গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, ধানের শীষের পক্ষে সৃষ্ট গণজোয়ারকে ঠেকাতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি সকলকে দলবেঁধে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ষড়যন্ত্রকারিদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার আহ্বান জানান।
শুক্রবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী প্রচারণার ১৫তম দিনে মহানগরীর ৪৬ নং ওয়ার্ডের ফরিদাবাদ (জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম) মাদরাসায় জুম্মার নামাজ আদায় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চারদিকে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই জন¯্রােত দেখে নির্বাচন এবং বিএনপির বিজয়কে বানচাল করাতে যে অপচেষ্টা হচ্ছে সেটা কখনোই সফল হবে না। প্রতিপক্ষ বলছেন ঢাকার উন্নয়নে আপনার কোন পরিকল্পনা নেই- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার প্রতিদিনকার বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিপক্ষ বিন্দুমাত্র ধারণা রাখেন না। কারণ আমি প্রতিদিনই ঢাকাবাসীর সমস্যা নিয়ে কথা বলছি। সমন্বয়হীনতা, নগর সরকার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধনসহ নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরে এর সমাধানের পরিকল্পনার কথাও বলে আসছি। কিন্তু তারা হয়তো এগুলো শুনছে না। কারণ তারাতো ব্যর্থ। গত ১৩ বছরে ঢাকাসহ বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে। তাই তারা আগামীতেও কোন কিছু করতে পারবে না, কোন পরিবর্তন আনতে পারবে না। এ কারণে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ক্ষমতায় আসতে হলে ভোট চুরি করে আসবে। তখন আর জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা থাকবে না, জবাবদিহীতা থাকবে না। কারণ জবাবটা কাকে দিবে? ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসলে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শুধুমাত্র সাদেক হোসেন খোকাই নন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোও দেশে মৃত্যুবরণ করতে পারেননি। তিনি মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ওনার পরিবারের দুঃখটা আমি খুব ভাল করে বুঝি। কারণ আমার বাবাও একই ধরনের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। ওনাকেও বিরোধী দলের রাজনীতি করার কারণে এই বাংলাদেশে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে দেয়া হয়নি। তবে এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। জনগণ সব দেখছেন, মহান আল্লাহতাআলা এগুলো দেখছেন। আল্লাহ যথাসময়ে এর বিচার করবেন।
নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনে কোন নোটিশ পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এমন ধরনের কোন নোটিশ পাইনি। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, আমি আমার বাবার রাজনৈতিক আদর্শকে মনে-প্রাণে ধারণ করি। আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশে বসবাস করি। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করি। দীর্ঘকাল ধরে এই এলাকায় আমরা হিন্দু-মুসলমান একসাথে বসবাস করে আসছি। এই জায়গায় আমরা কোন সাম্প্রদায়িক শক্তিকে স্থান দেইনি, আগামীতেও দেবো না। ’৯০-এর দশকে বাবরী মসজিদের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময় এখানে একটা দাঙ্গা হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। সেই সময় আমার বাবা সাদেক হোসেন খোকা এবং তখনকার মেয়র মির্জা আব্বাস সাহেব রাতভর পুরান ঢাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর পাহারা দিয়েছেন।
ফরিদাবাদে দয়াল বাবা মোতালেব শাহ (রাঃ)-এর মাজার জিয়ারত করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন ইশরাক হোসেন। প্রচারণা অংশ নিতে সকাল থেকেই দলীয় কর্মী সমর্থকরা বাংলা বাজার ও ফরিদাবাদ এলাকায় জড়ো হন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সাধারন সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, এসএম জিলানিসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গণসংযোগে অংশ নেন।
সন্ধ্যায় গেন্ডারিয়া মাঠে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় ইশরাক হোসেন বলেছেন, যে কদিন বাঁচবো বাঘের মতো বাঁচবো, বিড়ালের মতো একদিনও বাঁচতে চাই না। আমার বাবা একজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি বার বার এ দেশের জন্য রক্ত ঝরিয়েছেন'। আবার দেশ স্বাধীনের পর বার বার গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে নিজের তাজা রক্ত ঝরিয়েছেন। প্রয়োজনে আমিও রাজপথে রক্ত ঝড়াবো, গুলি খাবো, মারা যাবো তারপরও ভয় পেয়ে পিছু হটবো না। তিনি বলেন, আমার বাবা বলতেন আল্লাহ ছাড়া কোন মানব সন্তানের কাছে মাথা নত করবো না। তাই আমি বলব আল্লাহ ছাড়া আমি আর কাউকে ভয় পাই না। কাউকে পরোয়া করিনা।
বিএনপি'র এই মেয়র প্রার্থী বলেন, এদেশের স্বাধীনতার মূল মন্ত্র হলো জনগণ হবে রাষ্ট্রের মালিক। এই মূল মন্ত্র নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তাই ভোটারদেরকে বলবো, আপনারা সবাই সমান, কেউ বড় ছোট নয়। কারো ক্ষমতা বেশি কম নয় সবার ক্ষমতা সমান। তাই কেউ কাউকে ভয় পাবেন না কাউকে পরোয়া করবেন না।
তিনি বলেন, এই সরকার উন্নয়নের কথা বলেন। পদ্মা সেতুর প্রতিটি পিলার উদ্বোধন হয়। এক টাকার জিনিস ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছ, ২০০ টাকার বালিশ ২৭ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। সব লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন আর দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছেন। আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার কোন ক্ষমতা আপনাদের নেই। জনগণ আপনাদের সেই ক্ষমতা দেয়নি।
এসময় ইশরাক আরো বলেন, আজকে আপনারা আমাকে যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে আমরা আবেগে আপ্লুত। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোন অপশক্তিকে ভয় পাই না। আপনারাও ভয় পাবেন না। আপনারা আপনার পাশে থাকবেন। আমার বাবা যেরকম আপনাদের পাশে ছিলেন ঠিক আমিও সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।