Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে নিহত ২৩

দিল্লিতে পথে নামছে গান্ধী পরিবার : মমতার প্রতিনিধিরা যোগীরাজ্যে যাচ্ছেন আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় বিক্ষোভ ঘিরে রাজধানী দিল্লির মতোই উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশও। টানা দু’দিনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫। আর আসাম, কর্নাটক, বিহার মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ২৩। এদের মধ্যে নাবালকও আছে বলে দাবি সংবাদমাধ্যম সূত্রে। রামপুর, মেরঠ কানপুর, গাজিয়াবাদ, প্রয়াগরাজ মিলিয়ে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৭শ’রও বেশি মানুষ আটক হয়েছে। রাজ্যের বহু জেলাতেই বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। যোগী রাজ্যের এমন পরিস্থিতিতে এবার সেখানে প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতের দিল্লিতে আজ উত্তাপ বাড়াতে এবার পথে নামছেন কংগ্রেস সংসদ রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের ডাকা সিএএ বিরোধী মহামিছিলে পা মেলাবেন তিনি। জানা গেছে, আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে চলা দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচার শুরু করতে আজ রামলীলা ময়দানে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঠিক সেদিনই কংগ্রেসের এই পাল্টা মিছিল ছুটির দিনে রাজধানীর উত্তাপ অনেকটা বাড়িয়ে দেবে। কংগ্রেসের ডাকা এই মহামিছিলে পা মেলাতে দেখা যাবে দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, সাংসদ রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। থাকবেন সেই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতোমধ্যে দিন যত গড়াচ্ছে হিংসাত্মক আকার নিচ্ছে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন। উত্তর-পূর্ব ছাড়িয়ে এই আন্দোলন এখন উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ব্যাঙ্গালুরু, ম্যাঙ্গালুরু; মুম্বাই ও হায়দরাবাদে এর প্রতিবাদে পথে নেমেছেন নাগরিকরা। সিএএ মূলত অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেবে। মুসলিম অধ্যুষিত পড়শি দেশগুলো থেকে ধর্মের ভিত্তিতে বাস্তুহারা উদ্বাস্তুদের ঘর দিতে এই উদ্যোগ বলেই খবর। যদিও বিরোধী শিবির একে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ এবং সাংবাদিকের মৌলিক কাঠামোর ওপর আঘাত বলে অভিযোগ তুলেছে।
পুলিশের তাড়া খেয়ে শিশুর মৃত্যু : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলা। বারাণসীতে একটি প্রতিবাদ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে পুলিশের তাড়ায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। এ নিয়ে উত্তরপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫।
ভীমসেনা প্রধানের জামিন না-মঞ্জুর : দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদ এতদিন চুপ থাকলেও জুমারদিন পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হাজার হাজার মুসল্লি বিক্ষোভ করেন। সেখানেই দলিত নামে পরিচিত নিম্ন হিন্দুদের অধিকার আদায়ে সরব ভীমসেনার প্রধান পলাতক চন্দ্রশেখর আজাদ বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে পুলিশের হাতে আটক হলেও ফাঁকি দিয়ে মসজিদের ভেতর ঢুকে পালাতে সক্ষম হন উচ্চবর্গীয় হিন্দুদের মন্দির ভাঙায় অভিযুক্ত ২০ কোটি দলিতের অধিকার আদায়ে সরব এই নেতা। অবশেষে গতকাল নিজে থেকেই দিল্লি জামে মসজিদ এলাকায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং এদিন আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। তাঁকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে তিস হাজারি আদালত।
কেরালায় বন্ধ ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারের কাজ : বাংলার পর বাম শাসিত কেরালায় বন্ধ হয়ে গেল ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারের (এনপিআর) কাজ। কেরালার প্রশাসন সংক্রান্ত দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, নয়া নাগরিকত্ব আইন ঘিরে তৈরি অনিশ্চয়তার আবহে এনপিআর-এর কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, দেশজুড়ে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি চালুর একটি ধাপ হল এনপিআর। যে কারণে এই মুহ‚র্তে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
‘ব্যবহার করা হচ্ছে সিএএ এবং এনআরসিকে’ : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এনডিএ সরকারকে তুলোধনা করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। এনসিপি প্রধান বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলি থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব আইনকে হাতিয়ার করা হচ্ছে’। পুনেতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পাওয়ার বলেন, ‘শুধুমাত্র দেশের সংখ্যালঘুরা নন, যারা দেশের একতাকে সমর্থন করে তারাই এই আইনের বিরুদ্ধে কথা বলবে। এই সংশোধিত আইন সেই স¤প্রীতিতেই আঘাত হেনেছে’।
ভারতের ‘নাগরিক’ হলেন তিন পাক শরণার্থী : দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে যখন বিক্ষোভ অব্যাহত সেই সময় গতকাল গুজরাটের লোকসভার সাংসদ পাকিস্তান থেকে শরণাপন্ন হয়ে ভারত আসা হিন্দু পরিবারের তিন সদস্যকে নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দিলেন, এমনটাই খবর পিটিআই সূত্রে। এক দশক আগে আসা হরসিং সোধা, স্বরূপসিং সোধা এবং পর্বতসিং সোধার হাতে নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট তুলে দেন রাজকোটের লোকসভার সাংসদ মোহন কুন্দরিয়া।
যোগীরাজ্যে যাচ্ছে তৃণমূল প্রতিনিধি দল : প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে চার সদস্যের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল আজ লখনউ যেতে পারে বলে খবর। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ত্রিপেদী ছাড়াও দলে থাকবেন সাংসদ প্রতিমা মন্ডল, আবীর বিশ্বাস ও নাদিমুল হক। উত্তরপ্রদেশে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবে প্রতিনিধি দল। উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি দেখে তারা রিপোর্ট দেবেন দলীয় নেত্রীকে।
তৃণমূল নেতাদের উপদ্রæত এলাকায় পুলিশ-প্রশাসন যেতে দেয় কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রাজনৈতিক মহলের একাংশের। প্রসঙ্গত, এর আগে আসামে বিক্ষোভের সময় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল তৃণমূল। তবে দলের সদস্যদের শিলচর বিমানবন্দরের বাইরে বের হতে দেয়নি আসাম পুলিশ।
‘ছত্তিশগড়ের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবেন না’ : জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন আগেই। এবার দেশের এই অশান্ত আবহে ফের একবার মুখ খুললেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভ‚পেশ বাঘেল। সাফ জানিয়ে দেন, তার রাজ্যে অর্ধেকেরও বেশি জনগণ নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন না। কারণ তাদের কাছে জমি এবং জমি সংক্রান্ত দলিল কোনওটিই নেই। সংবাদসংস্থা পিটিআই বাঘেলকে উদ্ধৃত করে জানায়, ‘ছত্তিশগড়ে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ রয়েছেন। তাদের অর্ধেকেরও বেশি লোক তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন না। কারণ জমি কিংবা জমি সংক্রান্ত কোনও নথি নেই। তাদের পূর্বপুরুষরা ছিল নিরক্ষর। বেশিরভাগই অন্য গ্রাম থেকে এ রাজ্যে এসেছিল কাজের জন্য। কীভাবে তারা ৫০ থেকে ১০০ বছরের পুরোনো নথি নিয়ে আসবেন?’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যে ভ‚পেশ বাঘেলের মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্য্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। ১৯০৬ সালে ব্রিটিশরা আফ্রিকায় সনাক্তকরণের যে প্রক্রিয়া চালিয়েছিল তার বিরোধিতা করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, সেই মর্মেই এনআরসি বিরোধিতা করবেন তিনি, এমনটাই জানালেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী।
তবে বিল এখন আইনে পরিণত হয়েছে। সেক্ষেত্রে তা সব রাজ্যে বলবৎ হলে বিমুদ্রাকরণের মতোই লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে দেশের সব নাগরিকদের। সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে ভ‚পেশ বাঘেল বলেন, ‘এটি মানুষের উপর কেবল একটি অপ্রয়োজনীয় বোঝা। আমাদের দেশে অনুপ্রবেশের তদন্তের জন্য বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। কিছু ব্যবস্থা নিলে তারাই নেবে। কীভাবে কেন্দ্র সাধারণ মানুষকে এমন হেনস্থার মুখে ফেলতে পারে?’
নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন নিয়ে এনডিএ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে নিপীড়িত অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হচ্ছে যা বৈষম্যমূলক’।
সিএএ প্রতিবাদে নেই কেন? কংগ্রেসকে তুলোধনা পিকের : দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিরোধীদের পাশে থেকে প্রথম থেকেই নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে আসছেন জেডিইউ নেতা তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সিএএ-এনআরসি ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন এই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট। এ ইস্যুতে এবার কংগ্রেসকে বিঁধলেন পিকে। সিএএ বিরোধী আন্দোলনে কেন রাস্তায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে দেখা যাচ্ছে না, সে নিয়ে সোচ্চার হলেন কিশোর।
গতকাল টুইট করে তৃণমূলের ভোটকুশলী লিখেছেন, ‘সিএএ- এনআরসির বিরুদ্ধে নাগরিকদের লড়াইয়ে কংগ্রেসকে দেখা যাচ্ছে না। এই আন্দোলনে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব অনুপস্থিত’। সোনিয়া গান্ধীর ভিডিও বার্তার প্রসঙ্গ টেনে পিকে লিখেছেন, ‘যেসব মুখ্যমন্ত্রীরা বলছেন তাদের রাজ্যে এনআরসি লাগু করতে দেবেন না, তাদের সঙ্গে সমস্ত কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের একত্রিত করতে পারে কংগ্রেস, তা না করলে ওই বক্তব্য ভিত্তিহীন’।
উল্লেখ্য, শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘গণতন্ত্রে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার রয়েছে মানুষের। কিন্তু বিজেপি সরকার মানুষের এই অধিকারের প্রতি অন্যায় করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কন্ঠরোধ করতে চেয়েছে দেশের মানুষের’।
প্রসঙ্গত, সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সমর্থন করেছে এনডিএ শরিক জেডিইউ। যা নিয়ে প্রকাশ্যে নীতীশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। এ নিয়ে টুইটারে প্রশান্ত কিশোর লেখেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে সমর্থন করেছে জেডিইউ। এই সিদ্ধান্তে আমি হতাশ। যে বিল ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে, সেই বিলকে সমর্থন করল! এটা দলের গঠনতন্ত্রের সঙ্গে বেমানান। যে দলের নেতৃত্ব গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত, সেই দল এই বিলকে সমর্থন করল!’
‘বিজেপির ক্ষমতা থাকলে আমাকে বাংলাদেশে পাঠাক’ : এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে বিজেপিকে একহাত নিলেন অধীর। এদিন নিজের গড়ে দাঁড়িয়ে অধীর বলেন, “আমার বাপ-ঠাকুরদা বাংলাদেশের মানুষ, বিজেপির ক্ষমতা থাকলে আমাকে বাংলাদেশে পাঠাক। আসলে বিজেপি ধর্মের নামে দেশ চালাতে চাইছে। বাকি স¤প্রদায়ের সঙ্গে মুসলমানকে আলাদা করে বিভাজনের নীতি গ্রহণ করেছে নরেন্দ্র মোদী-আমিত শাহ জুটি। কিন্তু ভুললে চলবে না ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ সাধারণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দেশ। এই বিশ্বাস কোনও ভাবেই ভাঙতে দেওয়া যাবে না’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে এদিন অধীর চৌধুরী বলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আপনি বলছেন রাজধর্ম পালন করা উচিত। খুব ভাল লাগল। কিন্তু, আপনি রাজধর্ম পালন করলে বাংলায় বিজেপির রমরমা হত না। বাংলায় লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছে মমতার জন্যই। তাই দিদিকে বলব, আপনিও রাজধর্ম পালন করুন’। এরপরই বাজপেয়ী জমানায় তৃণমূল-বিজেপি জোটের প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বাংলায় ভোট করেছেন আপনি। বিজেপির জমানায় মন্ত্রীও ছিলেন। যদি নীতি-আদর্শ থাকে, তাহলে বিজেপির সঙ্গে জোট করে অন্যায় করেছিলাম, একথা বলুন’।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে যখন জ্বলছে দেশ, সেই প্রেক্ষিতে শুক্রবার পার্ক সার্কাস ময়দানের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সময় অটলজি বেঁচে থাকলে রাজধর্ম পালনের কথা বলতেন’। প্রসঙ্গত, গুজরাতে দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদিকে রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী।
কলকাতায় ছাত্র-পুলিশ সঙ্ঘাত : সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গতকাল কলকাতার পথে নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেলে শহিদ মিনার থেকে বিজেপি রাজ্য দপ্তর পর্যন্ত মিছিলে শামিল হন প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একাংশ। মিছিলে হাঁটেন অবিজেপি ছাত্র ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। মিছিল মুরলীধর সেন লেনে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছতেই মিছিল থেকে সিএএ বিরোধী সেøাগান ওঠে। বিজেপি যুব কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যাওয়ার উপক্রম হলে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করতে যায়। তাতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোনকারীদের ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। অশান্তির জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের একাংশ।
কেন্দ্রের সিএএ বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ জনতা থেকে শিক্ষার্থী, সর্বস্তরের মানুষের একটা অংশ শামিল। দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একদল ছাত্রছাত্রী এই আইনের বিরোধিতায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ করেছেন। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া থেকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতার প্রেসিডেন্সি থেকে যাদবপুর, এসআরএফটিআই –বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও বিরোধিতা সরব হন। গতকাল বিকেলে এই ছাত্র-যুব স¤প্রদায়ের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল এই প্রতিবাদ মিছিল। অন্যদিকে, এই কর্মসূচি আটকাতে পালটা প্রস্তুত ছিল বিজেপিও। ফলে অশান্তির আশঙ্কা ছিলই। তাই আগে থেকেই বিজেপি রাজ্য দপ্তরের সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিলই। সূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, সংবাদ প্রতিদিন।

 



 

Show all comments
  • তোফাজ্জল হোসেন ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    সবার উপর মানুষ সত্যি। মুদি গুলি করে মানুষ হত্যা করে আইন বাসতবায়ন করে সেই আইন দিয়ে দেশ চালাবে? মুদির পরিনতি মনে হয় ভয়ংকর খারাপ হবে তাই শয়তান এতো বেড়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Nur Nobi Chowdhury ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    Your people self details you need to fight back
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan Maruf ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    গত কয়েক বছর ধরে এদেশের হিন্দুরা বিজেপির কাছে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চলছে আমাদের ভারতের নাগরিকত্ব দাও, এখন অমিত সাহা আইন পাশ করে ভারতের মুসলিমদের দেশ ছাড়ার পাঁয়তারা করছেন। আর এদেশের অসাম্প্রদায়িকতার গান গাওয়া হিন্দু সংগঠন গুলো মুখে কুলুপ এঁটে বসে রইল।
    Total Reply(0) Reply
  • Sohag Rana ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    Bjp is the most communal party in the world. It spoils communal harmony and divides India
    Total Reply(0) Reply
  • Sohel Rana ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
    "৭০ বছর হিন্দু মুসলিম একসাথে বাস করেছে ;সমস্যা হয়নি.। এখন হচ্ছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে সরকারের হঠকারী স্বীদ্ধান্তের কারনে। উদারগনতান্ত্রিক দেশ ভারতের এই রুপ দেখে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হতভম্ব "--- মাহাথির মোহাম্মদ
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Sirajul Islam ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    মোদি তোমাকে ভেবেছিলাম তুমি তোমার পূর্বের জায়গা থেকে ফিরে এসেছ,আসলে ফিরে আসনি।ভারতবাসী তোমাকে চা বিক্রেতা থেকে যা দিয়েছে হয়ত তারাই তোমাকে একসময় আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।এই আশায় রইলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Hamid ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ!জালিম মোদির পতন হবে,মুসলমানদের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ