পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একটা বাচ্চা মেয়ে, তার ছোট্ট শরীরে অনেকগুলো মারাত্মক জখমের চিহ্ন। গলা টিপে ধরা হয়েছিল। সেখানেও কালশিটে দাগ। আমাদের মেয়েটা এখন মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত, পাশে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারিনি। ও অনেক কিছু বলতে চাচ্ছিল।
গতকাল সোমবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) থেকে বেরিয়ে যাবার সময় কথাগুলো বলছিলেন মেয়েটির বিভাগের শিক্ষিকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের হাউজ টিউটর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষিকা এই প্রতিবেদককে বলেন, মেয়েটাকে চারদফায় ধর্ষণ করা হয়েছে। কি বলব, কি করব বুঝতে পারছি না। অসহায় লাগছে। ওর বাবা-মা আছেন এখন ভেতরে। তাদেরই বা কি বলে সান্ত¡না দেব?
এই শিক্ষিকা বেরিয়ে যাবার পরপরই ওসিসির তালবদ্ধ কলাপসেবল গেটের ওপারে কাচের দরজা একটু ফাঁকা হলো। সেখানে এসে দাঁড়ালেন একজন মধ্যবয়সী নারী। দরজার এপাশে আইনজীবী পরিচয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের সঙ্গে দেখা করলেন। ৩০ সেকেন্ডের মতো কথা হলো। নিরাপত্তাকর্মী এসে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
পরে সেই আইনজীবীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়েটি আমার ভাগ্নি। আর যার সঙ্গে কথা বললাম তিনি আমার বোন। আমার বোন ও দুলাভাই ঢাকার বাইরে থাকেন। কাল রাতেই মেয়ের খবর শুনে এসেছেন।
ভাগ্নি কেমন আছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ও তো ভেতরে, আমাদের যাওয়া নিষেধ, একটু আগে শুনলাম ঘুমাচ্ছে। লাইফ থ্রেট নেই। কিন্তু ট্রমাটাইজড। আমার বোন আর দুলাভাই কিভাবে এতো শক্ত আছেন জানি না। আমরা সবাই শক্ত থাকার চেষ্টা করছি। প্লিজ খবরে আমাদের নাম ঠিকানা দেবেন না। রোববার রাত থেকে মেয়েটির সঙ্গে ওসিসিতে থাকা এক সহপাঠির বড়বোন বলেন, ওর শরীরে অনেক আঘাত, প্রচন্ড ব্যথাও আছে। গলাসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। ওকে অনেক মারপিট করা হয়েছে । মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করছি।
ওসিসির থেকে বেরিয়ে আসা একজন সিনিয়র নার্সও জানান, মেয়েটার শরীরে অনেক জখমের চিহ্ন। সব ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ভেতরে ডাক্তার-কাউন্সিলর সবাই আছেন। তাকে কোনো ধরনের প্রশ্ন করছি না আমরা। নিজে থেকে কিছু বললে শুনছি। সোমবার সকাল থেকেই ওসিসির সামনের গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন ভিড় সামলাতে। বিশ্ববিদ্যালিয়ের শিক্ষক, পুলিশের বিভিন্ন টিম, আইনজীবীরা আসছেন একের পর এক দল বেঁধে। বাইরে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করছেন দফায় দফায়। কখনও দল বেঁধে আসছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যেতে বাম পাশে কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ৪০০ গজ সামনে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করছে। জায়গাটি গলফ ক্লাবের সীমানার শেষ প্রান্তে যাত্রী ছাউনি ছাড়িয়ে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাত দূরে একটি বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড রয়েছে। যে জায়গায় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে সেখানে ফুটপাথ আছে। অনেকগুলো ল্যাম্পপোস্ট আছে। লোকজনের চলাচলও থাকে। জায়গাটিতে কয়েকটি মেহগনি গাছ আছে। ছোট ছোট বরই গাছ আছে অনেকগুলো। ঝোপঝাঁড় ও লতাগুল্ম আছে। সেখানেরই একটি ঝোপে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, জায়গাটি কিছুটা বিচ্ছিন্ন। এখানে ফুটপাথ আছে, লোকজন চলাচল করে। এখানের ঝোপে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।