পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ উদ্ধারের তিন দিন অতিবাহিত হলেও মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইন-শৃংখলা বাহিনী। রুম্পাকে ভবন থেকে ফেলে, নাকি ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা। আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় হত্যারহস্য বের করতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি করছে পুলিশ। তবে পুলিশের বেশ কয়েকটি দল এই মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে। রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুম্পার লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার ওই ইউনিভার্সিটির রাজধানীর ধানমন্ডি ও সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
তদন্তের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, লাশ শনাক্তের পর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে আশপাশের ভবনের সিসি টিভি ফুটেজসহ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী রুম্পা হত্যার ক্লু বেরিয়ে আসবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সৈকতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঢামেক-এর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, আমরা দুই-একদিনের মধ্যেই রুম্পার লাশের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো। ময়নাতদন্তের সময় আমরা যা যা পেয়েছি-তা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেতে কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, ময়নাতদন্তের সময় নিহতের শরীর থেকে হাইভেজেনাল সপ সংগ্রহ করা হয়েছে মৃত্যুর আগে তিনি ধর্ষিত হয়েছিলেন কি না! এছাড়া ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়। সেসব পরীক্ষার প্রতিবেদন আসতে একটু দেরি হয়। সেগুলো হাতে পেলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
রমনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় আমাদের টিম রাতদিন কাজ করছে। নিহতের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এবং আশপাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনো কিছুই বলার সময় আসেনি। আশা করছি অতি শিগগির এই ঘটনার বিস্তারিত আপনাদের জানাতে পারবো।
শনিবার ওই ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ও সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, রুম্পা হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এ ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও হত্যাকান্ডের রহস্যের কুল-কিনারা করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত যে বা যারা আছেন তাদের যেন দ্রæত আইনের আওতায় আনা হয়। পাশাপাশি এই আন্দোলন প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়-ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দেয়ার আহŸান জানানো হয়েছে। যেন সব শিক্ষার্থী ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ছাইফুল ইসলাম মাছুম বলেন, শুরু থেকেই এই হত্যাকান্ড অন্যদিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফেনীর নুসরাত হত্যার ঘটনাও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হয়েছিল। অন্য কোনো ইস্যুতে যেন রুম্পা হত্যাকান্ড ধামাচাপা না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চারদিকে এত হত্যা, খুন-ধর্ষণের ভিড়ে আমরা শুধু স্বাভাবিক মৃত্যুে গ্যারান্টি চাই, আর কিছু নয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ১৯ থেকে ১৫ নম্বর রোড পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় ইউনিভার্সিটিটির সাতটি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, হত্যা সন্দেহেই তদন্ত প্রাথমিক কাজ চলছে। আশা করছি দ্রæতই বিস্তারিত জানা যাবে।
রহস্য উন্মোচন ও সুষ্ঠু বিচার চায় পরিবার
রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় এখনো কাউকে সন্দেহ করতে পারছে না তার পরিবার। তবে সুষ্ঠু বিচারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশা করছেন তারা। রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, আমি অনেক আশা করে মেয়েকে ইংরেজি বিভাগে পড়াচ্ছিলাম। এভাবে ও চলে যাবে ভাবতে পারিনি। আশা করছি দ্রæতই আইন-শৃংখলা বাহিনী মূল ঘটনার রহস্য উদঘাটন করবে।
তিনি আরো বলেন, যদি সে (রুম্পা) আত্মহত্যা করত, তাহলে নিজের বাসায় থেকেই করতে পারত। বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে করতে হতো না। শুনেছি যে বাড়ির ছাদের নিচে শারমিনের লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়িতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র থাকেন। তারা এখন নাকি পলাতক।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ৪ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে ওই ছাত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে জায়গায় এ ঘটনা, তার আশপাশে বেশকিছু ছেলে ও মেয়েদের হোস্টেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।