নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আগের দিন শেষ হয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয় স্তরের দুই ম্যাচ। সেদিনই রোমাঞ্চের আভাস দিয়ে রেখেছিল প্রথম স্তরের ম্যাচ দুটি। শেষ দিনে সেই রোমাঞ্চ গিয়ে ঠেকেছে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে; তাতে নার্ভ ধরে রেখে, রেকর্ড গড়া জয় দিয়েই শীর্ষে উঠেছে খুলনা। রংপুরকে ১ উইকেটে হারিয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন দলটি। চলতি আসরে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়। চার ম্যাচে ২৬.৪৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে প্রথম স্তরের শীর্ষে। এখনও জয়হীন রংপুর ৮.২২ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে অবস্থান করছে।
তবে গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ জুটির পথচলা যখন শুরু, জয়ের জন্য খুলনার তখনও প্রয়োজন ১৬ রান। বিপরীতে, একটি মাত্র উইকেট তুলে নিতে পারলেই জিতে যায় রংপুর বিভাগ। এরপর প্রতিটি পদক্ষেপই জাগাল রোমাঞ্চ। ছড়াল উত্তেজনা। মইনুল হোসেন ও আব্দুল হালিম পথটুকু পাড়ি দিলেন দারুণ দৃঢ়তায়। ৩২ বলে অপরাজিত ১৬ রানের ইনিংস খেলে খুলনা বিভাগকে নাটকীয় জয় এনে দিলেন আটে নামা মইনুল। ম্যাচ জেতানো শেষ জুটিতে বড় কৃতিত্ব আছে শেষ ব্যাটসম্যান হালিমেরও। নিজের প্রথম ১৯ বলে রান করতে না পারলেও উইকেট আগলে রেখে তিনি সঙ্গ দিয়েছেন মইনুলকে। পরে দলকে জয় এনে দেওয়া দুটি রান এসেছে হালিমের ব্যাট থেকেই।
শেষের নায়ক এই দুজন হলেও ম্যাচের নায়ক আছে আরও। ৬০০ উইকেট ছোঁয়ার ম্যাচে আব্দুর রাজ্জাক নিয়েছেন ১২ উইকেট। তবে ম্যাচ সেরার লড়াইয়ে অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন মেহেদি। প্রথম ইনিংসে আটে নেমে অসাধারণ সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে মহামূল্য ৫৬, সঙ্গে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট, পুরস্কারটি তারই প্রাপ্য ছিল সবচেয়ে বেশি।
রুদ্ধশ্বাস এই জয়ে খুলনা গড়ল দেশের ক্রিকেটে নতুন নজির। এই প্রথম ১ উইকেটের জয় দেখল বাংলাদেশের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। এর আগে ২ উইকেটের জয় ছিল চারটি। দুটি ছিল ঢাকা বিভাগের, খুলনা ও বরিশালের একটি করে।
এদিকে কক্সবাজারে হওয়া প্রথম শ্রেণীর অপর ম্যাচটি ছিল জাতীয় দলের পরীক্ষাগার। আর তাতে বেশ ভালোভাবেই উৎরে গেছেন সাইফ হাসান। তবে এই ব্যাটসম্যান দ্যুতি ছড়িয়েছেন বল হাতে! ভারত সফরের টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন ব্যাটিং সামর্থ্য দিয়ে। তবে প্রয়োজন হলে তার অফস্পিনেও যে ভরসা রাখা যায়, সেই বার্তাই এদিন দিয়ে রাখলেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। যাতে রাজশাহীকে ইনিংস ও চার রানে হারিয়েছে ঢাকা। প্রথম ইনিংসে ২৩০ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪১ রানে গুটিয়ে গেছে রাজশাহী। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফ ও নাজমুল ইসলাম অপু।
নিজেদের একমাত্র ইনিংসে তিন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ৪৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল ঢাকা। ৩ উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে মঙ্গলবার শেষদিনের খেলা শুরু করেছিল রাজশাহী। আগের দিন ৪১ রানে অপরাজিত থাকা জুনায়েদ সিদ্দিক এদিন আর কোন রান যোগ না করেই ফেরেন নাজমুলের বলে। তার ১৩৮ বলের ইনিংসে ছিল ৫ চার। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে অধিনায়ক ফরহাদ হোসেনের জুটিতে এরপর যোগ হয় ৫০ রান। ২৮ রান করে ফরহাদ ফেরেন বাঁহাতি পেসার সালাউদ্দিন শাকিলের বলে। লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগে শান্তর উইকেটও হারায় রাজশাহী। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ফিফটি ছাড়িয়ে আর বেশিদূর যেতে পারেননি এই তরুণ। ১২৫ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রান করে বোল্ড হন তাইবুর রহমানের বলে।
মুক্তার আলিকে সঙ্গী করে এরপর দলের ইনিংস টেনে নেন সাব্বির রহমান। তবে তিনিও ফেরেন ফিফটির পরপরই। ১০২ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৫৮ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান সাইফ। রাজশাহীর শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মুক্তার (১১) ও ফরহাদ রেজার (৬) উইকেটও এরপর পেয়েছেন তিনি। আর ১৭ রান করা সানজামুলকে আউট করে দলকে জয় এনে দেন শুভাগত হোম চৌধুরী। দুই ইনিংস মিলিয়ে চার উইকেট ও একমাত্র ইনিংসে করা সেঞ্চুরিতে ম্যাচের সেরা শুভাগত।
প্রথম স্তরের পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে আগামী শনিবার ঢাকার প্রতিপক্ষ রংপুর। রাজশাহী খেলবে খুলনার বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর-খুলনা, মিরপুর
রংপুর : ২২৪ ও ২য় ইনিংস : ২১১। খুলনা : ২৩৩ ও ২য় ইনিংস : ৬২.৪ ওভারে ২০৩/৯ (লক্ষ্য ২০৩, আগের দিন ১৩০/৫) (মেহেদি ৫৬, জিয়াউর ৫৩, মইনুল ১৬*, হালিম ২*; মুকিদুল ১/৪৩, সোহরাওয়ার্দী ৬/৫৫, মাহমুদুল ২/১৩)। ফল : ১ উইকেটে জয়ী খুলনা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মেহেদি হাসান (খুলনা)।
রাজশাহী-ঢাকা, কক্সবাজার
রাজশাহী : ২৩০ ও ২য় ইনিংস : ৯৭.২ ওভারে ২৪১ (আগের দিন ৭৭/৩) (জুনায়েদ ৪১,শান্ত ৫১, ফরহাদ ২৮, সাব্বির ৫৮; শাকিল ২/৪৫, শুভাগত ১/৫০, নাজমুল ৩/৫৮, তাইবুর ১/২৯, সাইফ ৩/১৫)। ঢাকা ১ম ইনিংস : ৪৭৫/৭ (ডি.)। ফল : ইনিংস ও ৪ রানে জয়ী ঢাকা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : শুভাগত হোম (ঢাকা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।