Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বনাথে ‘গুচ্ছগ্রাম’ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে অভিযোগ

বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রাজাগঞ্জ বাজারের পাশে ‘গুচ্ছগ্রাম’ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত অর্থ বছরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মাত্র একটি ঘর আংশিক নির্মাণ করা হয়েছে। ৪৬ লাখ টাকা ও ২৪ টন চাউল ব্যয়ে কাজটি টেন্ডারে না দিয়ে প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করার কথা থাকলেও খোজার খলার সাংবাদিক নামধারী এক ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি ঘর নির্মাণ করে ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। গৃহনির্মাণে পাকা পিলারে কাটা পাথর দেয়ার কথা থাকলেও নিম্নমানের সিংগেল পাথর ও স্বল্প সিমেন্ট দিয়ে যেনতেনভাবে উপজেলা পরিষদের সামনে ২৫টি ঘরের খুঁটি তৈরি করে প্রকল্প এলাকায় নেয়া হয়েছে। ২৫ টি ঘরের মধ্যে দীর্ঘ দিনে মাত্র একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। গুচ্ছগ্রাম নির্মাণে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬ লাখ টাকা ও ২৪ টন চাল বরাদ্দ করা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দু’টি কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি ও সহকারি কমিশনারকে (ভ‚মি) সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট অপর আরেকটি কমিটি করা হয়। উপজেলা কমিটির মাধ্যমে একটি টিউবওয়েল, আলাদা রান্নার ঘর, চুলাসহ ২৫টি ঘর নির্মাণের জন্য উপজেলা কমিটি মালামাল কেনার কথা। আর ইউনিয়ন কমিটি মাটি কাটার কাজ সম্পন্ন করবেন। কিন্তু উপজেরা কমিটি পাকা কাজ নিজে করাবেন এবং মাটি কাটার কাজও তদারকি করবেন।
স্থানীয় জনসাধারণের মতে, ঠিকাদার ও কমিটি মিলে প্রকল্পের কাজ না করে দূনীতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করছেন। মাটি কাটার জন্য ২৪ টন চাউল বরাদ্দ করা হলেও মাত্র চার-পাঁচ টন চাউলের মূল্যের কাজ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ছোট দুটি নালা ভরাট করে ও ঘাসের উপর সামান্য মাটি ফেলা হয়েছে। ইউপি সদস্য এই প্রকল্পের ১০০ ট্রাক মাটি অন্যত্র বিক্রি করেন কমিটির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম। গুচ্ছগ্রামের মাটি চোরাই পথে বিক্রিতে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

স্থানীয় সাংবাদিকরা গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের অগ্রগতি জানতে তথ্য সংগ্রহে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাব পরাগ তালুকদার, সহকারি কমিশনার ভূমি ও সদস্য সচিব উভয়েই সাংবাদিকদের কোন তথ্য দিতে রাজি হননি। পরে ভুমি অফিসের নাজির এই প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, গুচ্ছগ্রাম নির্মাণে ৪৬ লাখ টাকা ও ২৪ টন চাল বরাদ্ধ হয়েছে বলে জানান। তবে কতটুকু কাজ হয়েছে কিংবা কত টাকা উত্তোলন করেছেন ঠিকাদার তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

স্থানীয় কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন জানান, সুষ্ঠুভাবেই কাজ চলছে। কমিটির সদস্য সচিব ও ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন জানান, মাটি ভরাট কাজ অনেক আগেই শেষ করা হয়েছে। তবে মাস্টার রোল দাখিল করা হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ সম্পর্কে তিনি কিছুই বলতে রাজি নন। ঠিকাদার সালেহ আহমদ জানান, কাজটি আমি টেন্ডার মাধ্যমে পাইনি, কাজ করাবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমি শুধু লেবার সরবরাহ করছি। এলাকাবাসীর অভিযোগ গুচ্ছগ্রামের নামে কমিটির সংশ্লিষ্টরা টাকা আত্মসাৎ করছেন। তারা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ