২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমলকি এক প্্রকার ভেষজ ফল। উচ্চমাত্রায় পুষ্টিগুনে সমৃদ্ব। আমলকিতে প্্রচুর পরিমান ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি এর অভাবে স্কার্ভি, লিউকরিয়া, অর্শ প্্রভৃতি রোগ হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ১০০ গ্্রাম আমলকীতে ভিটামিন সি আছে ৪৬৩ মিলিগ্্রাম। গবেষকরা বলেন একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর প্্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্্রাম এবং পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ৯০ মিলিগ্্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। পেয়ারার চেয়ে তিনগুন, লেবুর চেয়ে দশগুন, কমলার চেয়ে পনের গুন, আপেলের চেয়ে একশ বিশ গুন, আমের চেয়ে চব্বিশ গুন, আমড়ার চেয়ে পাঁচ গুন, কলার চেয়ে ষাট গুন বেশি ভিটামিন সি রয়েছে আমলকিতে। দুটি আমলকি খেয়ে প্্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। ১০০ গ্্রাম আমলকিতে ক্যালরি ৯৬ (শক্তি), পানি ৯১.৪ গ্্রাম, মোট খানিজ পদার্থ ০.৭ গ্্রাম, প্্েরাটিন ০.৯ গ্্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪.০ মিলিগ্্রাম, আয়রন ১.২ মিলিগ্্রাম, ভিটামিন বি ১০.০২ মিলিগ্্রাম, ভিটামিন বি২ ২০.০৮ মিলিগ্্রাম।
সুস্ক ত্বক ফেটে যায়, পায়ের গোড়ালি ফাটে অনেকের। তাদের জন্য আমলকির রস উপকারী। কিছুক্ষন লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। ঠান্ডা, কাশি, গা ব্যথা দুর করতে আমলকির জুড়ি নেই। হালকা গরম পানিতে মধুর সাথে আমলকি খেলে ঠান্ডা দুর হবে। আবার আমলকির রস আদার গুড়োর সাথে মিশিয়ে খেলে ব্যথা পালাবে। ত্বক, চোখ, চুল ভালো রাখতে আমলকি ভুমিকা রাখে। আমলকিতে আছে ফাইটো কেমিকেল, যা চোখের ডিজেনারেশন প্্রতিরোধে কাজ করে।
পাকা চুল, চুলে খুশকির শেষ নেই। আমলকির রস দিন। খুশকি দুর হবে। আমলকির রসে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং প্্েরাটিন। যা চুলের পুষ্টি যোগায়। চুল পড়া রোধ করে। কাচা আমলকি খেতে যাদের একদমই অনিহা, স্বস্তি বোধ করেন না, তারা মধুর সাথে আমলকির রস খেতে পারেন। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে এটি ভুমিকা রাখে। আমলকিতে বিদ্যমান ক্যরোটিন চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যৌন স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আমলকি কার্যকর। আয়ুবেদিক চিকিৎসকের মতে, প্্রতিদিন আমলকির জুস খেলে যৌনস্বাস্থ্য ভালো থাকে। এটি শুধু শুক্রানুর সক্রিয়তা বৃদ্বিই করে না, পাশপাশি শুক্রানুর উৎপাদন বাড়ায়। অলিগোস্পার্মিয়ার রোগীদের আমলকি খেতে বলা হয়।
অনিদ্্রা, রাতে ভালো ঘুম হয় না, তারা আমলকির রস নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘুমানোর আগে মাথায় দিন। সুখ নিন্দ্রা হবে।। কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে পারে আমলকি । সে জন্য হরতকি, বহেরার সাথে আমলকির রস খেতে হবে। খাবার হজমে আমলকি সহায়তা করে। নি:শ্বাসে দুর্গগ্ধ। আমলকি খেলে দুগর্ন্ধ দুর হবে। দাতের গোড়া শক্ত হবে। শরীর থেকে টক্্িরন বা বিষাক্ত পদার্থ ছেকে বের করে দেয় আমলকির রস। লিভার ভাল রাখে।
আমলকির আচার খেতে সুস্বাদে। সহজে ঘরে বানানো যায়। বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়। আমলকি শুকিয়েও খাওয়া যায়। বাংলাদেশের সব জায়গায়ই কমবেশি আমলকি হয়। তবে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, ভাওয়াল, মধূপুর, সিলেটে আমলকির চাষ বেশি হচ্ছে। বছরে উৎপাদন প্্রায় ২০ হাজার মেট্্িরক টন। বারি আমলকি-১, বাই আমলকি-১ এর চাষ বেশি হচ্ছে। কিছুটা অপ্্রচলিত হলেও বানিজ্যিকভাবে আমলকির চাষ লাভজনক।
আযুর্বেদীয় ও ইউনানি চিকিৎসক হাকিম রাশিদা আকতার জানান, আমলকির রস লিভার, পেটের পীড়া, হাপানী, কাশি,বহুমুত্র ও জ্বর নিরাময়ে বিশেষ উপকারী। হৃদরোগীরা আমলকী খেলে বুক ধড়পড়ানি কমবে। আমলকির রস রক্ত নালীতে চর্বি জমতে দেয় না। বারবার বমি হলে শুকনো আমলকী এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে ২ ঘন্টা বাদে সেই পানি একটু শ্বেত চন্দন ও সামান্য চিনি মিশিযে খেলে বমি বন্ধ হবে।
এত উপকারীতা সত্তেও আমলকির কিছু অপকারীতাও আছে। উচ্চমাত্রা ভিটামিন সি থাকায় আমলকি কিছুটা এসিডিক। সেটা প্্রকৃতিগতভাবেই। খালি পেটে আমলকি না খাওয়া ভালো। কিডনি রোগীরা আমলকি খেতে পারবেন। তবে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
মুনালয়, দক্ষিন নাজিরপুর
ডাক ও থানা- বানারীপাড়া, বরিশাল-৮৫৩০।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।