Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নলছিটিতে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক

মু. আব্দুর রশীদ, ঝালকাঠি থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঝালকাঠির নলছিটিতে দুইটি সড়কের দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল অবস্থা। বিভাগীয় শহর বরিশাল এবং জেলা সদর ঝালকাঠির সঙ্গে রয়েছে সড়ক দুটির যোগাযোগ। একটি হচ্ছে দপদপিয়া-নলছিটি-মোল্লারহাট সড়ক এবং অপরটি হচ্ছে নলছিটি পীর মোয়াজ্জেম হোসেন-হদুয়া সড়ক। 
সড়ক দুটি নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সড়কের দুইপাশে ৬ ফুট বাড়িয়ে ১৮ ফুট প্রস্থ প্রসস্তকরণের কাজ শুরু করে সওজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সড়কের পাশের মাটি কেটে বালি ভরাটের আগে নানা অজুহাতে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ করে ফেলে রাখা হয়। এতে ওই সব সড়কের পাশে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোর গোড়া নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বৃষ্টিতে কাদামাটিতে একাকার হয়ে হেলে পড়েছে অধিকাংশ খুঁটি। যার ফলে ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। পরবর্তীতে বালি ভরাট করা হলেও সড়কের মাঝে খুঁটি রেখেই কাজ করায় গাড়ি চলাচলে বিঘœ ঘটছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে।
জানা যায়, নলছিটির পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের বাইপাস সড়ক থেকে আখড়পাড়া বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও নলছিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক (দপদপিয়া ফেরিঘাট) পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারসহ মোট ১৩ কিলোমিটার সড়কের মাঝে ওজোপাডিকোর বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের দাবি নলছিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে মোল্লারহাট পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের ৫ কিলোমিটারসহ ১৩ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য ওজিপাডিকোকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকো বলছে, উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার তিন মাস পরে তারা গত ১৮ ডিসেম্বর চিঠি পেয়েছে। খুঁটি অপসারণে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে উভয় দফতরের উপসহকারী প্রকৌশলীদের নিয়ে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সওজের ১ জন ও ওজোপাডিকোর ৩ জন উপসহকারী প্রকৌশলী রয়েছেন। এ কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে খুঁটি অপসারণ করে পুনরায় স্থাপন করতে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। ব্যয় নির্বাহের টাকা পেলেই ওজোপাডিকো খুঁটি অপসারণ করবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ার অপেক্ষা না করেই সড়ক ও জনপদ বিভাগ সড়কে খুঁটি রেখে ঠিকাদার দিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। 
ঝালকাঠি সওজ ও ওজোপাডিকো সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টের শেষের দিকে নলছিটি বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের দপদপিয়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ও নলছিটি-মোল্লারহাটের ৫ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে নলছিটি-মোল্লারহাটের সড়কটি হদুয়া পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারের কাজ। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ কোটি টাকা। এ ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে নলছিটি-মোল্লারহাটের ৫ কিলোমিটারে প্রায় ৮৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। আবার নলছিটি-দপদপিয়ার ৮ কিলোমিটারের কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। এ সড়কের মধ্যে প্রায় ১০০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। 
উভয় সড়কের পুরোনো ১২ ফুট প্রস্থের মূল সড়ক ১৮ ফুট প্রস্থে বর্ধিত করার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এ উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে দুই পাশে তিন ফুট করে ৬ ফুট প্রস্থে বৃদ্ধি করা হবে। মূল সড়কটি ১২ থেকে ১৮ ফুট প্রস্তে উন্নীত করায় বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সড়কের মধ্যে চলে এসেছে। তাই খুঁটিগুলো রেখেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্স কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 
গতকাল দুপুরে পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের বৈচন্ডী আড়াপোল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে খুঁটি রেখে সম্প্রসারণের জন্য মাটি কেটে বালু ভরাট করা হয়েছে। সম্প্রসারিত জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। সড়কে চলাচল করা পরিবহনগুলো খুঁটিগুলোকে পাশ কাটিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক শেখ এনামুল হক বলেন, খুঁটি সরানোর জন্য সড়ক বিভাগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। তারা খুঁটি সরানোর ব্যবস্থা করলে আমাদের কাজ করা সহজ হবে। কাজের সময় সীমা ঠিক রাখতেই খুঁটি না সরিয়ে দ্রæত কাজ শুরু করা হয়েছে।
ঝালকাঠি ওজোপাডিকো বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, বিষয়টি সড়ক ও জনপদ বিভাগ আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত প্রাক্কালিন ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। খুঁটি অপসারণ করে নতুন জায়গায় স্থাপনের নির্ধারিত খরচের টাকা পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীমা ইয়াসমিন বলেন, সড়ক থেকে খুঁটি সরানোর জন্য ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি তারা দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ