Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কচু শাক

মোঃ জহিরুল আলম শাহীন | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

কচু শাক বাংলাদেশের অতি পরিচিত একটি শাক। গ্রাম বাংলার প্রতিটি বাড়ির আশে পাশে পতিত জমিতে ডোবাতে এবং রাস্তার পাশে প্রচুর কচু শাক জন্মে। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে অনেকেই কচু শাক বা কচু চাষ করে। কচু গাছের লম্বা ডগা, পাতা, শাক হিসেবে খাওয়া হয়। আবার কচুর মূল মুকি বা মোড়া মাছ, মাংস, শুটকির সাথে তরকারি করে খাওয়া হয়। আবার কচু গাছের মূল থেকে যে লম্বা আকৃতির লতি বের হয় তাও খাওয়া যায়। মোট কথা কচু গাছের সমগ্র অংশই খাদ্য হিসেবে খাওয়া যায় যা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং মানব দেহের রোগ প্রতিরোধক। এখানে কচুশাকের গুরুত্বই তুলে ধরা হলো। কচু শাকের রং দুই রকম। একটি সবুজ রঙের আরেকটি কালো রঙের। পুষ্টির দিকে দিয়ে কালো কচু শাকের পুষ্টিমান বেশী। 

কচু শাকের বৈজ্ঞানিক নাম ঃ অষড়পধংরধ রহফরপধ উদি¢দ জগতের অৎধপবধব গোত্রের বীরুৎ জাতীয় উদি¢দ। কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, আয়রণ ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাছাড়া মানব দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণও পাওয়া যায়। অতি অনাদরে অবহেলায় বড় হওয়া এ সবজিটি মানব শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার।
রাসায়নিক উপাদানঃ পুষ্টিবিদদের মতে কচু গাছের পাতা ও মূলে প্রচুর পরিমাণে সূচাকর দ্রবণীয় অক্সালেটের দানা থাকে। মূলের রাইজোম ছাড়া সকল অংশে ট্রিগলো চিনিন, আইসোট্রিগলোচিনিন, বিটা-গ্লুকোসাইড এবং হাইড্রোলাইজিং এনজাইম থাকে।
পুষ্টি উপাদানঃ পুষ্টিবিদদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী কচু শাকে পুষ্টি উপাদান:-
কালো কচু শাকে ঃ খাদ্য শক্তি ৭৭ কিলোক্যালরী, আমিষ ৬.৮ গ্রাম, চর্বি ২ গ্রাম, শর্করা ৮.১ গ্রাম, ক্যারোটিন ১২০০০ মাইক্রোগ্রাম। যা হতে ভিটামিন এ রুপান্তরিত হয়। ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন) ০.০৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ রাইবোফ্লাবিন ০.৪৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬৩ মিলিগ্রাম, লৌহ (আয়রণ) ৩৮.৭ মিলিগ্রাম।
সবুজ কচু শাকে ঃ খাদ্য শক্তি ৫৬ কিলোক্যালরি, আমিষ ৩.৯ গ্রাম, চর্বি ১.৫ গ্রাম, শর্করা ৬.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২২৭ মিলিগ্রাম, আয়রণ ১০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ ১০ হাজার ২৭৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.২২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.২৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১২ মিলিগ্রাম, তাছাড়া আরো সামান্য পরিমাণে অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে।
উপকারিতা ঃ মানবদেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কচু শাকের ভূমিকা খুবই বেশি। অতি সহজেই এ শাক পাওয়া যায়। শুধু আমাদের প্রয়োজন এ সবজি সম্পর্কে জানা ও খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা।
* কচু শাকে ভিটামিন এ থাকে তাই চোখের দৃষ্টি শক্তি প্রখর রাখতে ভালো কাজ করে। বিশেষ করে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। এ ভিটামিন দেখতে সাহায্য করে। রোড পমিন নামক এক ধরণের দর্শণ সংক্রান্ত রঞ্জক পদার্থ তৈরী করে। যা অন্ধকারে দেখতে সাহায্য করে।
শিক্ষক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক
ফুলসাইন্দ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
গোলাপগঞ্জ, সিলেট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন