Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্দি ক্যাসিনো সম্রাট হাসপাতালেই আছেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

গ্রেফতারের পর থেকে ক্যাসিনো সম্রাট কখনো বুকে ব্যথা, কখনো হার্টের সমস্যা- এমন সব সমস্যা নিয়ে কারাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্রেফতারের পর কিছু দিন কারাগারে, কিছু দিন কারা হাসপাতালে, মাস খানেক পর বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে, এরপর চার মাস বিরতি দিয়ে ফের বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে। ওই চার মাসেও কারা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সবমিলিয়ে বন্দিত্বের পুরো সময়টাই হাসপাতালে ক্যাসিনোকান্ডসহ কয়েক মামলার আসামি সম্রাট। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর গভীর রাতে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এর পরেই তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেই হাসপাতালের সুবিধা নিচ্ছেন সম্রাট।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সম্রাট খুব অসুস্থ। তিনি সিসিইউতে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে কেমন আছে সেটা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ভালো বলতে পারবেন।
কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র ইনকিলাবকে জানায়, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট। তার হার্টের অবস্থা খারাপ। কারাগারে থাকলে যে কোনো সময় যে কিছু হতে পারে। তাই ঝুঁঁকি না নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রেখেছেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রভাব খাটিয়ে ও অর্থের বিনিময়ে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন সম্রাট। তার বিরুদ্ধে করা পাঁচ মামলার মধ্যে অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলা বিচারাধীন। মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অবৈধ সম্পদের মামলাটি তদন্তাধীন। মামলাগুলোর তদন্ত ও বিচারেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারের কিছু দিন পর করা মাদক, অস্ত্র আইন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি সম্রাট। মাসখানেকের মধ্যেই ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর তিনি বুকে ব্যথা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দফায় হাসপাতালের প্রিজন সেলে টানা আট মাস ছিলেন। ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর আবারো একই হাসপাতালে ভর্তি হন সম্রাট। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের ১৩ জুলাই হার্টের সমস্যা গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালের ডি-বøকের সিসিইউ ওয়ার্ডের ২ নম্বর বেডে ভর্তি রাখা হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের বলেন, সম্রাটের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। তার হার্টের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। যে কোনো সময়ে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে। তাই ঝুঁঁকি না নিয়ে তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। কারা হাসপাতালে যতক্ষণ চিকিৎসা সম্ভব ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো বন্দিকে চিকিৎসার জন্য বাইরের কোনো হাসপাতালে পাঠানো হয় না। যখন বড় ধরনের সমস্যা হয় তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে ক্যাসিনো মামলাগুলোর তদন্তে ও বিচারে সময় অতিবাহিত হয়েছে। করোনা না থাকলে এতদিনে এসব মামলার তদন্ত ও বিচার অনেকটাই গুছিয়ে আনা সম্ভব ছিল বলে মনে করেন তারা। বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা সম্রাটসহ আরো কয়েকজনের তিন মামলার অভিযোগপত্র দিতে সময় নিচ্ছে সিআইডি। তদন্তে সম্রাটের ১৯৫ কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, সম্রাটের যে মামলায় ১৯৫ কোটি টাকা মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে পাচারের তথ্য রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার পর যাচাই বাছাই করে বলা যাবে কত টাকা পাচার হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর গভীর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই গ্রামের জামায়াত নেতা মনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে আটক করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্যাসিনো সম্রাট

৬ অক্টোবর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ