পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আজ আমাদের সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে অধঃপতন, নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক অস্থিরতা, মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, আর্থিক সুষমবণ্টনের অভাব, সামজিক ও আর্থিক বৈষম্য, ব্যবসা বাণিজ্যে, ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ও চুরি-চামারি এবং অফিস আদালত ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে সুশিক্ষার অভাব। একজন সুশিক্ষিত আদর্শবান ব্যক্তির দ্বারা উল্লিখিত দুর্নীতিগুলো সংঘটিত হবে না। কাজেই আমাদের দেশের শিক্ষানীতির আমূল পরিবর্তন অপরিহার্য। এজন্য আদর্শবান ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের দ্বারা অনতিবিলম্বে একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে সারা দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসমূহে চালু করে একটি আদর্শ সুশিক্ষিত সমাজগঠনে সকলকেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। জাতি গঠনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর মধ্যে শিক্ষা বিভাগে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রীয় আয়ের একটি সিংহভাগ শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে। শিক্ষকদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল নাগরিকের উপরে মর্যাদা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যে সমাজে গুণীজনকে সম্মান দেওয়া হয় না সে সমাজে গুণীজন জন্মায় না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষকদেরকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়। যেমন- ১। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকদেরকে ভিআইপি মর্যাদা দেওয়া হয়। ২। ফ্রান্সের আদালতে কেবল শিক্ষকদেরকেই চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়। ৩। জাপানে সরকারের বিশেষ অনুমতি ছাড়া শিক্ষকদেরকে কোনো কারণে গ্রেফতার করা যায় না। ৪। চীনে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পদ শিক্ষকতা। ৫। কোরিয়ার শিক্ষকরা মন্ত্রীদের সমান মর্যাদা পায়। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু অভিমত জাতীয় স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে পেশ করলাম। ১। যারা সারা জীবন শিক্ষকতা করে অবসর গ্রহণ করেছেন তারা সমাজের সবচেয়ে মর্যাদাবান গুণী ব্যক্তি ও প্রবীণ ব্যক্তি। জাতিসংঘসহ সারাবিশ্বে বছরে একদিন প্রবীণ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এর উদ্দেশ্য প্রবীণদের সম্মান করা। আমাদের দেশেও বছরের ঐ নির্দিষ্ট দিনে প্রবীণ দিবস পালন করা হয়। তবে এতে প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ কী পান? কিছুই না। গতবছর সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করা হলো, কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের পেনশন বৃদ্ধি করা হল- ৫০% অর্থাৎ অর্ধেক। তারা যেহেতু অবসরপ্রাপ্ত পূর্ণ বেতন পায় না। তাদের পেনশন বর্তমান কর্মচারীদের ন্যায় দ্বিগুণ করা উচিৎ ছিল। আমরা তাই কামনা করছি। ২। পেনশনারদের চিকিৎসা ভাতা ২৫০০/ টাকা নির্ধারিত। অথচ তাদের চিকিৎসায় প্রতিমাসে ব্যয় করতে হয় এর চেয়ে অনেক বেশি। অতএব, অনতি বিলম্বে তাদের চিকিৎসাভাতা দ্বিগুণ করা হোক। ৩। পেনশনারদের চিত্তবিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। অতএব, তাদের জন্য চিত্তবিনোদনের জন্য বিনোদন ভাতার ব্যবস্থা করা হোক। ৪। পেনশনারদের জন্য সারা দেশের রেল বা বাসে ভ্রমণের জন্য দু’টি টিকিটের স্থায়ী পাস দেওয়া হোক। ৫। জাতীয় অনুষ্ঠানসমূহে যেন তাদেরকে সরকারিভাবে দাওয়াত দিয়ে সম্মানিত করা হয়। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলোর প্রতি সুদৃষ্টি দিয়ে বাধিত করবেন।
মাও. মুহাম্মদ খুরশীদ উদ্দীন, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক, কিশোরগঞ্জ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।