, আখতার আহসান দুলাল, দেলোয়ার হোসেন রাসেল, নাসিরুদ্দিন নাসির, মিল্লাত, সুজন, আসলাম, নীরব, শামীম, আরিফ, মামুন হোসেন ভূঁইয়া, কেএম রেজাউল করিম রাজু, মো: ওমর ফারুক সাকিল চৌধুরী , মো: বেলাল হোসেন খান প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।