বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফে অবস্থানরত মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত
রোহিঙ্গাদের সাক্ষ্য নিতে মিয়ানমারের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এখন কক্সবাজারে। প্রতিনিধিদলটি বুধবার সকালে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনের কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান।
এসময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও আরআরসি অফিসের কর্মকর্তা সহ আন্তর্জাতিক সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে প্রতিনিধি দলটি হোটেল রয়েল টিউলিপ বিশ্রামে যান।
জানা গেছে, এই প্রতিনিধিদলে মিয়ানমার সরকারের ৯ জন এবং আসিয়ানের ৭ জন সদস্য রয়েছেন। মিয়ানমারের এই প্রতিনিধিদলটি বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শতাধিক রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলবেন এবং আরআরসি ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে মিয়ানমারের এই প্রতিনিধি দলটি এমন সময়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সাথে সাক্ষাত করছেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা জানতে এসেছেন যখন হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নির্যাতনের বিচার চলছে।
উল্লেখ্য ২১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের আরাকান রাখাইনে কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী হত্যা-ধর্ষণ সহ পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে রোহিঙ্গা জাতিসত্তা
নির্মূলের ষড়যন্ত্রকারী করে। এতে করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজার উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নেয়।
এর আগে ১৯৮২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গা সহ বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষে এই রোহিঙ্গা বোঝা বহন করা সম্ভব নয়। তাই সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশ মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ১৬ জুন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সংস্থা গুলোর মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের ১৫ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয় প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ। তবে আবারো হামলার মুখে পড়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গারা ফিরিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানালে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ভুন্ডল হয়ে যায়।
সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাই মাসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নতুন করে উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কথা বললেও মিয়ানমার সেই উদ্যোগের আশ্বস্ত হতে না পেরে রোহিঙ্গারা ফিরতে না চািলে আবারো প্রত্যাবাসন আবারো স্তগিত হয়।
গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ্বিতীয় দফা নির্ধারিত সময়ে ৩ হাজার ৪৫৫ রোহিঙ্গা নাগরিকের তালিকা পাঠানো হয়েছিল মিয়ানমার সরকারের হাতে। এতে টেকনাফের ২৩-২৪ -২৬-২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০৩৭ পরিবারের ৩ হাজার ৪৫৫ জন রোহিঙ্গাদের নাম তালিকাভুক্ত ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের উদ্যোগে তারা আশ্বস্ত হতে না পেরে ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় এ পর্যন্ত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আটকে আছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মিয়ানমার সরকারের ১৫ জন প্রতিনিধি দল আবার রোহিঙ্গাদের ফেরাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছেন। তবে এবারের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল আসার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হওয়া মিয়ানমার সরকার কিছুটা নমনীয় হয়েছেন বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।