Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাঁচল কয়েকশ’ প্রাণ ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

বগুড়া ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বগুড়া রেলস্টেশনে অল্পের জন্য বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল দোলনচাঁপা আন্তঃনগর ট্রেন। তবে এ ঘটনায় দুজন আহত হলেও রেললাইনের ওপর গড়ে ওঠা ‘হঠাৎ মার্কেটে’ কেনাবেচায় ব্যস্ত কয়েকশ মানুষ বেঁচে গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

ঘটনার বর্ননা দিয়ে বগুড়ার রেলের স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেম জানান, দুপুর ১১টায় দোলনচাঁপা আন্তঃনগর ট্রেনটি বেনারপাড়া থেকে সান্তাহার যাওয়ার পথে বগুড়ায় আসছিল। অপরদিকে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেক্স ঢাকা থেকে বগুড়া স্টেশনের দিকে আসতে থাকে। সিগন্যাল এবং পয়েন্ট ঠিক করে দোলনচাঁপা ট্রেনটির জন্য দুইনম্বর লুপ লাইনে এবং লালমনি এক্সপ্রেক্সকে এক নম্বর লাইনে আসার নির্দেশনা ঠিক করা হয়। দোলনচাঁপা ট্রেনটি হুইসেল দিতে দিতে দুইনম্বর লুপ লাইন দিয়ে স্টেশনে আসতে থাকে। কিন্তু অবৈধ হঠাৎ মার্কেটের দোকানদারদের ধারণা ওই ট্রেনটি একনম্বর লাইন দিয়ে আসবে। তাই তারা রেল লাইনের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী দোকান পাট সরিয়ে নেয়নি। কিন্তু যখন ট্রেনটি দু’নম্বর লুপ লাইন দিয়ে হুইসেল দিতে দিতে আসতে থাকে তখন দোকানদার এবং ক্রেতারা চিৎকার করে এদিক ওদিক দৌড়ে পালাতে থাকে।

বিপদ আঁচ করতে পেরে ট্রেন চালক দ্রুততার সাথে ট্রেনটি ব্রেক করায় অনেক দোকানের মালামাল নষ্ট হলেও কোন প্রাণ হানি ঘটেনি। সময়মত ট্রেনটি থামাতে ব্যর্থ হলে অপ্রস্তত বহু সংখ্যক মানুষ হতাহত হয়ে রেল ট্রাজেডির নতুন তৈরী হত।
স্টেশন মাস্টার আরও জানান, গত ১৯ নভেম্বর লালমনি হাট থেকে বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্টেশনের পাশে একটি মার্কেটের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় হঠাৎ মার্কেট দুইদিন বন্ধ থাকে। পরে ২২ নভেম্বর প্রভাবশালী একটি মহলের ইন্ধনে আবারও হঠাৎ মার্কেটের দোকানদাররা তাদের দোকান বসায়। এ বিষয়ে উর্দ্ধত্তন কর্মকর্তাদের কাছে রেল স্টেশন সীমানার মধ্যে এবং লাইনের উপর অবৈধ দোকান উচ্ছেদের জন্য ২৩ নভেম্বর চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রেল লাইন থেকে দুই পাশের ১০ ফুট করে জায়গা ১৪৪ ধারা সবসময়ের জন্য জারী থাকলেও এসব কেউ মানছে না। বগুড়া জিআরপি ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সেপেক্টর কায়কোবাদ জানান, ঘটনাটি জানার পরে সেখানে আমরা দ্রুত যাই। কিন্তু কোন আহত কিংবা নিহত ব্যক্তির খোঁজ পাইনি। তবে আশেপাশের লোকজন জানিয়েছে চারপাঁচজন ক্রেতা আহত হয়েছেন।

বগুড়া ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার বজলুর রশিদ জানান, দুইজন আহত হয়েছে। এরা হলেন, গাবতলী উপজেলার রুমি খাতুন (৩০) এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলার মানিক (৫৫)। তাদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রেললাইনের পাশের স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অবৈধ ‘হঠাৎ মার্কেটে’ গত ৫/৬ বছরে প্রায় ৭/৮জন ট্রেনে কেটে মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে মার্কেটে আসা ক্রেতা এবং দোকানদার রয়েছে।

গতকাল বুধবার যদি ট্রেনের চালক দ্রুত ব্রেক করে ট্রেনটি না থামাতো, তাহলে কয়েকশ লোকের প্রাণহানি ঘটনা ঘটতো। গরীব ও নি¤œবিত্ত শ্রেণির মানুষের এই পছন্দের অবৈধ মার্কেট থেকে রেলস্টেশন পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ গোষ্ঠির বিপুল অর্থের যোগান আসে বলে কখনই এই মার্কেটটি স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাঁচল

৩০ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ