পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৯ সালে মোট ৪ হাজার ৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ২২৭ জন। ২০১৮ সালে ৩ হাজার ১০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৪৩৯ জন নিহত হয়েছিলেন। তবে ২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে ৩১ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। আর নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। তবে এবার সড়ক দুঘর্টনায় সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন ময়মনসিংহ জেলায়। সেখানে ২১১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪৮৮ জন, আহত হয়েছে ২৬৬ জন। আর সবচেয়ে কম নিহত হয়েছে ঝালকাঠি জেলায়। সেখানে ১২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন ও আহত হয়েছেন ১২ জন।
গতকাল নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন। অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, জনগণেরর অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, আইন ও তার যথাযথ প্রয়োগ না হওয়াতে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বিগত ২ বছরের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫ হাজার ২২৭জন ও আহত হয়েছে ৬ হাজার ৯৫৩ জন। রেল পথে ১৬২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯৮ জন ও আহত ৩৪৭ জন। নৌ পথে ৩০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৬৪ জন। আর আহত হয়েছেন ১৫৭ জন। এ দুর্ঘটনাগুলোতে নিখোঁজ রয়েছেন ১১০ জন।
দুর্ঘটনায় ৯৯২টি বাস, ১ হাজার ৩৩টি ট্রাক, ১ হাজার ৯৮টি মোটরসাইকেল, ১৬০টি কাভার্ড ভ্যান, ১৫৮টি মাইক্রোবাস, ৮৩টি নসিমন, ৭৯টি কার ও ২ হাজার ১৭৮টি অন্যান্য যানবাহন দায়ী জানিয়ে নিসচা’র চেয়ারম্যান বলেন, এসব যানবাহনের মোট ১ হাজার ১৯০ জন চালক নিহত হয়েছেন। পথচারী মারা গেছেন ২ হাজার জন। যা মোট দুর্ঘটনার ৫০ দশমিক ০৪ শতাংশ।
তিনি বলেন, দেশে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ময়মনসিংহ জেলায়। সেখানে ২১১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪৮৮ জন, আহত হয়েছে ২৬৬ জন। এরপর ঢাকা জেলায় ৩০৯টি দুর্ঘটনায় ৩৩৫ জন নিহত ও আহত ৩২৭ জন। এরপরই চট্টগ্রাম জেলায় ২২৬টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৯৯ জন ও আহত হয়েছে ২৫৫ জন। শরীয়তপুরে ৯টি দুর্ঘটনার বিপরীতে নিহত হয়েছে ৩৫ জন ও আহত হয়েছে ১০ জন। আর সবচেয়ে কম নিহত হয়েছে ঝালকাঠি জেলায়। সেখানে ১২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন ও আহত হয়েছেন ১২ জন। এছাড়া সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পুরোপুরি কার্যকরী না হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আরও সোচ্চার হওয়া ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরো বলেন, এ আইনটি নিয়ে একটি কুচক্রী মহল জনসাধারণ ও চালকদের মাঝে ভীতির সঞ্চার করছে। এ আইনটি কোনো জেল, জরিমানার জন্য নয়। এই আইনটি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য করা হয়েছে। সবাই যদি আইনটি মেনে চলে তবে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সেখানে জেল জরিমানার কথাই আসে না।
তিনি বলেন, সরকার কর্তৃক সেইফ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কর্মশালা দ্রুত বাস্তবায়ন, মহাসড়কে একমুখী চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্চতা অনুযায়ী বিভাজন, দুইপাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা সড়ক নির্মাণ করতে হবে। পথচারিদের জন্য ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ দখলমুক্ত করণ ও মনিটরিং করতে হবে। সড়কের ত্রুটি অচিরেই দূর করতে হবে। স্কুল কলেজের শিক্ষকদের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পথচারীরা গাড়ি চাপায়, পেছন দিকে ধাক্কাসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পথচারীদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কিত ধারণা না থাকা, রাস্তা চলাচল ও পারাপারে মোবাইল ফোন ব্যবহার, জেব্রা ক্রসিং, আন্ডারপাস, ফুটওভারব্রীজ ব্যবহার না করে যত্রতত্র রাস্তা পারাপারের ফলে সড়ক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে।
বিআরটিএ কর্তৃক সরবরাহ করা রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশে বাসের সংখ্যা ৪৯ হাজার ২৭২টি। এর মধ্যে ৯৯২ টি বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এক লাখ ৫১ হাজার ৭৮৪ টি ট্রাকের মধ্যে ১ হাজার ৩৩ টি ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। এক লাখ ৯৪ হাজার ৫৬ টি বাস ও ট্রাক মিলে এ বছর সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে ২ হাজার ২৫টি। বাকি ৪০ লাখ যানবাহনে সড়কে দুর্ঘটনার পরিমাণ ২ হাজার ৬৭৭টি। এর দ্বারা এটা প্রতীয়মান হয় যে বাস ও ট্রাক সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বেশি দায়ী। এজন্য তাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, দক্ষতাবৃদ্ধি ও সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে নিসচার পক্ষ থেকে আটটি সুপারিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতমগুলো হলো- ট্রাফিক সিগন্যাল মানা, যত্রতত্র পার্কিং না করা, ওভারটেক বিষয়ে আইন প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, মিডিয়ায় সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানো, দক্ষ চালক তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, মহাসড়ক ও প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীত করা, সড়কের ত্রুটি দূর করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- নিসচার মহাসচিব সৈয়দ এহসান-উল হক, উপদেষ্টা ও বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।