মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) সমালোচনাকে ‘অর্থহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, প্রকল্পটি দেশকে ‘সত্যিকার অর্থেই সহায়তা করছে’। মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনবিসিকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে জনাব খান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জাতিসংঘকে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে মধ্যস্থতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত বুধবার রাতে সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করা হয়।
প্রকল্পটি ঋণের জাল কিনা -সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হ্যাডলি গাম্বলের প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, ‘যখন এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এবং সিপিসিআই নিয়ে চীনারা আমাদের সহায়তা করতে এসেছিল, আমরা সত্যই নিচে ছিলাম। সুতরাং, আমরা সত্যই চীনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, তারা এসেছিল এবং আমাদের উদ্ধার করেছিল,’ -তিনি যোগ করেন।
‘সিপিইসি ঋণের জাল’ এ কথাকে ‘অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করে জনাব খান বলেন, ‘তারা এসেছিল এবং কেবল ঋণ দিয়েছে তা নয় এবং ঋণগুলি মোট পোর্টফোলিওর মধ্যে সবে পাঁচ বা ছয় শতাংশ’, জনাব খান বলেন। তিনি বলেন, চীনারা আসলে পাকিস্তানকে বিনিয়োগে সহায়তা করেছে এবং তাদের কারণে দেশটিতে এখন ‘বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের সুযোগ রয়েছে’।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন, তার সরকার এখন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। ‘আমরা সবেমাত্র দুটি খুলেছি এবং আমরা আরও উদ্বোধন করছি যেখানে আমরা শিল্পগুলিকে বিশেষ ছাড় দিচ্ছি,’- তিনি বলেন।
জনাব খান বলেন, সিপিইসি ‘বিআরআই-এর বাইরে ছিল, কারণ চীনও পাকিস্তানকে প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে সহায়তা করে। তারা আমাদের কৃষিতে বিশেষত সহায়তা করছে, কারণ চীনা প্রযুক্তি (আনতে পারে) উন্নয়ন। (এ খাতে) ‘আমাদের উৎপাদনশীলতা খুব কম’ বরং চীনের উন্নতি আমাদের চেয়ে অনেক উন্নত।
তিনি বলেন, সিপিসি প্রকল্পগুলি থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য সিপিসিও পাকিস্তানীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা শিখিয়েছে। ‘তারা পাকিস্তানে দক্ষতা কেন্দ্র তৈরি করছে। সুতরাং, তারা আমাদের সহায়তা করছে এবং আমরা কৃতজ্ঞ,’ -প্রধানমন্ত্রী বলেন।
এ সপ্তাহের শুরুতে, প্রবীন মার্কিন কূটনীতিক অ্যালিস ওয়েলস আবারও পাকিস্তানের প্রতি চীনের অর্থনৈতিক উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে গ্রহণের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসলামাবাদে একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্কে বক্তব্য রাখার সময় তিনি অভিযোগ করেন যে, সিপিসি প্রকল্পে স্বচ্ছতা নেই এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে, চীনা অর্থায়নের কারণে দেশের ঋণের বোঝা বাড়ছে।
চীন ও পাকিস্তানি উভয় কর্মকর্তাই মার্কিন সমালোচনাকে বিভ্রান্তিমূলক বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য আরও ছাপিয়ে যায় যে, ইসলামাবাদের সিপিইসি’র ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী সিএনবিসির সাথে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে কথা বলেছেন, যেখানে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছিলেন।
যখন সাক্ষাৎকারকারী জিজ্ঞাসা করলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাশ্মীর বিরোধ নিষ্পত্তি করতে কতটা কার্যকর হতে পারে, জনাব খান বলেন: ‘পরিণতি কী হতে পারে তা আমি বলতে পারি না, তবে আমার পক্ষে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা জরুরি, কারণ কাশ্মীর অনেক বেশি গুরুতর সমস্যা- লোকেরা যেটা বুঝতে পারে তার চেয়েও বেশি’।
‘এটি গুরুতর, কারণ দুটি পরমাণু শক্তিসমৃদ্ধ দেশ এর বিবাদে রয়েছে’-প্রধানমন্ত্রী বলেন। ‘এই কারণেই আমি চাই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের প্রধান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তার এখনই হস্তক্ষেপ করা উচিত। জাতিসংঘ, বা জাতিসংঘের মাধ্যমে অন্তত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’।
জনাব খান ব্যাখ্যা করে বলেন যে, ভারত-পাকিস্তানের দ্ব›েদ্বর সম্ভাবনা বেড়েছে। কারণ ‘ভারতকে একটি চরমপন্থী মতাদর্শ দ্বারা পরিচালিত করা হয়েছে, যাকে বলা হয় হিন্দুত্ব বা আরএসএস’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা পিতৃপুরুষেরা ‘নাৎসিদের দ্বারা অনুপ্রাণিত’ এবং ‘জাতিগত বিশুদ্ধতা’ এবং নাৎসিদের ধারণা ‘মুসলমানদের জাতিগত নির্মূলকরণে বিশ্বাসী’ ছিলেন।
ইমরান খান বলেন, যে মতাদর্শটি মহাত্মা গান্ধী হত্যার জন্য দায়ী এবং ভারতের পূর্ববর্তী সরকার তিনবার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছিল সেই গোষ্ঠীটি এখন ভারতকে শাসন করছে।
অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাশ্মীরের জনগণ একটি গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তারা কোন দেশে যোগ দিতে চায়।
‘এখন, এই বিতর্কিত অঞ্চলটি ভারতে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং তারা কাশ্মীরের জনগণের জনসংখ্যার পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে, যা চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধাপরাধ,’ -তিনি যোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী গত ডিসেম্বরে পাস হওয়া বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ভারতে চলমান বিক্ষোভ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অনেকে বলেছে যে, এ বিল মুসলমানদেরকে অস্বাভাবিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সূত্র : ডন অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।