Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাস্তুহারা পরিবারের নতুন ঠিকানা গুচ্ছগ্রাম

মিজানুর রহমান, দৌলতখান (ভোলা) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৯ এএম


ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাস্তুহারা আড়াইশ’ পরিবারের নতুন ঠিকানা কালিয়া হাজারীর গুচ্ছগ্রাম। মেঘনার প্রবল ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসেছিলো এসব পরিবারগুলো। তাদেরকে সরকারিভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে। দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত কালিয়া হাজারী মৌজাটি মেঘনার প্রবল ভাঙনে বিলীন হলে গৃহহীন হয়ে পড়ে অনেক পরিবার। এক সময় মেঘনার বুকে কালিয়া হাজারী মৌজার অংশে জেগে ওঠে নতুন চর। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চরটি ভূমিদস্যুদের দখলে ছিলো। অবৈধ দখলদার ও স্থানীয় ভূমিদস্যুরা চরটি দখল করে পশুপালন ও চাষাবাদ করতো। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল’র নির্দেশে ভবানীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম নবী নবু উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ২০১৫ সালের শেষ দিকে চরটি দখলমুক্ত করে। সম্প্রতি সেখানে সরকারের আবাসন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৫টি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় বাস্তুহারা আড়াইশ’ পরিবারের ।
ভবানীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানায়, মেঘনার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন পড়ি। কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। গুচ্ছগ্রামে ঘরের ব্যবস্থা হওয়ায় এখন পরিবার নিয়ে সুখে আছি। একই ইউনিয়নের ফরিদউদ্দিন জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেছে। গুচ্ছগ্রামে ঘর না পেলে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এখানে, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিনিউটি ক্লিনিক, রাস্তা ও পুল কালভার্ট নির্মাণ করা জরুরি।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নবী নবু বলেন, দৌলতখানের ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত ভবানীপুর । এখানে ৭০’র পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কালিয়া হাজারী মৌজার জিরো পয়েন্টে এসে বেড়িবাঁধের কাজ উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, গুচ্ছগ্রামে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা আছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চরের বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে থাকে । সেখানে সাইক্লোন শেল্টার নেই। একটি সাইক্লোন শেল্টার ও কমিউনিটি ক্লিনিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে নিরাপদে থাকবে চরের বাসিন্দারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জীতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, চরের মানুষের নিরাপদে বসবাসের জন্য সরকারিভাবে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে বাসিন্দারা সেখানে নির্বিঘেœ বসবাস করতে পারে।
সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ইনকিলাবকে বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। যাদের ঘর নেই, সরকার তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। চরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেখানে খুব শিগগিরই কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি নৌ-এ্যম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীর তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিড থেকে চরের বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সবধরনের নাগরিক সুবিধা পাবে চরাঞ্চলের মানুষ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ