Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের উহানে আটকা পড়েছে ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:৩০ পিএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান শহরে গত দুদিন ধরে আটকে পড়েছেন অন্তত ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসার আকুতি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্য চেয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, উহানের অধিকাংশ দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে তাদের মজুতকৃত খাবারও ফুরিয়ে আসছে। ফলে খুব শীঘ্রই তারা খাবারের সংকটে পড়বেন।
করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে চীনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।

উহান শহরে প্রায় ১১ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন। শহরের অধিবাসীদের শহর না ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ভাইরাসটি যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য উহান শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে সব যাত্রীবাহী বিমান বাতিল করা হয়েছে। শহরের বাইরে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো চেকপয়েন্টের মাধ্যমে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ সৌরভ জানান, ভাইরাসটি যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য উহানের আশেপাশের আরও ১০টি শহরেও একইভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

রাকিবিল তূর্য (২৩) নামে একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্য চেয়ে পোস্ট করলে দ্য ডেইলি স্টার তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, দেড় বছর আগে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য উহানে যান। বর্তমানে তিনি মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছেন।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি চললেও তাকে ২৩ জানুয়ারি থেকে হোস্টেলে বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মতো অন্তত আরও ১৪০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকে পড়েছেন। কিন্তু, বাংলাদেশি দূতাবাস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউই এখন পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধারের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
শুধু তাই না, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় আমাদের খাবারও ফুরিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীরা সবাই আতঙ্কিত এবং চিন্তিত, জানান তূর্য।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। কেউ যাতে আক্রান্ত না হতে পারে সেজন্য এমন কঠোর সর্তকতা জারি হয়েছে।
তূর্য আরও বলেন, “এখানে আমাদেরকে অনেক বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছি, কেনো যাচ্ছি, এসব কিছু লিখে রেজিস্টার খাতায় স্বাক্ষর করে তবেই আমরা বাইরে যেতে পারছি। আবার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমরা কোনোভাবেই খাবার সংগ্রহ করতে পারছি না।”

শিক্ষার্থীরা জানান, বেইজিংয়ে বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেছিলেন। তবে, দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে কেবল কোনো সমস্যায় পড়লে যেনো তাদেরকে জানানো হয়।

এদিকে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের কারও সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়নি। চীনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা হটলাইন নম্বরের (https://www.bdembassybeijing.org/contact-us) মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও লিখেছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এমন নিউজ বাংলাদেশের মিডিয়াতে প্রচার করা হলেও এ খবর ভিত্তিহীন। আমাদের এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি। আমরা সবাই এক কঠিন মুহূর্ত পার করছি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
চীনে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে গণপরিবহন বন্ধ করায় উহান ও পার্শ্ববর্তী হুয়াংগ্যাং শহরের অন্তত ২ কোটি বাসিন্দা কার্যত আটকা পড়েছে। উহানের সঙ্গে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ