বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাবনায় পুলিশের অভিযানে জঙ্গি গ্রেফতারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।
পাবনায় প্রকাশ্যে ওলামালীগ করলেও গোপনে জামায়াত ও জঙ্গি কার্যক্রমকে পৃষ্টপোষকতা করার অভিযোগে পুলিশ এক মাদরাসা অধ্যক্ষসহ ১৪ জন নারী ছাত্রী সংস্থার সদস্যকে গ্রেফতার করে গত রবিবার রাতে শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকায় বিপুল পরিমান জঙ্গি সংক্রান্ত বইপত্র ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। পাবনা সদর থানার এসআই মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আটককৃতদের সোমবার দুপুরে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহম্মেদ জানান, শহরের মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ৫নং সড়কের ১১৯ নং বাড়িটির মালিক সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের। দুইতলা বাড়ির নীচতলায় জামায়াতের নারী সদস্যদের আস্তানা ছিল। এখান থেকে নারী সদস্যরা মেয়েদেরকে সংগঠিত এবং নাশকতার পরিকল্পনা করতো। এই মর্মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাবনা পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামের নির্দেশে পুলিশ রবিবার রাত সাড়ে ৯ দিকে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বৈঠক করা অবস্থায় জামায়াতের ছাত্রী সংস্থার ১৩ নারী সদস্য এবং বাড়ির মালিক কথিত ওলামলীগ নেতা অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসাইনকে গ্রেফতার করে। ঐ স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক জিহাদি বই, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তথ্য সূত্র মতে, ঐ বাড়ির মালিক সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি দিনে ওলামালীগ করতেন আর রাতে নারী ছাত্রী সংস্থা ও জামায়াতের বিভিন্ন কাজ-কর্ম পরিচালনা করতেন।
ধুলাউরী কামিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন মঙ্গলবার জানান, অধ্যক্ষ যদি জঙ্গিদের আশ্রয়- প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন, তাহলে আইন মোতাবেক তিনি তার বিচার দাবী করেন। তিনি আরও জানান, জামায়াত নেতা পরিচয় গোপন করে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ‘আমাদের নিকট নিজেকে ওলামা লীগ নেতা দাবী করতেন এবং ওলেমালীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
অধ্যক্ষ তার সাথে কোন অপকর্মের সংশ্লিষ্টতা নেই দাবী করে আরো বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জরিফ উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ওই মাদরাসার হাট নিজেদের কব্জায় রেখে কোটি কোটি টাকা বানিজ্য করতেন। গত ৫ বছর ধরে ওই মাদরাসার হাটটি অন্য কাউকে সিডিউল ক্রয় করতে দেন না বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জরিফ আহম্মদ’র সহায়তায় ধুলাউরী মাদরাসায় জামায়াত নেতা আনোয়ার হুসাইন ওলামালীগ হয়ে মুহাদ্দিস পদ থেকে অধ্যক্ষ হন। ধুলাউড়ি হাট নিজেদের দখলে রেখে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন অধ্যক্ষ ও জরিফ চেয়ারম্যান বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা অভিযোগ করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জরিফ আহমদের সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করে ব্যর্থ হওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাবনা জেলা শাখার সেক্রেটারী মোঃ ইকবাল হোসাইন বাড়ির মালিক আনোয়ার হোসাইন তাদের সংগঠনের সাথে জড়িত নয় দাবী করে বলেন, সে ঐ মাদরাসার মুহাদ্দিস ছিলেন পরে ওলামালীগের নেতা হওয়ায় তাকে অধ্যক্ষ করা হয়। তবে আমাদের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থা এদেশে কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয়, তিনি ছাত্রী সংস্থার মেধাবী ছাত্রীদের মুক্তির দাবী করেন।
অপরদিকে, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ (অব.) আব্দুল মতীন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে কোন দলই সঠিক যাচাই বাছাই করে দলীয় সদস্য পদ প্রদান বা নেতা করার রেওয়াজ নেই। একজন জামায়াত নেতা প্রকাশ্যে ওলামা লীগ বললেও তার বাসায় জামায়াত বা জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করা আওয়ামীলীগের জন্যে একটি সংকেত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।