বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ভুয়া ডিবি পুলিশের ছিনতাইয়ের কবলে পড়া যুবককে বাঁচাতে গিয়ে দুই র্যাব সদস্য গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে র্যাবের মামলায় ছিনতাইকারী ধরা না পড়লেও উল্টো ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
রোববার রাতে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ (৩৫) বাদী হয়ে আটক ভুয়া ডিবি পুলিশ ও অজ্ঞাত একজনকে আসামি করে মামলা করেন।
পাশাপাশি সরকারি কাজে বাধা, মারপিট ও আসামি ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে বগুড়া র্যাব-১২-এর পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে এজাহারভুক্ত পাঁচজন ও অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ছিনতাইয়ের কবলে পড়া আব্দুস সামাদের স্ত্রী চামেলি বেগম (৩৮), ছেলে আরিফুল ইসলাম (১৯), একই গ্রামের আবু সাইদের স্ত্রী শেফালি খাতুন (৪০), মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে ফজলুল হক (৬২) এবং আটক ভুয়া ডিবি পুলিশ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খন্দকারটোলা গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে হাসিবুর রহমান (২২)।
শাজাহানপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছিনতাইকারী ধরা না পড়লেও সরকারি কাজে বাধা, মারপিট ও আসামি ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে রোববার বিকেলে উপজেলার রানীরহাট বন্দর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ। এ সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি এসে নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে হঠাৎ করে সামাদের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে তার কাছে থাকা এক লাখ টাকা কেড়ে নেয় ওই ব্যক্তি।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরও দুই ব্যক্তি এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সামাদ মাটিতে পড়ে গেলে দৌড়ে পালাতে শুরু করেন তিন ব্যক্তি।
এ সময় চিৎকার দিয়ে হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় তাদের পেছনে পেছনে ধাওয়া করলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে আহত অবস্থায় আমাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই সময় সাদা পোশাকে এক সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে নন্দিগ্রাম থেকে বগুড়া র্যাব অফিসে যাচ্ছিলেন র্যাব-১২-এর সদস্য মঞ্জু। বয়ড়াদিঘী এলাকার বগুড়া-নাটোর সড়কে হ্যান্ডকাপ পরা এক ব্যক্তিকে দৌড়াতে দেখে মোটরসাইকেল থামিয়ে কারণ জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করে পালাচ্ছে।
ছিনতাইয়ের বিষয়টি শুনে ধাওয়া দিয়ে এক ভুয়া ডিবি পুলিশকে ধরেন মঞ্জু। এরই মধ্যে স্থানীয় একদল নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুয়া ডিবি পুলিশ সন্দেহে মঞ্জু ও তার সহকর্মীকে মারধর শুরু করেন। র্যাবের পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তাদের মারপিট করা হয়। পরে র্যাব অফিসে জানানোর পর টহল র্যাবের সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।