Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

ছাত্রীসহ শিকার ৩

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

এবার বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের উঠেছে বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ঢাকায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শেরপুরে এক পুলিশ পরিদর্শক তালাক দেয়ার পরও তা গোপন রেখে স্ত্রীর সাথে বসবাস করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নওগাঁয় প্রাইভেট পড়ানোর সময় স্কুলছাত্রীকে ও মৌলভীবাজারে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঢাকা : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে বরিশাল বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে এক তরুনীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দায়েরকৃত মামলা নম্বর-৪৬।

ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান জানান, গোলাম ফারুক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবে ফারুকের বাড়ি বানারীপাড়া কি-না বা তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান কি-না তা এখনও নিশ্চিত নই। কারণ এ ধরনের তথ্য মামলার কপিতে নেই। আসামির নাম ছাড়া বিস্তারিত পরিচয়ও নেই। মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। মামলার তদন্তের স্বার্থে ভুক্তভোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিকটিমকে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রিয়াজ আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। বাদীর সাথে যোগাযোগ করে আসামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। আসামি বরিশাল বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম ফারুক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মামলায় ওই তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভনে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন গোলাম ফারুক। স¤প্রতি তরুণী বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।

শেরপুর : সরকারী কর্মকর্তা স্ত্রীকে তালাক দিয়েও তা গোপন রেখে প্রতারণামূলকভাবে দীর্ঘদিন মেলামেশার ঘটনায় শেরপুরে এনামুল হক (৩৯) নামে এক পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা দায়ের করেন শহরের পশ্চিম শেরী এলাকার প্রতারিত তরুণী গৃহবধূ (৩৬)। মামলায় এনামুল হকের ছোট ভাই ও প্রথম স্ত্রী সাদিয়া ইসলাম মিমিকে (৩৩) সহযোগী আসামি করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলহাজ মো. আখতারুজ্জামান ওই অভিযোগ গ্রহণ করে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত প‚র্বক ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাকে (সিনিয়র সহকারী জজ) নির্দেশ দেন। এনামুল হক বর্তমানে রাজবাড়ীতে সিআইডি পরিদর্শক এবং প্রতারিত গৃহবধূ বাহ্মণবাড়িয়ার সড়াইলে এলজিইডিতে প্রশিক্ষণ সম্বয়নকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

জানা যায়, শেরপুর শহরের পশ্চিম শেরী মহল্লার অধিবাসী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ কল্যাণ বিভাগে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্নকারী ওই গৃহবধূর সঙ্গে ২০১৬ সালের দিকে পরিচয় ও সম্পর্কের সূত্রে মৌলবী দ্বারা গোপনে বিয়ে হয় পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক জামালপুর সদর উপজেলার গনেশপুর এলাকার অধিবাসী এনামুল হকের। এরপর ওই গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সামাজিক চাপে গত বছরের ৩১ মে তাদের বিয়েটি রেজিস্ট্রি করা হয়। এক পর্যায়ে তরুণী জানতে পারেন এনামুলের স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও প্রতারণাম‚লকভাবে তা গোপন রেখে তাকে বিয়ে করা হয়েছে। এরপরই তাদের দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা নির্যাতনের দিকে গড়ালে নষ্ট হয় তরুণী গৃহবধূর পেটের ৪ মাসের সন্তান।
এরপরও নিজের ভবিষ্যত চিন্তায় গৃহবধূ এনামুল হকের সঙ্গে সম্পর্ক বহাল রাখতে প্রায় ১২ লাখ টাকায় গৃহবধূর পিতার বাড়ির পাশে একখন্ড জায়গা কিনে দিলে এনামুল কৌশলে তা নিজের নামে লিখে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে গৃহবধূর উপর বেড়ে যায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন।

ফলে ওই গৃহবধূ বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ১৬ জুলাই শেরপুরের আমলী আদালতে এনামুল হকের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১৩ অক্টোবর এনামুল হক আমলী আদালতে হাজির হয়ে দাবি করেন যে, ওই গৃহবধূকে চলতি বছরের ১১ মার্চ তালাক প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু গৃহবধূর নামে নোটিস রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠানোর তারিখ দেখা যায় ১১ জুন। ফলে ১১ মার্চ থেকে যৌতুকের দাবিতে নিজ বাড়ি থেকে ৭ জুন তাড়িয়ে দেয়ার সময়কাল পর্যন্ত তালাকের বিষয়টি এনামুল গোপন রেখে ওই গৃহবধূর সঙ্গে প্রতারণাম‚লকভাবে মেলামেশা করেছেন। প্রতারণার শিকার গৃহবধূ ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপযুক্ত শান্তি দাবি করে বলেন, এনামুল হক এতটাই প্রতারক যে, ১০ লাখ টাকা মোহরানায় আমাদের বিয়ে হলেও তার নির্যাতনের পর নকল উঠিয়ে জানতে পেরেছি তাতে ১০ টাকা উঠানো হয়েছে।

মান্দা (নওগাঁ) : নওগাঁর মান্দায় নবম শ্রেণির (১৪) এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছোট চকচম্পক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমিনুল ইসলামকে অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার ৬ দিন পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে জানা গেছে।
ছোট চকচম্পক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমিনুল ইসলামের ছাত্রী কেলেঙ্কারীর ঘটনাটি এলাকার সবমহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যানেজিং কমিটির সভায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, থানায় মামলা দায়েরের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও ধর্ষক আমিনুল ইসলামকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। শিক্ষক আমিনুল ইসলাম প্রভাবশালী হওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারটি। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মান্দা থানার এসআই আমিরুল ইসলাম বলেন, আসামিকে আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযুক্ত শিক্ষক আমিনুল ইসলাম উপজেলার কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের ছোট চকচম্পক গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে এবং ছোট চকচম্পক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) : ভাটেরা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের হাতে আটক সানু মিয়া (৩৫) উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সোনা মিয়া ওরফে মেলেটারির ছেলে। আরেক অভিযুক্ত আনিছ মিয়া (৩২) দক্ষিণভাগ গ্রামের সোনা মিয়া মুহুরির ছেলে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ওই ছাত্রী বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। পথে আনিছ মিয়া ও সানু মিয়া তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে পাশের রাবার বাগানে ধর্ষণ করেন। ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আনিস ও সানু পালিয়ে যান। কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, নির্যাতিতা স্কুলছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • Abdul Mannan ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
    ধিক্কার জানানোর মতো কোনো ভাষাই খুঁজে পাচ্ছি না, তাই সমস্ত দেশবাসীর কাছে একটি আকুল আবেদন এই যে আপনারা এই বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দিন এবং রুখে দারান,প্রকৃত দোষীদের পৃথিবী কাঁপানো শাস্তি প্রদান করা হোক এটাই কামনা
    Total Reply(0) Reply
  • Asish Mondal ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
    এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি,
    Total Reply(0) Reply
  • MD Rasel Sk ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
    ওরে জনসম্মুখে ফাসি দেওয়া হোক, তাতে করে ওর মত এই রকম কাজ আর কেউ করতে সাহস পাবেনা,সরকারের কাছে আমাদের বিশেষ অনুরোধ, স্বাধীন দেশে ধর্ষকে ঠাই নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Kabir Humayun ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ,তাহলেই মহামারী আকার থেকে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কোন দেশ ই এটা চিরতরে বন্ধ করতে পারে নাই হয়তোবা সম্ভব ও নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • শফিক রহমান ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    কর্মক্ষেত্রে, পরিবহনে, স্কুল, মাদ্রাসায় এমন কি কোচিং সেন্টারেও নারীর শীলতাহানী করা হচ্ছে। ধর্ষণের পর হত্যাও করা হচ্ছে। এ সকল ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ অভিযোগ নিতে টালবাহানা করে। অন্যদিকে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সালিশের নামে অভিযুক্তকে রক্ষা করার চেষ্টা করে।
    Total Reply(0) Reply
  • কাবাতুল্লাহ ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    দেশে প্রতিদিনই এমন বর্বরতার ঘটনা ঘটছে। আল্লাহ তায়ালা কি আমাদের ‍মুক্তি দেবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ