২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ডাবের পানি শুধু শরীরই ঠান্ডা রাখে না যৌন উদ্দীপনাও বাড়ায়। ডাবের পানির অশেষ উপকারীতা। তাই ডাব খান। ডাবের পানিতে কিডনি বাঁচান। কিডনিতে পাথর হওয়া আটকান। বৃক্কে পাথর হয়ে থাকলে তার আকৃতি হ্রাস করে প্রস্রাবের সঙ্গে সেটিকে বের করে দিতে পারে ডাব। কচি ডাবের পানি যৌনাকাঙক্ষা বাড়ায়। নিয়মিত ডাবের পানি খেয়ে গেলে পুরুষাঙ্গের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়। শুধু পুরুষদেরই নয়, বেশি বয়সী যেমন ষাট বা তদূর্ধ্ব মহিলাদের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে, ডাবের পানি যৌনাকাঙক্ষা জাগিয়ে তুলছে। ডাবের পানিতে শুক্রাণুর উৎপাদন বাড়ে। ডাবের পানি পটাসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। ডাবের পানিতে শুধু কিডনিই বাঁচে না, হার্ট অ্যাটাকও রোখা যায়। জাপানের কোবে ইউনির্ভাসিটির বায়োকেমিষ্ট্রির ডক্টরেটধারী গবেষক পি অনুরাগ জানিয়েছেন, ডাবের মধ্যে থাকা পটাসিয়ামসহ নানা উপাদান হার্ট অ্যাটাক রোখে। খরগোশ এবং ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় ইতিমধ্যে ডাবের পানির মাধ্যমে হার্টের রোগভোগ রোখার কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। কিছু দিন ধরে ডাবের পানি খাইয়ে যাওয়ার পর যখন দেখলেন এই পানি হার্টেরও শুশ্রুষাকারী, তখনই সিদ্ধান্ত নেন, মানুষের হার্টের উপর ডাবের পানির কার্যকারিতা সম্পর্কে গবেষণায় নামবেন। ইউনিভার্সিটি অব কেরলের বায়োকেমিষ্ট্রির প্রফসর টি রাজামোহনের নেতৃত্বে গবেষণা করেছেন একদল বিজ্ঞানী।
পশ্চিমা দেশগুলোর বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ডাবের পানিতে থাকা আর্জিনিন নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড রক্তের মধ্যেকার হিমোষ্ট্যাটিক সাবষ্টেন্স যা রক্তকে জমাট বাঁধিয়ে দেয়, সেটিকে তরল করে। আর্জিনিনের অ্যান্টিথ্রম্বোটিক গুণ রয়েছে। ডাবের পানি হিমোষ্ট্যাটিক সাবস্টেন্সকে নাইট্রিক অক্সাইডে পরিণত করে জানিয়েছেন ডাঃ শাহানা চৌধুরী। শাহানা জানিয়েছেন, দূষণজনিত ক্ষতির হাত থেকে লিভারকে সুরক্ষা দেয় ডাবের পানি।
ডাবের পানিতে তড়িৎ-বিশ্লেষ্যগত দ্রবণ হিসেবে যেসব উপাদান মেলে তা শরীরে বিদ্যুৎ প্রবাহ বজায় রাখতে কাজ করে অবিকল আমাদের রক্তের প্লাজমার মতোই। উল্লেখ্য, প্লাজমা হল রক্তের তরল অংশ যার মধ্যে রক্তকণিকা বা মেদকণাগুলো আলম্বিত হয়ে থাকে। এককথায় যাদের রক্তরস বা রক্তমস্তু বলে। ফলে ডিহাইড্রেশনের মোকাবিলায় অর্থাৎ শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের ঘাটতি পূরণে ডাবের পানি তাই অব্যর্থ বিকল্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভিয়েতনামে আহত সৈনিকদের কমার্শিয়াল দ্রবণের অভাব পূরণ করছিল ডাবের পানি। সরাসরি ডাবের পানি প্রয়োগে দু’পক্ষের জখম সৈনিকদের অনেকেই বেঁচে গিয়েছিলেন।
দুধের চেয়েও লাভপ্রদায়ী ডাবের পানি। এতে ফ্যাট কম, কোলেস্টেরল নেই। কমলালেবুর রসের চেয়ে বেশি লাভপ্রাদায়ী এই পানি। ক্যালোরিও অনেক কম। প্রকিয়াকরণ করা কৃত্রিম বেবি মিল্কের চেয়েও পানি ভাল, কারণ এতে থাকে লরিক অ্যাসিড যা মাতৃদুগ্ধে থাকে। ডাবের পানি প্রকৃতিগতভাবেই বিশুদ্ধ তথা জীবাণুমক্ত। একমাস বয়সী একটি পূর্ণাঙ্গভাবে ৪০০ থেকে ৪৬৫ সিসি পানিতে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে তা একজন মানুষের সারাদিনের চাহিদা মেটাতে পারে।
ডাবের পানির প্রতি ১০০ মিলিতে পটাসিয়াম থাকে ৩১২ মিলিগ্রাম। সোডিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম। ম্যাগনেসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম। ক্যালসিয়াম ২৯ মিলিগ্রাম। আয়রন ০.০১ মিলিগ্রাম। কপার ০.০৪ মিলিগ্রাম। ফসফরাস ৩৭ মিলিগ্রাম। সালফার ২৪ মিলিগ্রাম। ক্লোরাইড ১৮৩ মিলিগ্রাম। শক্তি ২৪ ক্যালোরি। উল্লেখ্য, ডাবের পানিতে প্রচুর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ থাকে। গ্লুকোজ, প্রোটিন ছাড়াও ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজ পদার্থ থাকে। ডাবে যেসব ভিটামিন থাকে সেগুলো হল নিয়াসিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, বায়োটিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, ফোলিক অ্যাসিড , থিয়ামিন ও অল্পমাত্রায় পাইরিডক্সিন। ডাবের পানিতে যে প্রাকৃতিক সুগার থাকে তা শরীর সহজেই আত্মস্থ করে। স্পোর্টস ড্রিংকের চেয়ে ডাবের পানিতে বেশি পটাসিয়াম থাকে। স্পোর্টস ড্রিংকে পটাসিয়াম ১১৭ মিলিগ্রাম। ডাবের পানি ৩২১ মিলিগ্রাম। স্পোর্টস ডিংকে সোডিয়াম থাকে অন্যান্য এনার্জি ডিংকে আরও বেশি যথাক্রমে ৪১ মিলিগ্রাম এবং ২০০ মিলিগ্রাম। ডাবের পানিতে সোডিয়াম থাকে ১৫ মিলিগ্রামের মতো। স্পোর্টস ড্রিংকে মাত্র ৩৯ মিলিগ্রাম ক্লোরাইড থাকে ডাবের পানিতে পরিমাণটা তখন ১৮৩ মিলিগ্রাম। ডাবের পানিতে যখন পাঁচ গ্রাম প্রাকৃতিক সুগার, যে সুগার শরীর সহজেই আত্মস্থ করতে পারে, স্পোটর্স ডিংকে তখন রূপান্তরিত সুগারের পরিমাণ ২০ থেকে ২৫ গ্রাম। অ্যাসিডিটি তথা অম্বলের সমস্যা মোকাবিলায় ডাবের পানি মহৌষধ। যাঁরা অ্যাসিডের ভোগান্তিতে জেরবার, তাঁরা সকাল সকাল একটা ডাব খেয়ে দিন শুরু করুন। পারলে দুপুরে-বিকেলেও ডাব খান। ডাব অ্যান্টাসিডের কাজ করবে, দ্রুত অম্বলের জ্বালা থেকে রেহাই মিলবে।
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।