Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নারী শ্রমিককে ধর্ষণ ২ শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

সাভারের আশুলিয়ায় গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে পৃথক ঘটনায় তৈরি পোশাক কারখানার এক নারী শ্রমিক ধর্ষণ ও দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনায় অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, বড়াইগ্রামে স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মোবাইলে ডেকে নিয়ে এক শিক্ষার্থীর মাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এ ঘটনায় থানায় যেতে না দিয়ে চাপের মুখে আপোষ মিমাংসার নামে বাবার বাড়ি যেতে বাধ্য করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামপ্রধানেরা।

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার জানান : পুলিশ ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে প্রেরণ করেছেন।

আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকায় ৭ বছরের শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী আলহাজ (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। নারী পোশাক শ্রমিক ধর্ষণের ঘটনায় তার বিয়াই ইকবাল হোসেনকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইকবাল ঘোষবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসওয়াদুর রহমান জানান, শনিবার বিকেলে আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকায় বাড়ির পাশের একটি মাঠে বন্ধুদের সাথে খেলছিলো শিশুটি। এসময় প্রতিবেশী আলহাজ নামের এক ব্যক্তি কৌশলে শিশুটিকে মাঠের এক পাশে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

পরে শিশুটি চিৎকার দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে এসে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরে শিশুর পরিবার রবিবার রাতে আশুলিয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজর আলী জানান, ওই নারী পোশাক শ্রমিক আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় সুইং অপারেটর পদে কাজ করেন। শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই নারী ভাড়া বাসার তৃতীয় তলায় তার খালাতো বোনের ফ্লাটে যান। এসময় কক্ষে তার খালাতো বোনের দেবড় ইকবাল ছাড়া কেউ ছিলো না। পরে ওই নারীকে একা পেয়ে তার হাত-পা বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ইকবাল। এঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ইকবালকে ঘোষবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

অপরদিকে, ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খান জানান, সোমবার সকালে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে হাসাপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। পরে শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।

শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে জিরাবো এলাকায় বাসার পাশে একটি মাঠে খেলছিলো শিশুটি। পরে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে শিশুটি অসুস্থ্য বোধ করলে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ধর্ষণের চেষ্টার বিষয়টি জানতে পারেন তারা। এরপর সোমবার সকালে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এ প্রসঙ্গে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, জিরাবো এলাকায় শিশু ধর্ষনের বিষয়ে এখন আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বড়াইগ্রাম (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : অভিযুক্ত আনিসুর রহমান মাঝগ্রামের সাদেকুর রহমান মুন্সীর ছেলে। তিনি মাঝগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারী আনিসুর রহমান ঐ মহিলাকে ছেলের লেখাপড়া বিষয়ে কথা বলার জন্য মোবাইলে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে ডেকে নেন। পরে সেখানে বাড়ির সদস্যদের অনুপস্থিতির সুযোগে আনিস তাকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এ সময় প্রতিবেশীরা তার ডাক চিৎকারে এগিয়ে এসে আনিসকে হাতে নাতে আটক করেন। কিন্তু খবর পেয়ে আনিসের স্বজনেরা এসে হুমকি ধামকি দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। পরের দিন ঐ নারীর বাবাকে খবর দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বারের নেতৃত্বে স্থানীয় গ্রাম প্রধানেরা নামককাওয়াস্তে বিষয়টি মিমাংসা করেন। একই সঙ্গে তাদেরকে থানায় গেলে অমঙ্গল হবে জানিয়ে ঐ নারীকে তার বাবার সঙ্গে চলে যেতে বাধ্য করেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আনিস পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মাঝগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী মোল্লা জানান, আনিস শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছেন। তবে তিনি একটানা কয়দিন ছুটি পেতে পারেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার বলেন, এটি পারিবারিকভাবে মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ঐ মহিলাকে সবার সাথে মিলে চলার স্বার্থেই মামলা না করাসহ কিছুদিন বাবার বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ