Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৪ বছর জেল খেটে বেরিয়ে ফের ধর্ষণ

কক্সবাজারের শিশুসহ শিকার আরো ৪ আটক ১১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

গাইবান্ধায় তৃষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাস্তান মর্ডান। এ মামলায় ১৪ বছর জেলে খেটেছে সে। কিন্তু তাতেও বোধোদয় হয়নি তার। সাজার মেয়াদ শেষ করে বেরিয়ে এসেই ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে। খুলনায় ফেইসবুকে পরিচয়ের সূত্রে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে মাদরাসাছাত্রী। কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে হোটেলে ডেকে নিয়ে শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় শিশুকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। পাবনায় গভীর রাতে প্রেমিকাকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বগুড়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, মাদারীপুরে কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টায় আসামিসহ বিভিন্ন স্থানে ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

গাইবান্ধা : অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ১৪ বছর জেল খাটার পর বেরিয়ে এসে আবারো ধর্ষণের অভিযোগে মডার্ন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে এই মডার্নকে গাইবান্ধায় আনা হয়। গত শুক্রবার রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে এই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে মর্ডান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। মর্ডান গাইবান্ধার আলোচিত তৃষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি।

গাইবান্ধা থানার পুলিশ জানায়, শহরের মাস্টারপাড়ার ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী প্রতিদিনের মতো স্কুলে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে মেয়েটি ওই এলাকার একটি মসজিদের পেছনে পৌঁছলে বখাটে মর্ডানসহ কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে। তারা তার মুখে কাপড় গুজে মোটরসাইকেলে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে মেয়েটিকে বাদিয়াখালী এলাকার একটি কম্পিউটার দোকানের পেছনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি গোপন রাখার স্বার্থে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয়। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে গাইবান্ধা পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা লিজা উল্লাহ বাদী হয়ে গাইবান্ধা থানায় ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ওই বখাটেকে গাইবান্ধার চাঞ্চল্যকর তৃষা হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ দেয়া দিয়েছিলেন আদালত। পরে প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ১৪ বছর কারাভোগের পর সদ্য জেল থেকে বেড়িয়ে আসে।

খুলনা : ফেইসবুকে পরিচয়ের সূত্রে খুলনা শহরে ঘুরতে গিয়ে একদল যুবকের ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক নবম শ্রেণির মাদরাসাছাত্রী। গতকাল সকাল পর্যন্ত খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন খুলনা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ। কথিত প্রেমিক নিয়ামুলকেও গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ন‚র আলম সিদ্দিকী জানান, ভুক্তভোগী মেয়েটি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে নানা বাড়িতে থেকে এক মাদরাসায় পড়ালেখা করে। তার মা খুলনা নগরে থাকেন। মেয়েটি ফেইসবুকে পরিচয় সূত্রে মোড়েলঞ্জের নিয়ামুল নামের এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মেয়েটি মায়ের কাছে বেড়াতে এসে গত বুধবার নিয়ামুলের সঙ্গে খুলনা শহরের হাদিস পার্কে ঘুরতে যায়।সে সময় মেয়েটির সঙ্গে তার আট বছরের এক খালাত ভাইও ছিল। নিয়ামুল সুকৌশলে তার বন্ধু রিয়াজুল ইসলাম এবং সোহেল রানাসহ ওই কিশোরীকে রূপসা উপজেলার মোছাব্বরপুরে এক নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। ওই রাতে নিয়ামুল কিশোরীকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাসায় ফিরে ঘটনা জানালে গত বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রূপসা থানায় মামলা দায়ের করেন।

কক্সবাজার : কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের একটি আবাসিক হোটেলে ১০ বছর বয়সী এক শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই শিশুকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের ফ্যান্টাসি নামে আবাসিক হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হোটেল থেকে ফ্যান্টাসি হোটেলের তত্বাবধায়ক মো. ইমরান ও রবি আলম ওরফে হাসু নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আজমীর ইলাহী বলেন, কিছু লোক রাতে একজন শিশুকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। বিষয়টি শুনে হোটেল থেকে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।ওই শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, হোটেল ম্যানেজারসহ সেখানকার লোকজন এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে।

ওই শিশুর অভিযোগ, রাস্তা থেকে তাকে কৌশলে ডেকে হোটেলের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণ শেষে আটকে রেখে মুখে কাপড় বেঁধে একটি ড্রামে ঢুকিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে সে চিৎকার করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করেন। চাচা আবুল কাসেম জানান বিকাল ৫টায় বাজারে পান আনতে যায় ওই শিশু। মাগরিবের সময় মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে ইমরান হোসেনের রুম থেকে তাকে উদ্বার করা হয়।

পাবনা : পাবনার সাঁথিয়ায় এক হাইস্কুল ছাত্রী প্রেমিকের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ওই ছাত্রী সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের কেটিএস আয়শা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন মুক্তা উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের মৃত শহীদ আলীর ছেলে। জানা যায়, প্রেমিক মুক্তা প্রেমিকার সাথে প্রতারণা করে অন্য মেয়ের সাথে বিয়ে পাকাপাকি করেছিলো। গত বৃহস্পতিবার তার বিয়ের দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু এর আগেই ওই ছাত্রী মুক্তার বাড়িতে অবস্থান নেয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার সাঁথিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগে জানা যায়, কিছুদিন আগে মনোয়ার হোসেন মুক্তার সাথে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুযোগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ঐ ছাত্রীকে মুক্তা তার বাড়িতে ডেকে নেন। একপর্যায়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মুক্তা। এসময় নির্যাতিত ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় মুক্তা। সাঁথিয়া থানার উপ- পরিদর্শক (এস.আই) আবুল কালাম জানান, ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হবে।

বগুড়া : বগুড়ার শেরপুরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় শুকুর আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি নাটোর জেলার সিংড়া থানার বাসিন্দা। শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, শুক্রবার বিকেলে শেরপুর থানার সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের বাড়ীতে ৮ বছর বয়সী এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শুকুর আলী। এসময় পাড়ার লোকজন তাকে ধরে পুলিশের দেয়।

মাদারীপুর : মাদারীপুর শহরের শান্তিনগর এলাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমান সরদার নামে এক যুবককে শনিবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আমানের বিরুদ্ধে মাদক,ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গত রাত থেকেই আমানকে ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।



 

Show all comments
  • M A Jolal Jolal ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    ফায়ার স্কটে দেওয়া হউক।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ নাদিম হাওলাদার ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
    ওর রক্তে ধর্ষন এর রোগ মিশে গেছে ৪২ বছর জেল খাটলেও এ রোহ সারবেনা, তাই ওকে ফাসি দেয়া হোক
    Total Reply(0) Reply
  • MD Mamun ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
    কুকুরের লেজ কোন দিন সোজা হয়না পুলিশের উচিত একে গুলি করে বিনে ফেলে দেওয়া
    Total Reply(0) Reply
  • Abdus Salam ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    এদের ক্রস ফায়ার দেওয়া উচিৎ কোন বিচার ছাড়াই।
    Total Reply(0) Reply
  • Shakil Shakil ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    ভাই কুকুরের নেজ কখনো ঘী দিয়ে টানলে সোজা হয় না ।ওকে সবার সামনে এমন ভাবে শাস্তি দিতে হবে যা দেখে সারা পৃথিবীর মানুষ যেন ভালো হয়ে যায় ।। ভাই খুব কষ্ট লাগে , নারী জাতি হলো আমাদের মা জাতি ,এই কথা আমাদের সরন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Parvej Hossain ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    ওকে ধরে লাভ কি রাজপথে মাইরা ফেলা হক জনগণের কাছে ছেড়ে দেওয়া হক বিচার করে দিবে
    Total Reply(0) Reply
  • Shafiquzzaman Biswas ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    একটা বুলেটের দাম কি খুব বেশি ? ওর মতো জানোয়ারের বেচে থাকার কোন অধীকার নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Khandaker Rejaur Rahman ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৩৯ এএম says : 0
    ওর লিংগ কেটে ফেলা হোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ