Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রুম্পার মৃত্যু ঘিরে রহস্য, ফেইসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:৪৯ এএম

ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ উদ্ধারের পর তিন দিন পেরিয়ে গেলেও উত্তর মেলেনি অনেক প্রশ্নের। সেসব প্রশ্নের এখন উত্তর না মেলায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। তারা দ্রুত হত্যার রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে রুম্পার লাশ উদ্ধার করা হয়। শান্তিবাগে যে বাড়িতে রুম্পা থাকতেন সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনে তার মরদেহ পাওয়া যায়। শপিং সেন্টারের পাশাপাশি আরও দুটি বাড়ি রয়েছে সেখানে। এগুলোর যেকোনো একটির উঁচু থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে সে।

বুধবার রাতে টিউশনি সেরে শান্তিবাগের বাসার নিচে গিয়ে ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী কেন কানের দুল, আংটি আর মোবাইল ফোন রেখে গিয়েছিলেন, কেন তিনি আবার আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে গিয়েছিলেন, সেসব প্রশ্নের উত্তর না মেলায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। রুম্পার ভাই আশরাফুল আলমের সন্দেহ, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

ফেইসবুকে প্রতিবাদ জানিয়ে মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘‘বিচার চাই বিচার চাই বলতে বলতে আজ ক্লান্ত লাগে আর কতো? কেনো এদেশে আজ নারীরা এতো অনিরাপদ, কেমন নিকৃষ্ট জাতিতে পরিণত হলাম আমরা?’’

আক্ষেপের সাথে হোসাইন খোকন লিখেছেন, ‘‘দেশে কি হলো ভাই ধর্ষণ খুন প্রতিদিনের ডাল ভাতের মতো হয়ে গেছে। এগুলোর দায়ভার কে নিবে আমরা এগুলোর কঠিন বিচার চাই। এভাবে একটা দেশ চলতে পারেনা।’’

‘‘স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পাকে কেন মরতে হলো? কারা তাকে মারলো? আমি খুব অবাক হয়ে দেখছি, বেশিরভাগ নির্বিকার। রূপার বাবা রোকন উদ্দিন বলেছেন, তার মেয়েটাকে হত্যা করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। আমি খুব করে চাই হত্যাকারীরা দ্রুত চিহিৃত হবে। আর চাই নিরাপদ একটা দেশ। আমি জানি না মেয়েদের জন্য নিরাপদ একটা দেশের জন্য আর কতোকাল আমাদের অপেক্ষা করতে হবে’’ মন্তব্য শরিফুল হাসানের।

হোসাইন আল মামুন লিখেছেন, ‘‘দুঃখের বিষয় হলো মিথিলাকে নিয়ে মিডিয়া যতো নিউজ করেছে এই হত্যাকাণ্ড নিয়েও যদি এতোগুলা নিউজ হতো তাহলে প্রশাসন আরো গুরুত্ব দিতো।’’

তানজিন আহমেদ লিখেছেন, ‘‘অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানায়।’’

‘‘যে কেউ যে কোনো সময় ভিকটিম হতে পারে যদি সমাজের নীতি-নৈতিকতার ভিত ভেঙে যায়। তাই সবার উচিত সকল অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। অপরাধীদের সাহস বাড়তে দেয়া ঠিক না’’ লিখেছেন তাহরিমা ইসলাম।

কলেজ শিক্ষক মো. আব্দুস সামাদ লিখেছেন, ‘‘স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রুম্পাকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে কিছু মানুষরুপী জানোয়ার। এই বিষয়টি নিয়ে তেমন প্রতিবাদ করছেন না। অথচ মিথিলার বিয়ে নিয়ে কত সুন্দর করে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন, অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বাহ! আপনারা বাহ! আপনাদের জন্য খুব লজ্জা হয়, ধিক্কার জানায় আপনাদের।’’

আখাশ খান বিচারের দাবি জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘এই মেয়ের নাম নুসরাত না, তনু না। তবে তনুদের মত একজন। আমাদের গণমাধ্যমে মিথিলার বিয়ে যে পরিমাণ গুরুত্ব দিচ্ছে রুম্পা হত্যায় তা দিচ্ছে না। তনু কিংবা নুসরাত হত্যায় আমরা যেভাবে সোচ্চার ছিলাম আসুন সেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়াই।’’
এদিকে, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন হত্যার বিচারের দাবিতে আজ শনিবার মানববন্ধন করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এ সময় বক্তব্য দিতে গিয়ে শারমিনের সহপাঠী সাঈদা জান্নাত কান্নায় ভেঙে পড়েন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ