গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নিজ নিজ দল ও নির্বাচন কমিশন থেকে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেয়া নিয়ে ব্যস্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয় এখন কাউন্সিলর প্রার্থীদের আনাগণায় মুখর। এলাকাগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণা জমে না উঠলেও পোস্টার, লিফলেট আর শোডাউন করে প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন নেতারা। একেক ওয়ার্ডে ০৮ থেকে ১০জন দল ও নির্বাচন কমিশনের ফরম কিনলেও প্রচারণায় কয়েকজনকে দেকা যাচ্ছে। বাকিরা ফরম কিনলেও আলোচনার বাইরে।
যারা প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা ইতোমধ্যে নিজ নিজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং দলের হাইকমান্ড নেতাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত করছেন দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য। এর মধ্যে জনগণকেও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন, মাদক নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, যানজট মুক্ত করে সবুজায়ন ও আধুনিক ওয়ার্ড গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন ঢাকা দক্ষিণের ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৮, ৪৯ ও ৭০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রত্যেক ওয়ার্ডে আট থেকে দশ জন প্রার্থী হলেও জনগণের দৃষ্টি দুই বা তিন জন প্রার্থীর দিকে।
৭০ নং ওয়ার্ড : এ ওয়ার্ডটি ডেমরা থানার আমুলিয়া এলাকা নিয়েই গঠিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটির নতুন ওয়ার্ড। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আট দশ জন প্রার্থী থাকলেও সবার দৃষ্টি বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমানের প্রতি। গত নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের আরেক নেতা আমানুল্লাহ পেয়েছেন তিনশো এগারো ভোট, সতন্ত্র প্রার্থী জহির উদ্দিন পেয়েছিলেন ১৬৪৯ ভোট। আর আতিকুর রহমান পেয়েছিলেন সাড়ে পাঁচ হাজার ভোট। গত নির্বাচনে বর্ধিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ কাউকে দলীয় মনোনয়ন না দিলেও এবার দলের মনোনয়ন দিচ্ছে। এলাকার জনগণ মনে করেন তিনি দলের মনোনয়ন পেলও পাস করবেন না পেলেও পাস করবেন। আতিকুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, দল জনপ্রিয় প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে আর আমার সেই জনপ্রিয়তা রয়েছে তা প্রমাণিত। এরপর দল যাকে মনোনয়ন দেবেআমি তার পক্ষে কাজ করবো।
আতিক বলেন, ওয়ার্ডকে একটি পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করছি। স্বল্প সময়ে আমি ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। প্রায় ১৯টি সড়ক পাকা করেছি এবং অনেকগুলো উন্নয়ন কাজের প্রকল্প পাস হয়েছে সে কাজ শুরু হবে। একটি খেলার মাঠ ছিল তা মিনি স্টেডিয়াম করার কাজ চলছে। বিদ্যুতের সাব স্টেশনের জন্য নিজের পক্ষ থেকে ৪৫ কাঠা জমি দিয়েছি, স্কুলের জমি দিয়েছি, যার মূল প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ল্যাম্প পোস্টের কাজও চলছে। নিজের টাকা দিয়ে মশক নিধনের মেশিন ক্রয় করে ডেঙ্গু নিধনে কাজ করেছি। তিনি আশা করেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন এবং নির্বাচনে আবারও জয়লাভ করবেন।
৪২ নং ওয়ার্ড : আহসান উল্লাহ রোড, কবিরাজ লেন, জি. এল গার্থ লেন, সিমশন রোড, পটুয়াটুলী রোড, ইসলামপুর, পাটুয়াটুলী লেন, কুমারটুলী লেন, লিয়াকত এ্যাভিনিউ, নর্থব্রুক হল রোড, ওয়াইজ ঘাট, রমাকান্ত নন্দি লেন, লয়াল ষ্ট্রীট, পি, কে, রায় রোড (বাংলা বাজার), চিত্তরঞ্জন এ্যাভিনিউ, হকার্স মার্কেট, শাখারী বাজার নিয়ে এ ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানি, মাদক, গ্যাস সংকট, খেলার মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টারের সমস্যা রয়েছে। সরু রাস্তা, ড্রেনেজ সমস্যা নিত্যদিনের। কাউন্সিলর প্রার্থীরা বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করছেন নির্বাচিত হতে পারলে সমস্যাগুলোর সমাধানে চেষ্টা করবেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন মুসা, ৪২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ নাসির, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান। বর্তমান কাউন্সিলর হাজী সেলিম সতন্ত্রভাবে নির্বাচনে পাশ করেছিলেন।
সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন মুসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের (কলেজ থাকাকালীন) সাবেক বন ওপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাবার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। মুসা ইনকিলাবকে বলেন, সন্ত্রাস দমন, মাদক নির্মূল, বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনের পাম্প বসানো, তিতাসের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাসের সংকট দূর করতে ভূমিকা রাখা, ড্রেনেজ বড় করা, রাস্তা পাকা ও পরিচ্ছন্ন রাখা, খেলাধুলার মাঠ করা, লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম গতিশীল করা, কমিউনিটি সেন্টারের সংস্কার করে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন সুন্দর পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গড়বেন তিনি।
৪৩ নম্বর ওয়ার্ড:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডকে মাদক ও চাঁদাবাজমুক্ত হিসেবে গড়তে চান সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা এ ওয়ার্ডকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও করতে চান। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী মডেল ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ডিএসসিসি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড আগে ৭৯ নম্বর ওয়ার্ড নামে পরিচিত ছিল। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরঘেঁষে গড়ে ওঠা এই ওয়ার্ডে রয়েছে বহু পুরাকীর্তি ও আদি-ঐতিহাসিক স্থাপনা। এর মধ্যে রয়েছে রূপলাল হাউজ, শতবর্ষের বেশি পুরনো লালকুঠি বা নর্থব্রুক হল, নর্থব্রুক হল পাবলিক লাইব্রেরি, শতবর্ষী ঢাকা হিন্দু অনাথ আশ্রম, প্রথম ইমামবারা বিবি-কা-রওজা। এ ওয়ার্ডের অন্যতম আকর্ষণ বিউটি বোর্ডিং। আনন্দ মোহন দাস লেন, মাহিনী মোহন দাস লেন, শুকলাল দাস লেন, শ্যামা প্রসাদ চৌধুরী লেন, শ্রীশদাস লেন, হরিশ চন্দ্র বসু স্ট্রিটসহ মোট ২৬টি লেন নিয়ে গঠিত এ ওয়ার্ড।
বাণিজ্যিক এলাকার পাশাপাশি অভিজাত এলাকা হিসেবেও যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এলাকাটির। বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় চাঁদাবাজদের উৎপাতে অতিষ্ঠ এখানকার ব্যবসায়ীরা। তীব্র যানজট, মাদক ও সন্ত্রাসের সমস্যাও রয়েছে এখানে।
এ ওয়ার্ডের সম্ভাব্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন প্রত্যাশীরা হলেন, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক তিনবারের কাউন্সিলর হাজী মো. সাহিদ, বর্তমান কাউন্সিলর ও ৪৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আরিফ হোসেন ছোটন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মিয়া। বিএনপির সাবেক থানা সেক্রেটারি মো. ফরিদ হোসেন, বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি কাজী মফিজুর রহমান কাওছার।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আরিফ হোসেন ছোটন এক সময় জাতীয় পার্টির ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে সমালোচনা রয়েছে। আরিফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সবগুরো লেনের রাস্তা পাকা করেছি, ওয়ার্ডের ৭০ শতাংশ স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। দুই জায়গায় পানিবদ্ধতার সমস্যা ছিল এখন আর তা নেই। ফরাগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব জুয়ামুক্ত করেছি এবং পানির পাম্প বসিয়েছি। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি এলাকার মানুষ যেন নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারে সে জন্য যা যা করার দরকার তাই করব। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চালানো শুদ্ধ অভিযানে গণমাধ্যম জুড়ে নেগিটিভ আলোচনার শীর্ষে ছিলেন আরিফ হোসেন। দলের মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদি তিনি।
সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মো. সাহিদ ইনকিলাবকে বলেন, আমি এ এলাকার সন্তান। দীর্ঘদিন কমিশনার ছিলাম। এলাকার মসজিদ প্রতিষ্ঠা, হিন্দুদের জন্য মন্দির প্রতিষ্ঠা, কমিউনিটি সেন্টার করাসহ ওয়ার্ডের এমন কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন নেই যা করিনি। এখন শুধু সংস্কার ও আধুনিকায়ন করতে হবে। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আছি, দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি। আশা করি দল মনোনয়ন দেয়ার মাধ্যমে মূল্যায়ন করবে। নির্বাচিত হলে, এ ওয়ার্ডের মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং শিক্ষিত বেকার যুবকদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে তাদের সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাব। সব ধরণের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করব। এলাকার ব্যবসায়ীদের যেকোন সমস্যা সমাধানে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ওয়ার্ডের সাবেক দফতর সম্পাদক ছিলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আমি কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হলে নাগরিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সব শ্রেণির মানুষকে সমন্বয় করে এলাকার উন্নয়নে যা যা করা দরকার তাই করব। এখানকার পরিত্যক্ত ময়লা পরিষ্কার করে সবুজ এলাকা গড়ে তুলব। মাদক, চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
৪৪ নং ওয়ার্ড:
এ ওয়ার্ডে ড্রেনেজ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, পানি ও মশক সমস্যা সমাধান করার অঙ্গীকার করেছেন ৪৪নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এছাড়াও পরিকল্পিত ও প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করে বাসযোগ্য ওয়ার্ড গড়তে চান ওই সম্ভাব্যরা।
সূত্রাপুর থানাধীন কাঠের পুল লেন, ঠাকুরদাস লেন, জাস্টিস লালমোহন দাস লেন, ঋষিকোষ দাস রোড, বেগমগঞ্জ লেন, মিউনিসিপ্যাল স্টাফ কোয়ার্টা, তনুগঞ্জ লেন, ওয়াল্টার রোড, রেবতী মোহন দাস রোড নিয়ে এ ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার।
৪৪নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর হিসেবে বিএনপি কাউন্সিলর প্রার্থী হলেন, বর্তমান কাউন্সিলর ও সূত্রাপুর থানা বিএনপির সভাপতি এমএ সাহেদ মন্টু, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হলেন, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সালেহ্ জামান সেলিম, ৪৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ মিল্টন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহিদ মুরাদ মিঠু।
সালেহ্ জামান সেলিম গত নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক। অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের আপন ছোট ভাই। সূত্রাপুর স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি। সেলিম ইনকিলাবকে বলেন, কাউন্সিলর হলে, মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা, খেলার মাঠের সংস্কার করবো। মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, চিরতরে বন্ধ করবো। যুব সমাজকে বেকারত্ব থেকে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।
৪৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু ইনকিলাবকে বলেন, ড্রেনেজ সংস্কার, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজের অগ্রগতি, মাদক নির্মূল, চাঁদাবাজি বন্ধে ভূমিকা রাখবো। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি।
হারুন অর রশীদ মিল্টন ৪৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সুত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি। মিল্টন ইনকিলাবকে বলেন, রাস্তাঘাট সংস্কার, সরু রাস্তা প্রশস্তকরণ, মাদকের বিস্তার রোধ, স্থানীয় বাজারগুলোর চাঁদাবাজি বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো যদি কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে পারি। স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নোংরা পরিবেশ ও ধুলাবালির সমস্যা দূর করবো। প্রত্যেক রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসাবো। তিনি আরো বলেন, আমি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হওয়া বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। দলের মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে, এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি দেব। সবুজে ঘেরা ডিজিটাল ওয়ার্ড করে তুলবো।
৪৮ নং ওয়ার্ড:
সায়েদাবাদ, উত্তর যাত্রাবাড়ী নিয়ে এ ওয়ার্ড। বর্তমান কাউন্সিলর ৪৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম অনু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হোসেন জুয়েল এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী। ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে আবুল কালাম অনুর পক্ষে নির্বাচনে সমর্থন দিচ্ছেন। এখানে আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকা নেতাদের মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রার্থী। এছাড়া থানা আওয়ামী লীগের নেতাদের পছন্দ অনু। এলাকায় বেশ কাজও করেছেন তিনি। তবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে জাহিদ হোসেন জুয়েলেও অবস্থানও শক্তিশালী। গত নির্বাচনে জুয়েল প্রার্থী হয়েছিলেন এবং সর্বশেষ পর্যায়ে আবুল কালাম অনুকে সমর্থন দিয়েছিলেন। অনু এই ওয়ার্ডে স্বাধীনতার পর থেকে প্রথম আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর।
কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু ইনকিলাবকে বলেন, এলাকার প্রত্যেকটি রাস্তা ঘাট পাকা করেছি, সংস্কার করেছি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছি। ড্রেনেজ সমস্যা ছিল তা দূর করেছি। মাদকের ব্যাপারে আমার অবস্থান সব সময়ই কঠোর। আগামীতে দলের মনোনয়ন পাবার বিষয়ে আশাবাদি অনু।
জাহিদ হোসেন জুয়েল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এর আগে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বৃহত্তর ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জুয়েল ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ডেমরার সভাপতি ছিলেন। এর আগেও নির্বাচনে দাড়িয়েছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে দলের নির্দেশে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে কাজ করেন। জুয়েল ইনকিলাবকে বলেন, আমি সামাজিক সাংস্কৃতিক মাদক বিরোধী সংগঠন ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সূর্য কমলের সভাপতি ও এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসার দায়িত্ব পালন করছি। এলাকার মানুষের চাহিদা আমি নির্বাচন করি তাই প্রার্থী হয়েছি। দলের মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো,না হয় দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবো।
৪৯ নং ওয়ার্ড:
ব্রাহ্মণ চিরণ, ধলপুর নিয়ে এ ওয়ার্ড। ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হলেন, ৪৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান, সাধারণ সম্পাদক গাজী শামীম আহমেদ, সাবেক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যাত্রবাড়ি থানা আওয়ামী লীগ নেতা রাগিব আহসান। বিএনপির প্রার্থী বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাদল সরদার। এ ওয়ার্ডে স্বাধীনতার পর থেকে এখনো আওয়ামী লীগের কেউ কাউন্সিলর বা কমিশনার হতে পারেনি।
এ ওয়ার্ডের মূল সমস্যা যানজট ও পরিবহন চাঁদাবাজি। কিছু বস্তি এলাকা থাকায় মাদকের সমস্যা ভয়াবহ। আবাসিক এলাকার রাস্তা সরু হওয়ায় যানজটের সমস্যা রয়েছে।
ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক গাজী শামীম আহমেদ গতবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন কিন্তু বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী বাদল সরদারের কাছে পরাজিত হন। এবার তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি।
আবুল কালাম আজাদ ইনকিলাবকে বলেন, কাউন্সিলর হতে পারলে মাদক, চাঁদাবাজি বন্ধে ভূমিকা রাখবেন তিনি। রাস্তাঘাট ও বস্তিবাসীর উন্নয়নে কাজ করবেন। রাগিব আহসান ইনকিলাবকে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সচ্চার ছিলাম বলে অনেক হুমকিও পেয়েছি। গতবার নির্বাচন করেছিলাম। এবার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী, মনোনয়ন না পেলে নির্বাচন করবো না। তিনি জানান, ইতোমধ্যে, নিজ উদ্যোগে এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি, সবাইকে নিয়ে মাদক সমস্যা নিরসনে কাজ করছি। কাউন্সিলর হতে পারলে জনগণের সেবা করার পরিসর বৃদ্ধি পাবে। ####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।