পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
১৬ কোটি মানুষের এই দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ২৮ লাখ। শতাংশের দিক থেকে এটি মোট জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৫ ভাগ। খানা আয় ব্যয় জরিপ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির আলোকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দারিদ্র্যের এই হার প্রকাশ করেছে। বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, দিনে এক ডলার ৯০ সেন্ট বা ১৬২ টাকার কম যারা আয় করেন; তারা দরিদ্র। বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা ব্যবহার করে বিবিএস জানিয়েছে, তিন কোটি ২৮ লাখ মানুষ দিনে ১৬২ টাকার কম আয় করে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। সংখ্যায় তিন কোটি ৪৯ লাখ। সে হিসেবে এক বছরে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে ২১ লাখ। অন্যদিকে হত দরিদ্র্যের হার কমে ১০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সংখ্যায় যা এক কোটি ৬৮ লাখ। যা আগের অর্থবছরে ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সে কারণে ধারাবাহিকভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমে আসায় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত খুশি। সবার চেষ্টায় দারিদ্র্যের হার কমছে বলে জানান পরিকল্পামন্ত্রী।
বিবিএসের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে যে হারে দারিদ্র্যের হার কমেছে, এখন সেই হারে দারিদ্র্যের হার কমছে না। এ বিষয়ে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ কিশোর দাস জানান, বাংলাদেশে উচ্চ বৈষম্যের কারণে দারিদ্র্য কমার হারে যতটা গতি থাকা দরকার, ততটা নেই।
তথ্য বলছে, ২০০০ সালের খানা আয় ব্যয় জরিপে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০০৫ সালে সেটি কমে আসে ৪০ শতাংশে, ২০১০ সালে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসে। এখন যা ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। হত দরিদ্র্যের চিত্রও একই। ২০০০ সালে হত দরিদ্র ছিল ৩৪ দশমিক ৩ ভাগ, ২০০৫ সালে কমে হয় ২৫ দশমিক ১ ভাগ, ২০১০ সালে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ ২০১৬ সালে ১২ দশমিক ১ শতাংশ। যা এখন ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।
জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি চলমান আছে সেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যকে শুন্যের ঘরে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রয়েছে প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের। কোনো দেশ যদি তিন শতাংশের নিচে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনে, তাহলে ওইদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে ২০০০ সাল থেকে ২০১০ এই সময়ে দেশে যেহারে দারিদ্র্যের হার কমেছে, এখন সেই হারে না কমায় উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চূড়ান্ত হিসেবে বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে জিডিপির আকার ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। আর বিদায়ী অর্থবছরে মাথাপিছু জাতীয় আয় হয়েছে ১৯০৯ ডলার। টাকার অঙ্কে এক লাখ ৬০ হাজার ৪৪০ টাকা। অর্থ্যাৎ ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে একজন মানুষের বাৎসরিক আয় এক লাখ ৬০ হাজার ৪৪০ টাকা। সেই হিসেবে মাসিক আয় পড়ে ১৩ হাজার ৩৭০ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।