পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
মানবসভ্যতার বয়স যদি ৫০০০ বছর ধরি, সে তুলনায় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের বয়স ৪৮ বা ৪৯ বছর এমন কিছুই না; বিন্দু থেকেও হয়তো বা শতভাগ ছোট। বাংলাদেশের রাজনীতির বয়স ৪৮-এর সাথে যদি পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর যোগ করি অথবা তারও আগের ব্রিটিশ আমলের ৬২ বছর যোগ করা হয়, তাহলেও যে সমষ্টি দাঁড়ায়, সেটিও এমন কিছু না (ন্যাশনাল কংগ্রেস নামক রাজনৈতিক দলটির প্রতিষ্ঠা ১৮৮৫ সালে)। কিন্তু গত ৪৮ বা ৬২ বা ১৩৩ বছরে রাজনীতিতে যতটুকু স্বচ্ছতা, গুণগত উৎকর্ষ, জনকল্যাণমুখিতা আসা উচিত ছিল; ততটুকু এসেছে বলে অনেকেই মনে করেন না। বহু বিদগ্ধ ব্যক্তি মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আবশ্যক। এ জন্য প্রচুর লোকের আগ্রহ যেমন আছে, তেমনি অনেক লোক আছেন যারা গুণগত মান নিয়ে চিন্তিত নন। যারা গুণগত পরিবর্তন আনায় আগ্রহী, তারা স্বীকার করেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আনা সম্ভব না হলে, বিকল্প কী করা যায়, সেটি চিন্তা করা প্রয়োজন। তারা এটাও স্বীকার করেন, পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি করার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা করতে হবে। জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে মিডিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়কালে যেসব ঘটনা ঘটেছে এবং সেগুলোর মাধ্যমে গত আট-দশ বছরে যেসব ঘটনার সূত্র জানা যাচ্ছে, এর মাধ্যমে মানুষের মনে প্রতিজ্ঞা ও প্রত্যয় আরো শক্তিশালী ও শক্ত হচ্ছে এই মর্মে যে, পরিবর্তন আনতেই হবে।
১৯৯৭ সালের জুলাই মাস থেকে পত্রিকায় কলাম লিখছি। আমার অবসর জীবন শুরু হওয়ার পর থেকেই লেখা শুরু। যখন যে পত্রিকা দাওয়াত দিয়েছেন, যখন যে পত্রিকায় লেখার সুযোগ এসেছে, সে পত্রিকায় লিখে আসছি। কোনো সময় একটিতে মাত্র, কোনো সময় যুগপৎ দু-তিনটিতে। পত্রিকায় প্রকাশিত কলামগুলোর ছয়টি সঙ্কলন বেরিয়েছে এবং আরো দু’টি বের হওয়ার অপেক্ষায়। ২০০১ সালের শেষ থেকে, স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে যাওয়া-আসা শুরু করি। এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আইতেই বেশি যেতাম। পরবর্তীকালে কম-বেশি প্রায় সব চ্যানেলেই যেতাম বা গিয়েছি। ২০১৯-এ যাওয়া-আসা কমে গেছে। ২০০৭ সালের আগের কথা বলছি। পত্রিকার কলামে এবং টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বারবার রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তনের অনুকূলে গুরুত্ব আরোপ করতাম, সেহেতু আমার ওপর নৈতিক চাপ আসে এই মর্মে যে, ‘সুন্দর সুন্দর কথা লেখা এবং বলা সহজ, বাস্তবায়ন করা কঠিন। সাহস থাকলে বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতির মাঠে আসুন।’ অনেকটা এরূপ প্রেক্ষাপটেই ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখ বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি জন্ম নিয়েছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই আমরা ঘোষণা করেছিলাম আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য। আমাদের লক্ষ্য এবং স্লোগান ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ (ইংরেজিতে : পলিটিক্স ফর চেঞ্জ)। আমরা ওই লক্ষ্যেই কাজ করে আসছি। আমি ক্ষুদ্র ব্যক্তি, আমাদের দল ক্ষুদ্র, তবে আমাদের প্রচেষ্টা ক্ষুদ্র হয়নি। আমাদের লক্ষ্য মহৎ। ৪ ডিসেম্বর ২০০৭ বেলা ২টার পরে, পরবর্তী ১২-১৪ ঘণ্টায়, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রদর্শিত সংবাদে, আমাদের দলের উদ্বোধন ও লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছিল। তবে আমরা এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলাম না যে, আমাদের স্লোগান তাৎক্ষণিকভাবে আকাশে-বাতাসে ঢেউ তুলবে। মাত্র মাসখানেক পর ৮ জানুয়ারি ২০০৮ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে (তৎকালীন) আগ্রহী প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী বারাক ওবামা খুব সুন্দরভাবে রাজনৈতিক নাটকীয়তায় ঘোষণা করেছিলেন : ‘চেঞ্জ উই নিড, চেঞ্জ উই ক্যান, অর্থাৎ আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন। আমরা পরিবর্তন আনতে পারি।’ এ কথাটি মিডিয়ার বদৌলতে এবং ওবামার ব্যক্তিত্বের ওজনে আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা অর্থাৎ কল্যাণ পার্টি বলার এক বছর পর, ওবামা বলার ১১ মাস পর, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছিল। ওই নির্বাচনের আগে, বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে এখনকার শেরাটন হোটেলে ২৪ পাতার নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ করেছিলেন। সে ইশতেহারে, তিনি ‘দিনবদলের রাজনীতি’র বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ ও প্রচার করেন। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে বিএনপি নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নরসিংদী শহরে বিশাল জনসভায় প্রদত্ত দীর্ঘ বক্তৃতায় আগামী দিনে তিনি যে নিয়মে দেশ পরিচালনা করবেন, তার কিছু ইঙ্গিত দেন। তিনি নিজের জবানে বলেন, ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি, নতুন ধারার রাজনীতি।’ বেগম জিয়া ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখের আগেও নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলেছেন এবং একই তারিখের পরও বলেছেন।
আমাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতেই হবে। সে জন্য একটি শুভ সূচনা প্রয়োজন। কল্যাণ পার্টি প্রতিষ্ঠার পরপরই আমরা কল্পনা করেছিলাম, অনুমান ও পরিকল্পনা করেছিলাম যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনটির মাধ্যমে ওই পরিবর্তন প্রক্রিয়ার শুভ সূচনা হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। অতঃপর অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারির পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পার্লামেন্ট নির্বাচন। উভয় নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ আশাহত এবং আগামী দিনের রাজনীতি নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন। ২০১৮-এর নির্বাচন ছিল ভোট ডাকাতির। তাই এটা এখন অনেকটা ধ্রুব সত্যের মতো দাঁড়িয়েছে, আমাদের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন অবশ্যই প্রয়োজন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের ঘটনাবলি, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি, হত্যাকান্ড কেলেঙ্কারি ইত্যাদি আমাদের রাজনীতির চেহারার নোংরা অংশ খুবই নগ্নভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। কিন্তু যতটুকু ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, সেটা নগ্নতার ক্ষুদ্রাংশ মাত্র। তাই নগ্নতার পূর্ণ অংশ প্রকাশিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করে, পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করা উচিত। সেই পরিবর্তনে অনেক ছোট ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ উপাত্ত থাকবে। এর দু-চারটি মাত্র উল্লেখ করছি।পরিবর্তনের এক নম্বর উপাত্ত হচ্ছে, রাজনীতিবিদদের ভাষায় শালীনতা ও শোভনীয়তা থাকতে হবে। জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ যারা, তারা যদি নিজেদের ভাষণ, নিজেদের বচন শোভনীয় ও শালীন না করেন, তাহলে কনিষ্ঠগণও তা না করার সম্ভাবনা বেশি। অতএব, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতৃবর্গকে (বিশেষত ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবর্গ) দিয়েই এই পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে। ক্ষমতাসীন কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা প্রায় নিয়মিতভাবেই বিরোধীদলীয় নেতা-নেত্রীগণকে, তাদের পরিবারকে, তাদের দলকে আক্রমণ করেন অশোভন ও অশালীন ভাষায় ও ইঙ্গিতে। বিরোধী শিবিরেও অশোভনীয় বচনের জন্য চিহ্নিত দু-চারজন যে নেই, তা নয়। এরূপ ভাষা ও ইঙ্গিত বর্জন করাই বাঞ্ছনীয়। বংশ তুলে, পিতামাতা তুলে, স্বামী-স্ত্রী তুলে, সন্তানসন্ততি তুলে অশোভন ভাষায় গালি দেয়া কোনো সমস্যার সমাধান করে না।
পরিবর্তনের দুই নম্বর উপাত্ত হচ্ছে, জেদ ও গোঁয়ার্তুমি পরিহার করা। ২০১১ সাল থেকে সরকার বলে আসছে, ‘অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে দেশ পরিচালনা করা গণতান্ত্রিক চেতনা ও মর্মের পরিপন্থী। সে জন্যই অনির্বাচিত ব্যক্তিদেরকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে না।’ অপরপক্ষে প্রায় ৯ বছর ধরেই বিরোধী শিবির বলে আসছে, ‘একাধিক কারণেই ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ও ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সরকার ও দেশ পরিচালনা অব্যাহত রেখে, ওই পরিবেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অবাস্তব।’ ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে বিরোধী শিবির অংশগ্রহণ করেনি, কল্যাণ পার্টি অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে যেকোনো কারণেই হোক বিরোধী শিবির অংশগ্রহণ করেছে, কল্যাণ পার্টিও অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু এই উভয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণ এমন তিক্ত, এমন প্রতারণামূলক, এমন নিবর্তনমূলক পরিবেশ পেয়েছে যে, আগামীতে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া অসম্ভব, অবাস্তব ও অকল্পনীয়। তাই আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধানেই হতে হবে। সে ব্যবস্থা কায়েম করা হবে কি হবে না, সেটি মোটেও প্রশ্ন নয়; বরং প্রশ্ন হলো সে ব্যবস্থা কিভাবে কায়েম করা হবে? এর জন্য সাংবিধানিক কাঠামো কী হবে, সেটি এখনই স্থির করা উচিত। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে যখন পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছিল, তার আগে আওয়ামী লীগ ঘোষণা করেনি যে তারা ক্ষমতায় গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করবে। কিন্তু তারা এটা করেছে, যা ছিল জনগণের সাথে প্রতারণা। তাই এই অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য শোভনীয় ব্যবস্থা বের করা এখন সময়ের দাবি।
পরিবর্তনের তিন নম্বর উপাত্ত হচ্ছে, আমাদের রাজনীতিকে বর্তমানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, ভবিষ্যতের দিকে প্রসারিত করা। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ- এ তিন কালের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। যেসব দেশ ইতোমধ্যে অর্থনীতি, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও নৈতিকতা- এ চারটি মানদন্ডে উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে, তথা উন্নত বিশ্বে রূপান্তরিত হয়েছে, তাদের উদাহরণ অনুসরণ করে বর্তমানকে স্থিতিশীল রেখে ভবিষ্যতের দিকে নজর বেশি দেয়া। এর বিপরীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রবণতা হলো, অতীতের দিকে নজর বেশি দেয়া। আমাদের মধ্যে যারা প্রবীণ, তাদের অনেকেরই মনে একটি ধারণা আছে, প্রবীণেরা যা মনে করেন, দেশের সব মানুষই মনে হয় সেটিই মনে করেন। আসলে দেশের তরুণ স¤প্রদায়, বহুলাংশেই প্রবীণ স¤প্রদায়ের প্রতি আস্থাহীনতায় ভুগছে। ইতিহাস সম্বন্ধে যতটাই আমরা তরুণদেরকে ‘খাওয়াতে চাই’, তারা ততটুকু খেতে প্রস্তুত নয়। তরুণেরা ক্রমান্বয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের সাথে পরিচিত হচ্ছে। এখন থেকে ৪৭ বা ৪৮ বছর আগে বাংলাদেশের বাইরে যত বাঙালি থাকত, এখন সে সংখ্যাটি ১০ বা ১৫ বা ২০ গুণ বেড়ে গেছে। অতীতে একজন বাঙালি থাকলে এখন ১০ বা ১৫ বা ২০ বাঙালি বাইরে থাকেন এবং তাদের মধ্যে তরুণই বেশি। বাইরের বাঙালিদের সাথে, দেশে থাকা বাঙালিদের ইন্টারঅ্যাকশন ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বা তরঙ্গ জগতে কোনো সীমান্তরেখা নেই। এ কারণে বাংলাদেশি তরুণ স¤প্রদায় বিশ্বের অন্য দেশের ও সমাজের তরুণ সম্প্রদায়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হতে চায় এবং এ জন্য আরো বেশি বেশি সুযোগ চায়। অতএব, আমাদের রাজনীতিতে, আগামী দিনের বাংলাদেশের মালিক তথা তরুণ স¤প্রদায়ের চিন্তা-চেতনা ও আশা-আকাক্সক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
পরিবর্তনের চার নম্বর উপাত্ত। ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ বলতে বোঝাতে চাই, বিভিন্ন পেশার মেধাবী, সাহসী কর্মঠ দক্ষ আগ্রহী ব্যক্তিরা যেন ‘রাজনীতি’ নামক কর্মকান্ডে জড়িত হন। ভূগোল থেকে একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ঢাকা মহানগরীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা নদীর পানি এত দূষিত যে শুষ্ক মৌসুমে (প্রধানত অক্টোবর থেকে জুন) এই নদীর পানিকে পানি বলা মুশকিল হয়ে যায়। কারণ তখন এটা হয়ে যায় কালো, বিষাক্ত তরল পদার্থ। অন্য দিকে বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি হয়, বৃষ্টির পানির কারণে বুড়িগঙ্গায় স্বাভাবিকভাবেই অবিষাক্ত, স্বচ্ছ পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। নদীতে দূষিত তরল পদার্থের তুলনায় যখন স্বাভাবিক বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পায়, তখন বুড়িগঙ্গার পানিকে আবার পানির মতো মনে হয়। অর্থাৎ বুড়িগঙ্গার দূষিত তরল পদার্থকে হালকা করতে হলে বাইরের স্বচ্ছ পানি দরকার। তদ্রুপ বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রবাহকে, যদি উন্নত ও স্বচ্ছ জীবন দিতে হয়, তাহলে নতুন মানুষ, নতুন চিন্তা, নতুন মেধার প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ রাজনীতি নামক কর্মকান্ডকে সম্মানজনক করতে হবে। তাহলেই মানুষ রাজনীতি করতে আগ্রহ দেখাবে। ছাত্রজীবনে রাজনীতি করার পর, বড় হলে রাজনীতি করবে এ কথা যেমন সত্য এবং ভালো, তেমনি সত্য এবং ভালো যে, ছাত্রজীবনে যারা রাজনীতি করেনি, এতে পরবর্তী জীবনে জড়িত হতে চায়, তাদের জন্য দুয়ার উন্মুক্ত রাখতে হবে।
লেখক: চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।