বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের বড় একটি অংশ কাজ করেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। কিন্তু শ্রমিক ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও সৌদি আরব এ বছর শীর্ষে রয়েছে। এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কারণে মোট ৩৫ হাজার শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি ফেরত এসেছে সৌদি আরব থেকে।
এ অবস্থায় গত দুইদিনে দেশটি থেকে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন ৩৬০ জন। বৈধ কাগজপত্র ও আকামা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরত দিচ্ছে সৌদি। গত শুক্রবার ২০০ জন এবং পরদিন শনিবার ১৬০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তবে ফেরত আসা শ্রমিকরা বলছেন, তাদের অনেকেরই আকামা বা কাজের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। এ বিষয়ে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তারা চিন্তিত এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে তারা কথা বলছেন।
এদিকে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংস্থা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় কেবল অক্টোবর মাসেই ৮০৪ জন শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছেন।
সিরাজগঞ্জের মো. শহীদুল ইসলাম এ বছরের জানুয়ারিতে জেদ্দায় একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে নিয়োগপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। এখনও তার ভিসার মেয়াদ আছে আরও তিন মাস।
তিনি বলেন, আমি মার্কেটে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে বের হওয়ার পরই পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে। সাতদিন সেখানকার জেলে থাকার পর দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। কোনো কথা শোনেনি। কিন্তু আমার আকামার মেয়াদ আছে ২০২০ সালের জানুয়ারির ৩০ তারিখ পর্যন্ত।
শুক্রবার ফেরত আসা চট্টগ্রামের আব্দুল্লাহ আল নোমানেরও কাজের বৈধ অনুমোদন বা আকামা শেষ হতে আরও কয়েক মাস বাকি।
তবে তার মা ফেরদৌস আরা বেগম বলছেন, আমার ছেলের আকামার মেয়াদ শেষ হতে সময় বাকি আছে। কিন্তু তার মালিক কাগজপত্র বৈধ করে দেয়ার কথা বলে ঘুরাচ্ছে, করে দিচ্ছে না। এদিকে ছেলে হঠাৎ করে গ্রেফতার হয়ে চারদিন জেল খেটে দেশে ফেরত আসছে, কিছু নিয়া আসতে পারে নাই।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক বলছে, ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ১৮ হাজার শ্রমিক দেশে ফিরেছেন, এদের মধ্যে এক হাজারের বেশি নারী শ্রমিকও রয়েছেন।
এসব বিষয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেন, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, তারা যেসব কোম্পানিতে কাজ করতেন সেসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দূতাবাসকে জানিয়েছে- এদের অনেকে আকামার আইন ভেঙেছেন, অর্থাৎ এক প্রতিষ্ঠানে কাজের অনুমতিপত্র নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। আবার কেউ নিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন। কিন্তু এর আগে আমরা বেশ কয়েকবারই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখেছি, সৌদি আরবের আইনে পরিষ্কার করে বলা আছে- সৌদি আরবে যে ভিসাতে আসবেন ঠিক সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিজের কাজের বাইরে অন্য জায়গায় কাজ করছে বা অবস্থান করছে। সেসব তারা প্রমাণসহ আমাদের দেখিয়েছে।
এদিকে ফেরত আসা শ্রমিকদের কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, তাদের যে কাজের কথা বলে নেয়া হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি কাজ করানো হতো। কারও অভিযোগ তাদের নিয়মিত বেতন দেয়া হতো না।
শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়নের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবের শ্রম আইন খুবই শক্ত, নিয়োগদাতা এবং কর্মী উভয়ের জন্যই। ধরুন, নির্ধারিত সময়ের বাইরে যদি কাজ করানো হয়, সে জন্য আইন আছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা পদক্ষেপ নেই, লেবার কোর্টে যাই। তাদের ফাইন (জরিমানা) করা হয়, এবং ওদের জেলও হয়। সমস্যা হলে আমাদের জানাতে হবে, কিন্তু তা না করে এক কোম্পানি ছেড়ে অন্য কোম্পানিতে যাওয়াটা তো পুরোপুরি বেআইনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।