পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উজানভাগে ভারতে অতিবৃষ্টি ও প্রবল বন্যার জেরে এবার দেশের গঙ্গা-পদ্মা নদীঅঞ্চল বন্যার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদী অববাহিকায় উজানে ভারতে অতিবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নামছে অবিরাম ঢলের পানি। এ কারণে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃহত্তর রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর ও এর আশপাশ অঞ্চল বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পদ্মার ভাটিতে মধ্যাঞ্চলেও রয়েছে বন্যায় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা। আর এ বন্যা হতে পারে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি। গতকাল রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের অন্তবর্তী পূর্বাভাস প্রতিবেদনে একথা জানা যায়।
পাউবো’র সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানা গেছে, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। তা আগামী ৪৮ ঘণ্টায়ও বজায় থাকতে পারে।
গঙ্গা নদীর পানি গতকাল বিকেল পর্যন্ত আরও বৃদ্ধি পেয়ে পাংখা, রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার যথাক্রমে ৬৫, ৬৫ ও ১৮ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়। গঙ্গার ভাটিতে পদ্মা নদীতে পানি এ মুহূর্তে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটছে। গতকাল পদ্মার গোয়ালন্দ, ভাগ্যকুল ও সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার যথাক্রমে ৩, ৩৪ ও ৫৯ সে.মি. নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও সংলগ্ন কয়েকটি প্রদেশে এবং নেপালে গত দুই সপ্তাহ ধরে মাঝারি থেকে ভারী ও অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে করে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় গতকাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে মারা গেছে কমপক্ষে ৭৩ জন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আরো জানা যায়, বর্তমানে উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া অতিভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে বিহার রাজ্যও। বন্যায় অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। পাউবো জানায়, গতকাল ২৪ ঘণ্টায় বিহারের রাজধানী পাটনায় ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গঙ্গার উৎস বা উজানের অববাহিকায় বিশেষত উত্তর প্রদেশ, বিহার ও নেপালে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ঢল-বানের পানিতে গঙ্গা নদী ফুলে-ফুঁসে উঠেছে। আর সেই ঢল গড়িয়ে আসছে গঙ্গা-পদ্মায় বাংলাদেশের ভাটির দিকে। এ অবস্থায় অক্টোবরের শুরুতেই গঙ্গা-পদ্মা পাড়ে বন্যার আশঙ্কা এ মুহূর্তে বেড়ে গেছে। তাছাড়া ভারত উজানে বানের পানির চাপ সামাল দিতে গিয়ে নিজের স্বার্থেই যদি গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধের গেইট-স্পিলওয়েগুলো খুলে দেয় তখন ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে তীব্রবেগে নামবে ঢল-বানের পানি।
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল অন্তবর্তী পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে গঙ্গা অববাহিকার উজানের ভারতীয় অংশে মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গঙ্গা নদীর বাংলাদেশ অংশে পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে থাকে।
মাসের মাঝামাঝি বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে এলেও চতুর্থ সপ্তাহের শেষের দিক থেকে ভারতের বিহার প্রদেশের কোথাও কোথাও অতিভারী বর্ষণসহ অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যা অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এর প্রভাবে গঙ্গা নদী বাংলাদেশের রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এবং গড়াই রেলওয়ে ব্রিজ ও কামারখালী পয়েন্টে এ সপ্তাহে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে চলতি সপ্তাহে গঙ্গা নদী সংলগ্ন দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কতিপয় স্থানে মাঝারি মাত্রার স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকুল পয়েন্টে এবং পদ্মা সংলগ্ন যমুনার আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী সংলগ্ন দেশের মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বর্তমানে হ্রাস পাচ্ছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি সপ্তাহের শেষে এ অববাহিকার নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপদসীমা অতিক্রম বা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭টিতে পানি বৃদ্ধি, ৪৩টিতে হ্রাস পায় এবং ৩টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।