Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীলঙ্কায় মুসলিম ভোটারদের বাসে বন্দুক হামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:৪৮ পিএম

শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটারদের বহনকারী একাধিক বাসে বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। আজ শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলাকালে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।

রাজধানী কলম্বোর ২৪০ কিলোমিটার উত্তরে তান্তিরিমালের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বন্দুকধারীরা গুলি ছোড়ে এবং পাথরও ছোড়ে। দুটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু আমরা এখনও হতাহতের কোনও খবর পাইনি।

শ্রীলঙ্কায় গত এপ্রিল মাসে ইস্টার সানডে-তে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালানো হয়। আর ওই ঘটনার পর আজ শনিবার ভোট হচ্ছে দেশটিতে। আর সেই ভোটের দিনই ভোটারদের বাসে বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। ওই বাসে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোটাররা ছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ শনিবার সকালে ওই ঘটনা কলম্বোর তান্ত্রিমেল এলাকায় ঘটেছে। হামলাকারী রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ১০০টি বাসের কনভয়ে আটকানোর চেষ্টা করে। এরপরই গুলি চালাতে থাকে। দুটি বাসে একাধিক গুলি লেগেছে যদিও কেউ জখম হননি।

পুলিশ বলছে, উপকূলীয় শহর পুত্তালাম থেকে পার্শ্ববর্তী মানার জেলায় যাচ্ছিলেন ওই মুসলিম ভোটাররা। তারা মানার জেলার ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত।
পরে পুলিশের টিম গিয়ে রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে দেয় এবং বাসের যাত্রীদের ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। তামিল অধ্যুষিত জাফনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটলো। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ নির্বাচনকে সামনের রেখে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে সেনাবাহিনী।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে পুলিশ জানিয়েছে, সেনাবাহিনী অবৈধভাবে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এর ফলে বাসিন্দারা ভোটকেন্দ্রে অবাধে যাতায়াত করার ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়বেন।

পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, একটি জাতীয় নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এমন খবরে, পুলিশ তা সরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার ব্যাপারে স্থানীয় সেনা কমান্ডারদেরও সতর্ক করে দিয়েছে পুলিশ।

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা শিরিসেনা এবার ভোটে লড়ছেন না। ফলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-এর সাজিথ প্রেমাদাসা এবং বিরোধী দল শ্রীলঙ্কা পিপলস ফ্রন্ট (এসএলপিপি)-এর গোটাবায়া রাজাপক্ষের মধ্যে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রানাসিংহ প্রেমাদাসার ছেলে। সংখ্যালঘু তামিল ও মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে তিনি জনপ্রিয়।

উল্লেখ্য, আজ শনিবার সকাল থেকে শ্রীলঙ্কার অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোট ৩৫ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) সাজিথ প্রেমাদাসা এবং বিরোধী দল শ্রীলঙ্কা পিপলস ফ্রন্টের (এসএলপিপি) গোটাবায়া রাজাপক্ষের মধ্যে।
বিরোধী দলের প্রার্থী গোটাবায়ে রাজাপক্ষে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের ভাই। ভাইয়ের আমলে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন গোটাবায়ে রাজাপক্ষে। ২০০৯ সালে সংখ্যালঘু তামিল ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ প্রশমনে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

এই নির্বাচনি প্রচার শেষ হয়েছে বুধবার। শেষ মুহূর্তের প্রচারে নানা প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন প্রার্থীরা। জোর দিয়েছেন দেশের উন্নয়ন ও শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর। দেশের সুরক্ষা নিয়েও সরব হয়েছে দু-পক্ষই। যারমধ্যে জ্বলন্ত উদাহরণ সাম্প্রতিককালে চার্চে হামলা। যা নিয়ে উদ্বেগ এখনও কমেনি এশিয়ার এই দ্বীপ রাষ্ট্রে। এখন দেখার ভোটবাক্সে তা কতটা ফলপ্রসূ হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ