নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস পুরুষ ফুটবলে অপেক্ষকৃত দূর্বল ভুটানের কাছে লজ্জার হার মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক দল। সোমবার দুপুরে কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে পুরুষ ফুটবলের উদ্বোধনী ম্যাচে ভুটান ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। বিজয়ীদের পক্ষে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন চেনচো গেইলশেন।
এসএ গেমস ফুটবলে ঘরের মাঠে ২০১০ সালে সোনালী ট্রফি জিতলেও ১৯৯৯ সালে এই ডিসিপ্লিনে নেপালেই প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছিল বাংলাদেশ। বিশ বছর পর এখানেই ফের বিজয়োৎসব করতে প্রস্তুত ছিলেন লাল-সবুজের ফুটবলারা। কাঠমুন্ডুতেই উৎসবে মাততে চেয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। কিন্তু শুরুতেই তাদের ভুটান বাধায় পড়তে হলো। গেমপহা ফুটবলে তৃতীয়বারের মতো স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে কাল মাঠে নামলেও ভুটানের মতো অপেক্ষাকৃত দূর্বল দলের কাছে হারের গ্লানি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র শিষ্যদের। ম্যাচের শুরু থেকেই ভুল পাসের মহড়া দেন নাবীব নেওয়াজ জীবন-সাদ উদ্দিনরা। যার ফল ভোগ করেন তারা ম্যাচ হেরে। পুরো ম্যাচে একমাত্র অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ছাড়া বাকিরা ছিলেন প্রায় অনুজ্জ্বল। তবে মাঝে মাঝে জামালও ভুল করেছেন। যদিও মাচের প্রথম সুযোগটি পায় বাংলাদেশ। প্রথম মিনিটে ভুটানের সীমানা থেকে রবিউল হাসান লম্বা থ্রো করলে বক্সের ভেতরে জীবন হেড করেন। কিন্তু ভুটানের দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার জিগমে শেরিং দরজি পাল্টা হেডে কর্নারে দলকে রক্ষা করেন। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে জামাল ডান পায়ে শট নিলে তা দক্ষতার সঙ্গেই ধরে ফেলেন ভুটানি গোলরক্ষক কিনলে তেনজিন। প্রথমার্ধে অপেক্ষাকৃত বেশি আক্রমণ করে বাংলাদেশ। তবে তাদের আক্রমণগুলো ছিল অপরিকল্পিত। ম্যাচের ১৪ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিম উঁচু ক্রস করেন। ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিন যদি সেই ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারতেন, তাহলে গোলটা পেয়েই যেত বাংলাদেশ। ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে আক্রমণে যায় ভুটান। ২২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে দাওয়া শেরিং লম্বা থ্রু পাস বাড়ান। সেটা ধরে ফরোয়ার্ড চেনচো গেইলশেন ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে গড়ানো শট নিলে বল সাইডপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। তবে বাংলাদেশ গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ভুটানের ডি-বক্সের বাইরে থেকে জামালের ডান পায়ের গড়ানো শট ভুটানি গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রণে নেন। দু’মিনিট পর ডান প্রান্ত দিয়ে ফের আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। এসময় ইব্রাহিম বক্সের ভেতরে উঁচু ক্রস ফেলেন। জামাল ভাল পজিশনে থেকে হেড নেন। কিন্তু বল অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেলে হতাশা বাড়ে লাল-সবুজদের।
পুরো ম্যাচে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে খেলতে পারেননি জীবন। ড্রিবল করে একবারও সফল হননি তিনি। এছাড়া ভুল পাসের মহড়া দিতে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত করতে পারেননি বেশ ক’বার। গোলশূণ্য প্রথমার্ধ শেষ হলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাতœ ফুটবল উপহার দেয় ভুটান। ৫২ মিনিটে তারা একটি ভালো সুােগও পায়। এ সময় ডান প্রান্ত দিয়ে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে চেনচোর বাঁ পায়ের গড়ানো শট গোলরক্ষক জিকো ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও সফল হননি। বল তার হাত ফস্কে কর্নার হয়। অবশেষে গোলের দেখা পান দশরথ স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় শ’খানে দর্শক। একের পর এক আক্রমণ করে ম্যাচের
৬৫ মিনিটে সফল হয় ভুটান। এসময় বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে গিয়ে চেনচো’র কাছে বল ঠেলে দেন এক ভুটানী। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বাংলাদেশ বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন চেনচো। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা তাকে বাধা দেয়ার তেমন চেষ্টাই করেননি। হয়তো ভেবেছিলেন পেছন থেকে ট্যাকল করলে চেনচো পড়ে গেলে নেপালি রেফারি নবীন্দ্র মহারজন পেনাল্টির বাঁশি বাজাবেন। বাংলাদেশী ডিফেন্ডারদের এই ইতস্তত ভাবকে কড়ায়-গন্ডায় কাজে লাগান চেনচো। বল নিয়ে দ্রুত গতিতে ছোট বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের আলতো চিপে কোনাকুনিভাবে তা জালে পাঠিয়ে দেন (১-০)। আনন্দে মেতে ওঠে ভুটান শিবির। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি বাংলাদেশ। ফলে হারের গ্লানি নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৫টায়। এর আগে সোয়া ৩ টায় স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে খেলবে ভুটান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।