Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৯৯৯ ফোন করে ধরা খুনি স্বামী!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০৫ এএম

স্ত্রীকে খুনের পর লাশ বিছানায় রেখে ৯৯৯ এ ফোন করেন স্বামী। পুলিশ বলছে মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করতেই জাতীয় জরুরি সেবার আশ্রয় নেন প্রবাস ফেরত মো. কামরুজ্জামান (৩০)। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। পুলিশের জেরার মুখে খুনের দায় স্বীকার করে নির্মম এ খুনের বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরাধীদের কবল থেকে বাঁচতে কিংবা বিপদ থেকে রক্ষায় পুলিশের তাৎক্ষণিক সাহায্য পেতেই সবাই ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করছেন। তবে এই সুযোগের অপব্যহার করতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনা সম্ভবত এটাই প্রথম।
মঙ্গলবার রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার শেরশাহ বাংলাবাজারের গুলশান হাউজিং কলোনির একটি বাসা থেকে গৃহবধূ ফাতেমা লিপির (২১) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার ইনকিলাবকে বলেন, কামরুজ্জামান ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সাহায্য চান। পুলিশ দ্রæত তার বাসায় গিয়ে লিপির লাশ দেখতে পায়। কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন তার অনুপস্থিতিতে কে বা কারা তার স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে গেছে। তার উপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রীর রক্তাক্ত লাশ দেখে থানায় খবর দেন। তবে তার কথাবার্তায় পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এক পর্যায়ে কামরুজ্জামান মুখ খুলেন।
তিনি জানান, তাদের মধ্যে আর্থিক অনটন নিয়ে কলহ ছিলো। এর জের ধরে প্রায় ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার সকালেও ঝগড়া হয়। এরপর তিনি কাজে চলে যান। বিকেলে সাড়ে ৪টায় বাসায় ফিরে দেখেন রান্না হয়নি। কারণ জানতে চাইলে লিপি বলেন, নিজের রান্না নিজে করে খাও। এতে তার মাথায় রক্ত উঠে যায়। স্ত্রীর চুল ধরে মারতে শুরু করেন।

এক পর্যায়ে স্ত্রী লিপিও তার কলার ছেপে ধরেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে হামানদিস্তা দিয়ে লিপির মাথায় আঘাত করেন কামরুজ্জামান। তার মাথা ফেটে যায়। লুটিয়ে পড়েন বিছানায়। জামা কাপড়ে লাগা রক্ত পরিষ্কার করতে বাথরুমে ডুকে পড়েন কামরুজ্জামান। ততক্ষণে লিপি প্রাণ হারায়।
বাথরুম থেকে বের হয়ে লিপির শরীর থেকে কাপড় ছোপড় ছিড়ে ফেলেন কামরুজ্জামান। তাকে নগ্ন অবস্থায় বিছানায় ফেলে রেখে আবার কাজে চলে যান তিনি। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এসে নিজেকে বাঁচাতে স্ত্রী খুন হয়েছেন বলে নিজেই থানায় ফোন করেন।

লিপির বরাত দিয়ে থানার ওসি বলেন, যৌতুকের জন্য লিপিকে নির্যাতন করা হত। কয়েক লাখ টাকা খরচ করে কামরুজ্জামানকে বিদেশে পাঠানো হয়। সেখানে কিছু করতে না পেরে সে দেশে ফিরে আসে। দেশে এসেও বারবার টাকা দাবি করে আসছিল। এ নিয়ে লিপিকে প্রায় মারধর করত। এ ঘটনায় লিপির বাবা মো. হাসান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ