গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ক্যাসিনো সম্রাট খ্যাত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। সঙ্গে তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র্যাব ওই দিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্ব একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। এদিন নিজ কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তার ছয় মাসের জেল দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এর পর সম্রাটকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের প্রথম দিনেই সম্রাটকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার মামলা দুটিও র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (এএসপি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সম্রাটের অস্ত্র ও মাদক মামলা দুটি তদন্ত করবে র্যাব।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন জানান, ক্যাসিনো গডফাদার সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলা তদন্ত করছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে মামলা দুটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ কারণে রিমান্ড মঞ্জুরের পর সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে ডিবি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়- ক্যাসিনো বাণিজ্য, অবৈধ মার্কেট, দোকান, ফুটপাত, মাদক ব্যবসার কমিশনসহ বিভিন্ন খাত থেকে উপার্জিত টাকা কোথায় রাখা হয়েছে?
এর আগে সম্রাটের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৫ অক্টোবর রমনা থানায় দায়ের করা মাদক ও অস্ত্র মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই সঙ্গে মাদক মামলায় যুবলীগের এই শাখার বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেয়া হয়েছে। এর আগে সকাল পৌনে ১১টার দিকে সম্রাটকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৯ অক্টোবর সম্রাটের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থ হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তাই রিমান্ড শুনানির জন্য সেদিন আদালত মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
এদিকে ওই দিনই এনামুলক হক আরমানকেও মাদক মালায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকেও মঙ্গলবার কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
প্রসঙ্গত গত ৭ অক্টোবর (সোমবার) সম্রাটের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। উভয় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল ও পল্টনসহ রাজধানীতে ১০টি ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা ছিল সম্রাটের। সবার কাছে সে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি, দলীয় পদের অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতো। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করতো তার ক্যাডাররা। সম্রাটের কার্যালয় থেকে র্যাব অবৈধ অস্ত্র, মাদকসহ নির্যাতন করার জন্য ইলেকট্রিক শকড দেওয়ার মেশিন উদ্ধার করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাবের আড়ালে ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। এর দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতা জিকে শামীমকে। অভিযানের প্রথম দিন থেকেই আলোচনায় আসে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নাম। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অন্যদের সঙ্গে সম্রাটেরও দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।