Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

উচ্ছেদের পরপরই দখল কাওরান বাজার-সাতরাস্তা সড়ক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

 উচ্ছেদের পরপরই দখল হয়ে গেছে রাজধানীন কারওয়ান বাজার থেকে সাতরাস্তা মোড়ের সড়কটি। এতে আবারও দেখা দিচ্ছে যানজট, বাড়ছে দুর্ভোগ। গত সোমবার এক দফায় উচ্ছেদের পর গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় কারওয়ান বাজার থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত সড়ক ও এর আশেপাশের এলাকার সড়কগুলোর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়। এসময় উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিত থেকে এ উচ্ছেদের তদারকি করেছিলেন। উচ্ছেদ শেষে মেয়র সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কারওয়ান বাজার ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ অফিসের আশেপারে সড়কগুলো সর্বচ্চো প্রায়রিটি দিয়ে আমরা উচ্ছেদ করেছি। এ সড়কগুলো যেন নতুন করে আর কেউ দখল করতে না পারে সেজন্য এখানে আমরা একটি পুলিশ পাঁড়ি স্থাপন করবো।
কিন্তু গতকাল শুক্রবার দুপুরের পরে সরেজমিন কারওয়ান বাজার থেকে সাতরাস্তার দিকের সড়টিতে তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। মেয়র আতিকুল ইসলাম অনেক হাঁক-ডাক দিয়ে কারওয়ান বাজার ও সাতরাস্তার এই সড়কটিসহ আশেপাশের সড়গুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের একদিন পর আবার পূর্বের ন্যায় দখল হয়ে গেছে। কারওয়ান বাজার রেলগেট থেকে সাতরাস্তার দিকে যেতে সড়কটি আবারও বিভিন্ন ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের দখলে চলে গেছে। এতে করে আবারও এই সড়কে যানজটের দেখা দিয়েছে। এই সড়কটি এমটিতে সুরু তার উপর সড়কের দুই পাশে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান দাঁড় করি রাখায় দু’টি রিকশাও সাইড নিতে পারে না। পায়ে হেটে চলালচতো আরও দুরূহ হয়ে গেছে।
তেজতুরি পাড়ার বাসিন্দ রিকশা চালক রিপন মিয়া বলেন, এই সড়কটি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তার উপরে অবৈধভাবে দাঁড় কারে রাখা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান অপরাসণ করা হয়েছে গতকাল। অথচ আজকেই আবার আগের আবস্থায় ফিরে গেছে। তাহলে এমন উচ্ছেদের কি প্রয়োজন আছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আনিসুল হক বেঁচে থাকতে সড়কগুলো পুরোপুরি দখলমুক্ত ছিল। জনগণের সুবিধার জন্য, মূল সড়কটিকেও দারুণভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। কিন্তু আনিসুল হকের পর এই সড়কগুলো উচ্ছেদে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। যা করা হচ্ছে এটাকে অনেকেই ইঁদুর বেড়াল খেলা বলেই মনে করেন। দ্রæত কিছু করা না হলে শিগগিরই পুরো রাস্তা আগের মতো বেদখল হয়ে যাবে। এদিকে খাদ্য গুদাম ও সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার লাগোয়া রাস্তাটি এরই মধ্যে দখল হয়ে গেছে। আশপাশের অন্যান্য রাস্তাও ওয়ার্কসপ এবং গাড়ির স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে রাজধানীর কাওরান বাজার ও খিলক্ষেতে। এ অভিযানে কারওয়ান বাজারে দীর্ঘদিন দখলে থাকা ডিএনসিসি’র একটি তিনতলা ভবনসহ প্রায় এক হাজার স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ডিএনসিসি’র প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং সাজিদ আনোয়ারের নেতেৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। কারওয়ান বাজারে অভিযানকালে প্রায় তিন শতাধিক অস্থায়ী দোকান, শেড, ফুটপাতের উপর নির্মিত স্থাপনা ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়েছে। আর খিলক্ষেতে প্রায় ছয় শতাধিক অস্থায়ী স্থাপনা ফুটপাত ও সড়ক থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। কারওয়ানবাজারের অভিযানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক অফিসের পশ্চিম দিকে তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের কারওয়ানবাজার শাখা, জনতা টাওয়ারের পশ্চিমে জাতীয় যুব সংহতি ও উত্তর দিকে জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের নীচে কৃষক লীগের তেজগাঁও থানা কার্যালয় উচ্ছেদ করা হয়। এরপর কারওয়ানবাজারের কাঠপট্টি এলাকায় দোকান মালিকদের একটি তিন তলাবিশিষ্ট স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়াও এ অভিযানে জাতীয় শ্রমিক লীগ তেজগাঁও আঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযানে ব্রিফিংকালে ডিএনসিসির মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, কাওরান বাজার এলাকায় সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন একটি জায়গা ইতোমধ্যে নির্ধারণ করেছে।
মেয়র বলেন, জনগণের জন্য ফুটপাত, রাস্তা। কিন্তু একটি গোষ্ঠী ফুটপাত দখল করতে করতে রাস্তাও দখল করে ফেলে। বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি করছে। এই রাস্তা, ফুটপাত জনগণের টাকায় হয়েছে। তারা এই দখল চায় না। দখল উচ্ছেদের পরও আবার দখল করা হয়। তাই আমরা এখানকার একটি জায়গা ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য পুলিশকে দেবো। পুলিশ ফাঁড়ি থেকেই এ এলাকায় ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশও দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য একটি জায়গা চাচ্ছিলো। আমরা জায়গা চ‚ড়ান্ত করেছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশকে জায়গাটি দেওয়া হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ