Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জেগে ওঠার এখনই সময়

মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

একটি রাষ্ট্র পরিচালনা করার মানে এই নয় যে, শুধু সরকারের ক্যাবিনেটের অংশ হবেন অথবা পার্লামেন্টের সদস্য হবেন এবং নিয়মিত কিছু কাজ করবেন। একজন মানুষ যেমন পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের সমন্বয়ে গড়া; এর পরও অনেকে বলে মানুষের মাঝে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বিদ্যমান। তদ্রæপ একটি রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিমালায় বিভাগ বিদ্যমান। তার মধ্যে একটি হলো নির্বাহী বিভাগ, অপরটি আইন প্রণয়ন বিভাগ আর তৃতীয় বিভাগটি হলো বিচার বিভাগ। এ ছাড়া মানবিক দিক বিবেচনায় চতুর্থ একটি বিভাগের কথা অনায়াসে বলা যায়, সেটি হলো দেশপ্রেম ও বিবেক বিভাগ। পূর্বোক্ত তিনটি বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে যদি দেশপ্রেম ও বিবেক না থাকে তাহলে তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ও সুষ্ঠুভাবে পালন করতে ব্যর্থ হন। দু-একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি বোঝা যাবে।

যদি একজন ব্যক্তিকে বিসিএস পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি বা লিখিত এবং চূড়ান্ত ভাইভা কিংবা মৌখিকভাবে পাস করার পর আপাতত নির্বাচন করা হয় বা মনোনয়ন দেয়া হয়, স্বাস্থ্যগত পরীক্ষায় পাস করা সাপেক্ষে। অতঃপর তিনি মনোনয়ন পান চূড়ান্তভাবে। তিনি সরকারের কাছ থেকে একটি পত্র পান সেই শর্ত মোতাবেক যেখানে রিপোর্ট করার কথা সেখানে রিপোর্ট করেন বা নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত থাকেন। তারপর তিনি যে ক্যাডারের অফিসার সে ক্যাডারের মৌলিক কিছু প্রশিক্ষণ আছে এবং তিনি সেই প্রশিক্ষণটি গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারের প্রশিক্ষণ এক রকম, বিসিএস কর ক্যাডারের প্রশিক্ষণ অন্যরকম। আবার বিসিএস সিভিল বা আনসার বাহিনীতে যারা যান তাদের প্রশিক্ষণ আরো ভিন্নতর। এভাবে প্রতিটি বিভাগের প্রশিক্ষণ বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুসারে বিভক্ত। আর এই প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি তার জীবনের জন্মলগ্ন থেকে ২৫-২৬ বছর বয়স পর্যন্ত যা কিছু অর্জন করেছেন, সেই অভিজ্ঞতাকে চাকরির চাহিদা দিয়ে প্রলেপ দেয়া। চাকরিটি করতে গেলে কী কাজ জানতে হবে, কোন নিয়মে কাজ করতে হবে তার পূর্বধারণা দেয়াই হলো প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য।

সেনাবাহিনীর অফিসারদের প্রশিক্ষণের দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, সাড়ে ১৭ থেকে সাড়ে ১৯ বছর বয়সসীমার মধ্যে আবেদন করতে হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য। প্রথমে একটি ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা হয়, তারপর একটি লিখিত পরীক্ষা হয়, এরপর ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডের মাধ্যমে এক দিন অথবা সাড়ে তিন দিনের একটি পরীক্ষা নেয়া হয়। তারপর চূড়ান্ত মেডিক্যাল হয় এবং এরপর তিনি নিয়োগ পান। এরপর প্রশিক্ষণের জন্য গেলে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে ১০ মাইল উত্তরে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ভাটিয়ারিতে উপস্থিত হতে হয়। সেখানে প্রায় দুই বছর প্রশিক্ষণ নেন, অতঃপর তিনি একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট বা লেফটেনেন্ট বা ক্যাপ্টেন র‌্যাংক নিয়ে চাকরি শুরু করেন। এরপর তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কোর বা রেজিমেন্টে নিয়োগ পান। ওখানে আসার তিন চার মাসের মধ্যেই তিনি মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি যদি যোগাযোগ বা সিগন্যাল কোরের অফিসার হন তাহলে তিনি যশোর যাবেন। আর তিনি যদি পদাতিক কোর বা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বা বাংলাদেশ ইনফেনট্রি রেজিমেন্টের অফিসার হন তবে তিনি সিলেট যাবেন কিংবা গোলন্দাজ বাহিনীর অফিসার হলে তিনি চট্টগ্রামের হালিশহর যাবেন। তিনি যদি আর্মি সার্ভিসেস কোরের অফিসার হন তাহলে তিনি খুলনার উত্তরে গিলাতলায় যাবেন। এরূপ বাকিদের জন্য নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। এসব কথা বলার মানে হলো আগামী দিনে যে যেই ধরনের কাজ করবেন তাকে সেই বিষয়ের নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ নিতে হয়।

অপর দিকে, গ্রামের মসজিদগুলোতে ইমামতি করা এমন কোনো কষ্টসাধ্যের ব্যাপার নয়। যুগ যুগ ধরে সেই কাজটি হয়ে আসছে। গ্রামের মসজিদগুলোতে যারা ইমামতি করেন তারা সম্মানিত ব্যক্তি হন। সাধারণত গ্রামগুলোতে ইমাম সাহেবদের মাধ্যমেই বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন ও উদযাপন করা হয়। যেমন- ঈদে মিলাদুন্নবী, মহররমের দিন, শবে মেরাজের সন্ধ্যায়, শবে বরাতের রাত এবং বিয়ে, খতনা- এ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে তাদের মধ্যে কেউ-না-কেউ উপস্থিত থাকেন। ইমামতি তথা মসজিদের ইমাম হতে হলে একজন ব্যক্তিকে নামাজের পদ্ধতি তথা ঈমান-আকিদা কুরআন-সুন্নাহ ইত্যাদি সব বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হয়। তার পোশাক-আশাক, আচার-আচরণ দায়িত্ব ও মূল্যবোধ চলন-বলন ইত্যাদি গ্রহণযোগ্য হতে হয়। সর্বোপরি তাকে একজন (সমাজের দৃষ্টিতে) ঈমানদার ও নামাজি হতে হয়, যাতে সমাজের অন্যরা তাকে অন্য ১০ জনের চেয়ে আলাদা বা সম্মানিত মনে করেন এবং এ-ও ভাবেন যে, তিনি একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। তবেই গ্রামবাসী তাকে ইমাম হিসেবে মেনে নেবেন। যেসব ব্যক্তি মসজিদে ইমামতি করেন তারা মাদ্রাসা থেকে এসব বিষয় শিখে আসেন বিধায় তারা ইমামতি করেন। কিন্তু একটি মসজিদের ইমাম শুধু কি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানো কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালনের জন্যই ওখানে নিযুক্ত হন? নাকি আরো কোনো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা রাখেন? একসময় পাকিস্তান সরকার বা বর্তমান বাংলাদেশ সরকার মনে করল ইমামরা এসব কাজ ছাড়াও আরো বৃহত্তর দায়িত্ব পালন করার সক্ষমতা রাখেন। ঠিক তখনই ইমাম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলো। সেই ইমাম প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইমামদের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন আনা, জ্ঞানের পরিবর্তন আনা, আচার-আচরণে পরিবর্তন আনা, চিন্তাশক্তির পরিবর্তন আনা এবং কর্মের স্পৃহায় নতুনত্বে জোর দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, যার সদর দফতর ঢাকাতে অবস্থিত তারা ইমাম প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। গত কয়েক বছরে তারা কয়েক হাজার ইমামকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মুরগি পালন, শিশুদের টিকা দেয়া, সামাজিক কুসংস্কার, ব্যাধি, যৌতুকপ্রথা, নারী নির্যাতন, বাল্যবিয়ে, মাদকদ্রব্যসহ ইত্যাদি বিষয় রোধ করতে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তাদের নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণের ফলে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম তার আগের গুণগত অবস্থা থেকে আরো অনেক বেশি গুণগত এবং কর্মস্পৃহায় উদ্যোগী হয়ে ওঠেন।

আমি তিনটি উদাহরণ দিলাম এই মর্মে যে, প্রশিক্ষণ একজন মানুষকে বাস্তব জীবন ও কর্মস্পৃহায় শক্তিশালী করে তোলে। তাহলে এখন প্রশ্ন জাগতে পারে যে, দেশ চালানোর জন্য কি কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে? আমাদের দেশের শাসকেরা আদৌ দেশ পরিচলনার জন্য কোনো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন কি? দেশ পরিচালনা কাজে অনেক লোক অনেক পেশায় জড়িত। তবে দুই প্রকারের ব্যক্তি বা পেশা সবার সামনে সর্বদা থাকেন। এক প্রকারের ব্যক্তির নাম আমলা, অপরটি রাজনীতিবিদ বা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। পাঠককুলের কাছে প্রশ্ন, এই দুই ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের মধ্যে কাদের কতটুকু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে? এটা বিবেচনার ভার আপনাদের কাঠগড়ায় রেখে দিলাম। গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশকে যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, এ দেশের শুরু থেকে যা-ই কিছু অর্জন হয়েছে এসবের পেছনে রয়েছে প্রথমত মেহনতি শ্রমিক, কৃষক জনতার অবদান এবং দ্বিতীয়ত কিছু দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সৎ রাজনৈতিক নেতৃত্বদানকারীদের অবদান। তার জন্য প্রথমে আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং দ্বিতীয়ত প্রাসঙ্গিক রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাই। সর্বক্ষেত্রে কমবেশি তাদের অবদান বিদ্যমান, তা না হলে আজকের বাংলাদেশ এই পর্যায়ে আসত না। ভালো হোক মন্দ হোক বা কম ভালো হোক বা কম মন্দ হোক, সৎ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদরা একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন বলে বর্তমান প্রাইভেট সেক্টরে শিল্প উদ্যোক্তারা এবং এনজিওগুলো কিছু অবদান রাখতে পেরেছে। যার ফলে বর্তমান বাংলাদেশে কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে, যদিও সেটি একান্তভাবেই ভৌত অবকাঠামোভিত্তিক বেশি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি এইটুকু উন্নয়ন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকব? এতটুকুই কি আমাদের ভাগ্যে লেখা ছিল? উত্তরে নির্দ্বিধায় বলতে হচ্ছে- না, আমাদের এইটুকু উন্নয়ন ভাগ্যে লেখা ছিল না আর এইটুকু নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না। আমাদের ভাগ্যে আরো অনেক বেশি কিছু লেখা ছিল কিন্তু আমরা সেটিকে ধরতে পারিনি, বা সেটির মূল্যায়ন করিনি। তার জন্য দুই প্রকৃতির ব্যক্তি যারা দেশের নেতৃত্ব দেন বা দেশ প্রশাসনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তারা দায়ী। আমরা অচেতন বা অবচেতন থাকলে আমাদেরই ক্ষতি। আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমাদের সম্বিত ফিরে পেতেই হবে। এখন কিঞ্চিত ভিন্ন আঙ্গিকের একটি বিষয় অবতারণা করছি।

অতীতে বিভিন্ন জাতির ও দেশের স্বাধীনতার প্রতি যেই যেই আঙ্গিক থেকে বা যেই যেই অঙ্গন থেকে হুমকি আসত, অতি সা¤প্রতিক বিশ্বে, বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতার প্রতি বা সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিগুলো ওই তুলনায় ভিন্ন। অস্ত্রের আকৃতি-প্রকৃতি এবং গতি পরিবর্তিত হয়েছে। লক্ষ্যবস্তুর বিশ্লেষণে পরিবর্তন এসেছে। সারা পৃথিবীতে বিশ্বায়নের জোয়ার হয়েছে; বিশ্বায়নের সুবিধাগুলোর সাথে সাথে অসুবিধাগুলোও এসেছে। স্বাধীনতার প্রতি হুমকি তখনই ফুলেফেঁপে ওঠে যখন আমরা সুবিধাগুলো গ্রহণ করি কিন্তু অসুবিধাগুলোকে ধর্তব্যের মধ্যে রাখি না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। ১৯৭৪ সালের সিকিম নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের পরিণতি, সা¤প্রতিককালে ইরাক এবং সিরিয়ার পরিণতি আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার ঘটনাবলিও আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। দেশের স্বাধীনতার মূল্য এবং শাসকগোষ্ঠীর শাসন করার অধিকারের মূল্য যখন সঙ্ঘাতময় হয়, তখন স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দক্ষিণ এশিয়া পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং দেশীয় ষড়যন্ত্রের কারণে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু নিহত হয়েছিলেন; ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হয়েছিলেন। অর্থাৎ বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হতেই পারে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় যদি আমরা দুর্বল থাকি তাহলে ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা বিপন্ন হতে থাকবে। উই পোকা যেমন দরজার চৌকাঠ, জানালার পাল্লা, আলমারির দরজা ইত্যাদি খেয়ে ফেলে কিন্তু ব্যবহারকারীরা টের পায় অনেক দিন পরে, অনুরূপ একটি দেশের স্বাধীনতা বা সার্বভৌমত্বের ওপরও আক্রমণ, একবিংশ শতাব্দীর স্টাইলে অতি ভদ্র, অতি ধীরলয়ে এবং অতি আনন্দঘন পরিবেশেই সম্পন্ন হবে। এরূপ আক্রমণ টের পেতে পেতে, আক্রমণকারীর অগ্রযাত্রা অনেক দূর সম্পন্ন হয়ে যাবে। এই প্রেক্ষাপটে আমি আবেদন করতে পারি যে : (এক) বাংলাদেশের নাগরিকগণ যেন চিন্তাশীল হন, চিন্তাবিমুখ না হন। (দুই) আত্মসমালোচক হন, আত্মভোলা না হন। (তিন) নিজেদের অতি মূল্যায়ন না করেন, নিজেরা হীনম্মন্যতায়ও যেন না ভোগেন। (চার) আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান থাকেন কিন্তু অতি মাত্রায় নয়; মনের ভেতর সন্দেহ রাখবেন কিন্তু প্রকাশ্যে নয়।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার বেশির ভাগই তরুণ। তরুণ বলতে তরুণীরাও শামিল। তরুণদের একাধিক ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। (এক) লেখাপড়ায় দুর্বল পেশাগতভাবে নিজেকে উন্নত করতে আগ্রহী। (দুই) লেখাপড়ায় সংশ্লিষ্ট এবং নিবিড়ভাবে রাজনীতিসংশ্লিষ্ট। (তিন) সরকারদলীয় রাজনীতিসংশ্লিষ্ট। (চার) রাজনীতিবিমুখ পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে ব্যস্ত। সার্বিকভাবে বা মোটা দাগে তরুণ স¤প্রদায় আমাদের অভিনন্দন পাবেন। তারা আবিষ্কারমনস্ক। তারা দায়িত্বশীল। তারা কর্ম-আগ্রহী। কিন্তু সরকারদলীয় রাজনীতিতে যারা নিবেদিত, সেসব তরুণের ভুলভ্রান্তির কারণে, দু’টি নেতিবাচক প্রভাব সমাজে পড়ে। একটি প্রভাব হলো, নিরপেক্ষ জনসাধারণ রাজনীতিকেই অপছন্দ করে এবং দ্বিতীয় প্রভাব হলো, মানুষ তরুণ স¤প্রদায়কে অবমূল্যায়ন করে। আমি তরুণ স¤প্রদায়ের প্রতি আহŸান রাখব, তারা যেন নিজেদের সম্ভাবনা বা পটেনশিয়ালিটিকে নষ্ট না করেন। হাজার লোকে, লাখো লোকে বলছে এবং বলবে, তরুণরাই আগামী দিনে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেবে; তরুণরাই আগামী দিনের তথা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মালিক। বলা খুবই সহজ। কঠিন কাজটা হলো সেই তরুণদের প্রস্তুত করা। এই দায়িত্ব তরুণদের ওপর যেমন পড়ে, তেমনি প্রবীণ তথা অভিভাবকদের ওপরেও পড়ে। এই দায়িত্ব পালনে আমরা পিছিয়ে আছি। আমরা জেগে উঠতে চাই।

লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি



 

Show all comments
  • ** হতদরিদ্র দীনমজুর কহে ** ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:১৮ পিএম says : 0
    রাষ্ট সমাজ রাজনীতি গনতন্ত্র বিনির্মানে সকলকে কাজ করতে হবে।সমালোচনা ও হতে হবে গঠন মুলক।আপনার লেখার জন্য ধন্যবাদ।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন