নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : শেষ পর্যন্ত বাঁচলেন না দেশের প্রতিভাবান নারী সাইক্লিস্ট পারুল আক্তার। গলায় ফাঁস দেয়ার পর ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত প্রায় আড়াইটার সময় সাভারের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন পারুল (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী ও চার বছরের এক কন্যা সন্তান রেখে যান। গতকাল তার লাশ গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার গঙ্গারামপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই পারুলের লাশ দাফন করা হয়। তার আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনো জানা না গেলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মূলত দাম্পত্য কলহের জের ধরেই নাকি তিনি এ পথ বেছে নেন।
পারুল আক্তার ২০০২ সালে মাগুরা জেলার হয়ে প্রথমবার সাইক্লিংয়ে অংশ নেন। প্রথমবার খেলতে এসেই সাইক্লিং সংশ্লিষ্টদের নজর কাড়েন গঙ্গারামপুরের মেয়েটি। এরপর ২০০৭ সালে বিজেএমসির কোচ আবদুল কুদ্দুসের উৎসাহ ও সহযোগিতায় এই অফিসপাড়ার দলটিতেই যোগ দেন। এখানেই শুরু হয় পারুলের পেশাদারিত্ব। টানা দু’বছর বিজেএমসির হয়ে সাইক্লিং করার পর ২০০৯ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ আনসারে। এই খেলায় আসার পর দেশের সাইক্লিংয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন পারুল। দেশ জয় করে বিদেশ থেকেও সুনাম বয়ে আনেন। ২০১৩ সালে অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে পদক জেতার পরের বছরই দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ট্র্যাক চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জপদক জয় করে দেশের সম্মান বাড়ান আনসারের এই সাইক্লিস্ট।
কিন্তু হঠাৎ করেই কি এমন হলো, যে কারণে তাকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে নেই। এ প্রসঙ্গে কোচ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমিই পারুলকে সাইক্লিং খেলায় নিয়ে আসি। অসম্ভব মেধাবী একজন সাইক্লিস্ট ছিলেন তিনি। কিন্তু কেন যে পারুল এমন একটি ঘটনা ঘটাতে গেলেন, তা আমার মাথায় আসছে না। আজ (গতকাল) সকালে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি ছুটে যাই সাভারের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে। খুব কষ্ট হচ্ছে মেয়েটার জন্য। ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েও জীবনকে জয় করতে পারলেন না তিনি।’ বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ খান বাবুল বলেন, ‘মেয়েটার মৃত্যুও খবর পেয়ে খুব কষ্ট লাগছে। তিন-চারদিন আগেই শুনেছিলাম হাসপাতালে রয়েছে সে। যদিও পারুলকে দেখতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি আমার। তার মৃত্যুতে আমরা একজন প্রতিভাবান সাইক্লিস্টকে হারালাম।’
পারুলের সতীর্থ এবং বিজেএমসির সাইক্লিস্ট সোনিয়া ইয়াসমিন অভি বলেন, ‘আমি নিজেও বুঝতে পারছি না কি এমন ঘটলো তার জীবনে যে, পারুলকে গলায় ফাঁস দিতে হলো। একজন সতীর্থ হিসেবে সে ছিল অসাধারণ।’ এদিকে পারুলের মৃত্যুর কারণ জানতে ফোন করেও পাওয়া যায়নি আনসারের ক্রীড়া অফিসার রায়হানকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।