নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গত ক’দিন ধরে যে ‘বিপ টেস্ট’ জ্বরের উত্তাপ ছড়িয়েছিল ক্রিকেটপাড়ায় ঘাম দিয়ে অবশেষে ছেড়েছে তা। তবে নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিন-রাত এক করা অনুশীলন ঠিকই চলছে ক্রিকেটারদের। যে যখনই সময় পেয়েছেন চালিয়ে গেছেন দলগত রানিং, ফিটনেস ট্রেনিং, আর ব্যক্তিগত স্ট্রেচিং। নেটেও ব্যাট হাতে ঘাম ঝড়িয়েছেন কেউ কেউ। তবে তাদের মাঝে আলাদা করে নজর কেড়েছেন দুই ভায়রা ভাই- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। ফিটনেস চ্যালেঞ্জটা যে সিরিয়াসলি নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ ও তার মতো জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা- এটা বেশ পরিস্কার তার এক কথাতেই, ‘রান করতে হবে, প্রচুর রান।’
এবার জাতীয় তারকাদের প্রায় সবাই খেলবেন জাতীয় লিগ, এটাই বড় খবর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততা নেই এখন বাংলাদেশ দলের। নভেম্বরে ভারত সফরে আছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ। সব মিলিয়ে জাতীয় দলের নিয়মিত ক্রিকেটারদের বেশির ভাগই এবার খেলবেন জাতীয় লিগের অন্তত দুটি রাউন্ডে। এমনিতে বরাবরই নানা পর্যায়ে অবহেলিত টুর্নামেন্ট ঘিরে তাই এবার আগ্রহ তুমুল। তবে ¯্রফে খেলার জন্যই খেলা নয়, জাতীয় লিগে জাতীয় তারকাদের চাওয়া আছে কিছু। সেই চাওয়ার সঙ্গে পাওয়াগুলোকে এক বিন্দুতে মেলাতে চেষ্টাও চলছে দেখার মতো। অনুশীলনে তারা ঘাম ঝরাচ্ছেন নিয়মিত। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের নানা প্রান্তে সবাইকে দেখা গেল অনুশীলনে ব্যস্ত সময় কাটাতে।
ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ সবশেষ খেলেছেন গত বছরের এপ্রিলে, বিসিএলে। জাতীয় লিগে সবশেষ খেলেছেন সেই ২০১৫ সালে। তারকারা জাতীয় লিগে খেলতে চান না, এই অভিযোগের তির তার দিকেও ছোটে। মাহমুদউল্লাহ বর্ম বানালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততাকে, ‘দেখুন, বেশির ভাগ সময়ই জাতীয় লিগ যখন হয়, জাতীয় দলের খেলা থাকে। কখনও আবার দেখা যায়, জাতীয় দলের খেলা মাত্রই শেষ হলো। তখন শরীরকে রিকভারি টাইম দিতে হয়। সব মিলিয়েই খেলা হয়ে ওঠে না। কিন্তু আমরা খেলতে চাই না, এটা ঠিক নয়। খেলাই আমাদের কাজ, সুযোগ থাকলে খেলব না কেন?’
এবার সুযোগটা এসেছে অনেক দিন পর, মাহমুদউল্লাহ তাই রোমাঞ্চিত। সামনে ভারত সফর বলেও বেড়ে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের গুরুত্ব। ঢাকা মেট্রোপলিটনের হয়ে খেলার এই সুযোগ কাজে লাগাতে চান ভারত সফরের প্রস্তুতির জন্য, ‘ম্যাচ খেলতে পারাই বড় অনুশীলন। যেটা বলছিলাম, আমি রান করতে চাই প্রচুর। রান করা একটি অভ্যাসের মতো। এখানে রান করলে সেটি জাতীয় দলেও কাজে লাগবে। আত্মবিশ্বাস ভালো থাকবে। রান করার মতোই গুরুত্বপূর্ণ উইকেটে প্রচুর সময় কাটানো। দুটিই করতে চাই আমি। আর চাই বল সিলেকশন আরও ভালো করতে। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে এটি গুরুত্বপূর্ণ হবে। ওদের যা বোলিং শক্তি, বাজে বল মিলবে কদাচিৎ। উইকেটে টিকে থাকা ও শট খেলা বা ছাড়ার সঠিক বল নির্বাচন বড় ব্যাপার হবে। জাতীয় লিগে সেই কাজগুলি ঠিকঠাক করতে চাই এবার।’
টেস্টের প্রস্তুতি যখন, উইকেট ও প্রতিপক্ষের বোলিং শক্তিও চলে আসে আলোচনায়। বোলিংয়ের মান নিয়ে রাতারাতি করার আছে সামান্যই। তবে উইকেট নিয়ে দাবি আছে মাহমুদউল্লাহর, ‘আমি চাই কঠিন উইকেট। ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন। খুব বাজে ব্যাটিং উইকেট অবশ্যই নয়। তবে চাই এমন উইকেট দেওয়া হোক, যেখানে রান করা অনেক কঠিন হবে। তাহলে টেস্টের জন্য ভালো অনুশীলন হবে বলে মনে করি আমি।’
এদিকে নেটে ব্যাটিং অনুশীলনের পাশাপাশি ফিল্ডিং অনুশীলনও মুশফিক করেছেন সময় নিয়ে। জাতীয় লিগে কিপিং না করার সম্ভাবনা আছে, নিজেকে তাই প্রস্তুত রাখছেন ফিল্ডিংয়ের জন্য। বড় দৈর্ঘ্যরে ম্যাচের প্রতি তার অনুরাগ বরাবরেই। তাই আন্তর্জাতিক ব্যস্ততার ফাঁকে সুযোগ পেলে টুকটাক খেলেছেন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণিতে। মাহমুদউল্লাহর মতো তারও সবশেষ ম্যাচ বিসিএলে, গত বছরের এপ্রিলে। তবে জাতীয় লিগ চার বছর আগে নয়, খেলেছিলেন ২০১৭ সালে। তার আগে ২০১৫ সালে জাতীয় লিগে খেলেন চার ম্যাচ। এবার দুটি ম্যাচ অন্তত খেলতে চান। তিনিও বড় করে দেখছেন ম্যাচ অনুশীলনকেই, ‘আমাদের ভাবনায় তো ভারত সফর থাকবেই। যে কোনো পর্যায়েই ম্যাচ খেলার চেয়ে বড় অনুশীলন আর নেই। সেখানে জাতীয় লিগ তো আমাদের প্রধান টুর্নামেন্ট এই ফরম্যাটের জন্য। আশা করি খুব ভালো প্রস্তুতি হবে। ¯্রফে খেলার জন্য খেলে লাভ নেই। রান করলে, উইকেটে সময় কাটালে তবেই এখানে খেলাটা কাজে দেবে। আশা করব, জাতীয় লিগে ভালো খেলে টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারব।’
ভালো প্রস্তুতি চান বলে উইকেট নিয়ে বলার আছে মুশফিকেরও। তিনি আরও নির্দিষ্ট করে বললেন, কেমন উইকেট হওয়া উচিত, ‘জাতীয় লিগে উইকেট তো বরাবরই বড় একটি ইস্যু। অনেক সময়ই দেখা গেছে, উইকেটে ঘাস আছে। কিন্তু ২-১ ঘণ্টা পরই সেই ঘাস মিশে গিয়ে ভালো ব্যাটিং উইকেট হয়ে যায়। আবার দেখা যায়, ঘাস আছে, কিন্তু তলার মাটি নরম। সেখানে পেসারদের চেয়ে সহায়তা পায় স্পিনাররা। পেসারদের কোনোরকমে একটু বোলিং করিয়েই স্পিন আনতে হয়। লাভ বেশি হয় না। ব্যাটিংয়ের দিক থেকেই শুধু নয়, আমি যদি সবদিক থেকে বলি, স্পোর্টিং উইকেট চাই। যেখানে শুরুতে পেসার, পরে স্পিনার, সবার সহায়তা থাকবে। ব্যাটসম্যানদের কাজ সহজ হবে না। তবে টিকে থাকলে রান করতে পারবে। খুব কঠিন নয় কিন্তু এরকম উইকেট বানানো! আর ভারত সফরে আমাদের হয়তো এরকম উইকেটেই খেলতে হবে। তাই উইকেটের ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত জাতীয় লিগে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।