পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধর্ষণ, মহিলাদের ওপর ঘটে যাওয়া অপরাধমূলক ঘটনা ভারতে স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ২০১৮ সালের রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে প্রতিদিন ৯১টি ধর্ষণ, ৮০টি খুন আর ২৮৯টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ, প্রতি ১৫ মিনিটে সেখানে একজন মহিলা ধর্ষণের শিকার হন। কিন্তু বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরো বেশি। প্রতিদিন ভারতের ধর্ষণের শিকার হন শতাধিক নারী।
২০১২ সালে দিল্লিতে ঘটে নির্ভয়া কান্ড। যার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল পুরো ভারত। দীর্ঘ ৮ বছর পর ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে ওই মামলায় ৫ জনের। কিন্তু তাতে যে ধর্ষণের ঘটনা কমেনি, তা যেন ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল এই রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে দেশজুড়ে প্রায় ৩৪ হাজার ধর্ষণের অভিযোগ শুধুমাত্র থানাতেই দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ২৭ শতাংশ দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মহিলাদের ওপর হওয়া এই অপরাধমূলক ঘটনাগুলো অনেক সময় সঠিক ভাবে তদন্ত করা হয় না।
উল্লেখ্য,ধর্ষণের ঘটনায় বিচারে ভারতে ইতিমধ্যে ফার্স্ট ট্রাক কোর্টেও শুরু হয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কখনও কখনও বেশি সময় লাগছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারতে দুর্বলদের ওপর সবলদের কর্তৃত্ব ফলাতে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। শ্রেণী-বৈষম্য এবং পুরুষ-শাসিত যে সমাজে হিংসা ছড়িয়ে ভোট পাওয়ার চেষ্টা আশঙ্কাজনক-ভাবে বাড়ছে, সেখানে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনাকে স্বাভাবিক পরিণতি হিসাবে দেখছেন অনেকেই।
মূলত মেয়ে ভ্রুণ হত্যার কারণে ভারতে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা কম। দেশটিতে প্রতি ১০০ মেয়ে শিশুর জন্মের তুলনায় ১১২টি ছেলে শিশু জন্ম নেয়। এ কারণে, স্বাভাবিকের চেয়ে নারীর সংখ্যা ভারতে প্রায় ছয় কোটি ৩০ লাখ কম।
অনেকেই বিশ্বাস করেন, পুরুষের সংখ্যা অস্বাভাবিক বেশি হওয়ার কারণে নারীর ওপর যৌন নির্যাতন বাড়ছে। নারী ও পুরুষের সংখ্যার অনুপাতে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের চিত্র সবচেয়ে খারাপ। এবং এ রাজ্যে গণ ধর্ষণের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। ভারতের সামাজিক এই বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হয় নারীদের: নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে, ঠিকমতো পোশাক পরো, পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে যেওনা, অথবা ঘরের ভেতরে থাকো।
সবচেয়ে আশঙ্কা যেটা তা হলো এখন অধিক সংখ্যায় শিশুরা টার্গেট হচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যানেই দেখা গেছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে শিশু ধর্ষণের ঘটনা দ্বিগুণ হয়েছে। ভারতে ধর্ষণের শিকার নারীদের ৪০ শতাংশই শিশু। ধর্ষণ শুধু ভারতের সমস্যা নয়, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা এবং নারী-পুরুষের অস্বাভাবিক অনুপাতের এখানকার পরিস্থিতি অন্যদের চেয়ে খারাপ। পাশাপাশি রয়েছে মানুষের উদাসীনতা । নারীর অধিকার বা নিরাপত্তা ভারতে কখনই নির্বাচনী ইস্যু নয়। হতাশার বিষয় হচ্ছে যে, ভারতের বিচার ব্যবস্থাও এখন রাজনৈতিক চাপের শিকার হয়। অনেক ক্ষেত্রেই ধর্ষকরা মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। এখনও ভারতে প্রতি চারটি ধর্ষণের মামলার মাত্র একটিতে অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হয়।
ভারতের বহু অংশ এমন রয়েছে যেখানে হাজার হাজার ঘটনা সরকারের খাতায়, প্রশাসনের নজরে আসে না। নির্যাতিতাও অনেক সময় লোকলজ্জার ভয়ে, পারিবারিক কারণে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন না। এর ফলে ধর্ষণকারী যেমন প্রশ্রয় পায়। তেমনই সমাজেরও প্রভূত ক্ষতি হয়। সূত্র : দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।