Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরম আপত্তির মধ্যেই লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:১৪ পিএম
ভারতে বিরোধী দলের চরম আপত্তি এবং উত্তর-পূর্বে ব্যাপক বিক্ষোভকে অগ্রাহ্য করেই আজ সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলকে কেন্দ্র করে শাসক ও বিরোধীদল আলাদা অবস্থানে রয়েছেন। পার্লামেন্টে সংখ্যাগিরিষ্ঠতা থাকায় এ বিল পাশ করা নিয়ে সরকারের কোন সংশয় নেই।
তবে কংগ্রেস নেতা অধির চৌধুরী বলেন, তারা এই বিলের পুরোপুরি বিরোধিতা করবে। আরও বলেন, সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লঙ্ঘিত হবে এ বিলের মাধ্যমে। সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসও বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন, এ বিল পাশ হওয়ার অর্থ গান্ধীর উপরে জিন্নার আদর্শের জয়। তিনি বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দিলে ভারত পাকিস্তানের হিন্দু সংস্করণ হয়ে যাবে।
অনেকেই বলছেন, এটি আসলে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের লক্ষ্যে কয়েক দশকের পুরনো চুক্তি বাতিল করার একটি পদক্ষেপ। খবর এনডিটিভির। অমিত শাহ সোমবার ৬ দশকের পুরনো নাগরিকত্ব আইনটি সংশোধন করার জন্য এই বিলের প্রবর্তন করেন।
বিলটি নিয়ে লোকসভায় আলোচনার পর এটি পাস করানোর জন্য বিবেচিত হবে। এই বিল পাস হলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতে নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করবে।
বিলটির প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের একটি প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছে। তারা মনে করছে, এই বিলটি আসলে ১৯৮৫ সালের আমাম চুক্তি বাতিল করার প্রয়াস। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের চুক্তি অনুযায়ী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব অবৈধ অভিবাসী এ দেশে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হবে।
আসামের শীর্ষ ছাত্র সংগঠনগুলো হুমকি দিয়েছে, বিলটি পাস হলে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করবে তারা। ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনটিতে বলা হয়েছে, অন্য দেশ থেকে ভারতে আসা কোনো ব্যক্তি যদি ভারতের নাগরিকত্ব প্রার্থী হন, তাহলে তাকে গত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর এ দেশে বসবাস করছেন এই প্রমাণ দেখাতে হবে। কিন্তু সেই বিধান বদলাতেই আনা এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, ভারতে টানা ৫ বছর ধরে বসবাস করা অমুসলিমরাই নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস নেতা শশী থারুরসহ অনেক বিরোধী নেতাই এই সংশোধনীটিকে বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেছেন।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্র যদি সব সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলে তবে আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু তারা যদি ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করে, তবে আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, এই বিলটি মৌলিকভাবে অসাংবিধানিক। বিলটিতে যা প্রস্তাব করা হয়েছে, তা মেনে আইন হলে সেটি ভারতের মূল ধারণাকে আঘাত করবে। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের লক্ষ্য হলো- মুসলিমদের ছাড়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি এই ৬টি সম্প্রদায়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ