মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের হিমবাহগুলো এত দ্রুত গলতে শুরু করেছে যে সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলো হয়ে পড়েছে বিশাল। শুধুই চেহারার নিরিখে নয়, হিমালয়ের কোলের সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলির গভীরতাও কম নয়।
হিমালয়ের পাঁচ হাজার হ্রদ ভেসে এই দশকেই ভয়াল প্লাবন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়েছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যান্টার্কটিক অ্যান্ড ওশ্ন রিসার্চ (এনসিএওআর)। এনসিএওআর এর মহাপরিচালক মুথালাগু রবিচন্দ্রন আনন্দবাজারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, যে কোনো মুহূর্তে ভেসে যেতে পারে হিমালয়ের অন্তত পাঁচ হাজার হ্রদ। আর সেই বরফ গলা পানিতে হ্রদগুলো ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে হিমালয়ের কোলে থাকা গ্রাম ও জনপদগুলোকে।
ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে গঙ্গাসহ হিমালয় পর্বতমালা থেকে বেরিয়ে আসা নদীর অববাহিকাগুলোকে। আর এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারে এই দশকেই।
রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন, এই ভয়াবহ ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দেয়া হয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে। যা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস (পিএনএএস বা পিনাস)’-এ।
গবেষকদের অন্যতম জার্মানির পোস্টড্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক জর্জ ভেহ্ ও অলিভার কোরুপ জানিয়েছেন, হিমালয় পর্বতমালার অন্যান্য অংশের চেয়ে এই ভয়াল বন্যার আশঙ্কা সিকিম হিমালয়সহ গোটা পূর্ব হিমালয়ে অন্তত ৩ গুণ বেশি।
গবেষণাপত্রের বরাতে খবরে বলা হয়, পরিবেশ দূষণের ফলে যেভাবে দিন দিন উষ্ণায়ন বেড়ে চলেছে, তাতে গত দুই তিন দশক ধরেই দ্রুত হারে গলতে শুরু করেছে হিমালয় পর্বতমালার ‘গ্লেসিয়ার’ বা হিমবাহগুলো।
হিমবাহের বরফ গলা জলের স্রোতই আশপাশের মাটি ও নুড়ি, পাথরগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে এসে হিমালয়ের কোলে ওই প্রাকৃতিক হ্রদগুলি তৈরি করেছে।
কিন্তু উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের হিমবাহগুলো এত দ্রুত গলতে শুরু করেছে যে সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলো হয়ে পড়েছে বিশাল। শুধুই চেহারার নিরিখে নয়, হিমালয়ের কোলের সেই প্রাকৃতিক হ্রদগুলির গভীরতাও কম নয়।
এর আগে একটি গবেষণা জানিয়েছিল, এই দশকেই হিমালয়ের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ হিমবাহের বরফের বেশির ভাগটাই গলে যাবে।
রবিচন্দ্রন জানান, হিমালয়ের হিমবাহগুলোর বরফ গলে যাওয়ার ফলে শুধু সিকিম হিমালয়েই ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ৮৫টি সুবিশাল হ্রদের জন্ম হয়েছে।
গবেষক আরিয়েন ভাল্জ জানান, এই দশকেই হিমালয় পর্বতমালার একটি বড় অংশে হতে চলেছে ভয়াল বন্যা। যাকে ভূতত্ত্ববিদ্যার পরিভাষায় বলা হয়, গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড (জিএলওএফ বা গ্লফ)।
রবিচন্দ্রন আরও জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য হিমালয়ের হিমবাহগুলোর বরফ দ্রুত হারে গলে যাওয়ার ফলে কী ভয়াবহ ভবিষ্যত আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, তা বুঝতে আর তার ভিত্তিতে পূর্বাভাস দিতে হিমবাহগুলোর সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে যতগুলি ‘মডেল’ রয়েছে, সবক’টি নিয়েই কম্পিউটারে সিম্যুলেশন করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা। গবেষণায় তারা বিভিন্ন উপগ্রহের পাঠানো তথ্যাদিরও সাহায্য নিয়েছেন।
মূল গবেষক জর্জ ভেহ্ বলেছেন, হিমালয়ের কোলে যে হ্রদগুলি বেশি গভীর, যে হ্রদগুলোতে বরফ গলা জল রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে, মূলত সেই হ্রদগুলোর দেয়ালই ভেসে গিয়ে ভয়াল বন্যার (‘গ্লফ’) কারণ হবে। আর সেই আশঙ্কাটা হিমালয় পর্বতমালার অন্যান্য অংশের তুলনায় পূর্ব হিমালয়েই বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।