Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাস্তার মাঝে বিদ্যুৎ খুঁটি : চরম দুর্ভোগ

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

কুষ্টিয়ায় সড়কের মাঝে ৪২ খুঁটি, সড়ক প্রশস্ত হলেও সুফল পাচ্ছে না জনগণ। কুষ্টিয়া শহরের একমাত্র প্রধান সড়ক এনএস রোড অধিকাংশ ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে ওঠেছে এ সড়কেই। প্রায় দুই কিলোমিটারের এ সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ৪২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি। সামন্য দ‚রত্বের ব্যবধানে সে সব খুঁটির অবস্থান। কিছু কিছু খুঁটি আবার সড়কের মাঝখানে পরে গেছে।

পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, খুঁটি সরানোর ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগকে একাধিকবার চিঠি দিলেও কাজে কোনো অগ্রগতি নেই।
তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, পৌরসভা প্রথম পর্যায়ে শতাধিক খুঁটি সরোনোর জন্য চিঠি দিয়েছিল। পরে তারা সেটা কমিয়ে ৫০-এর নিচে নেমে এসেছে।

পৌরসভা স‚ত্র জানায়, কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত এনএস রোডের প্রায় দুই কিলোমিটার পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রধান নালা নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নালা নির্মাণের ফলে সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। সড়কের উভয় পাশে অন্তত আট ফিট করে সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ‘নেশন টেক’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। চলতি বছরের মার্চ মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, কাজ এখনও চলছে। বর্ধিত অংশে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এরপর পুরো সড়ক সংষ্কার করার কথা। সড়কের প্রশস্থকরণ কাজ শেষ পর্যায়ে। এদিকে সড়ক প্রশস্থ হলেও কাজে আসছে না সড়কের মাঝখানে অনেকগুলো বিদ্যুতের খুঁটি থাকায়। বিভিন্ন সময়ে ওই সড়কে চলতে গিযে যানজট বেধে যাচ্ছে। এমনকি খুঁটিতে ধাক্কা লেগে ছোট দুর্ঘটনাও ঘটছে।
সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক নির্মাণের পর খুঁটি সরালে সড়ক ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পৌরসভা স‚ত্র জানায়, গেল বছর সড়কের কাজ শুরুর সময় সার্ভে করে দেখা যায় ওজোপাডিকোর অন্তত ১২২টি বিদ্যুতের খুঁটি সরানো লাগবে। এ জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে ওজোপাডিকোকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে খুঁটি সরানোর বিষয়ে অর্থ ব্যয়ের প্রাক্কলন চাওয়া হয়। তারা দেড় কোটি টাকা খরচের বিবরণ দেয়। এত টাকা বরাদ্দ না থাকায় খুঁটির সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। সর্বশেষ ৪২টি খুঁটি সরানোর জন্য আবারও চিঠি দেওয়া হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, দ্রæত গতিতে সড়ক প্রশস্থকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এতে করে বেশিরভাগ জায়গায় সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সড়কের দুইধারে প্রায় আট ফিট করে প্রশস্থ হলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। খুঁটিগুলোর কারণে আগের মতোই যানজট লেগে আছে। মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত একটু পরপরই সড়কের মাঝখানে খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। সবচেয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে বক চত্বর থেকে একতারা মোড় পর্যন্ত।

সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী আকিল আহমেদ বলেন, সড়ক প্রশস্থ হচ্ছে দেখে ভালো লাগে। বৈদ্যুতিক খুঁটি আগের জায়গায় রয়ে গেছে। এখন যানজটের সঙ্গে তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

সড়ক নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেশন টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখারুল ইসলাম শিমুল বলেন, সড়কের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু পিচ বাকি আছে। তবে সড়কের মাঝে খুঁটি পড়ে যাওয়ায় ইট খোয়া বালু রোলার করতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া পরবর্তীতে খুঁটি সরানো হলে সেখানে সড়ক আবার খোঁড়া হবে। যার ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, খুঁটিগুলো সরানোর বিদ্যুৎ বিভাগকে আবারও চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ সড়ক যান চলাচলে সারা দিন ব্যস্ত থাকে। যে কোনো মুহ‚র্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই শঙ্কায় বিদ্যুৎ বিভাগকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ওজোপাডিকো কুষ্টিয়া কার্যালয়ের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী প্রণব কুমার বলেন, খুঁটি সরানোর জন্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচের একটা প্রাক্কলন চিঠি পৌরসভায় পাঠানো হয়েছে। তারা এখনও অনুমোদন দেয়নি। তবে খুঁটি সম্প‚র্ণভাবে সরাতে তিন থেকে চার মাস লেগে যেতে পারে। ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় দিনে কাজ করা সম্ভব হবে না। রাতেই সব কাজ করতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাস্তা

২২ অক্টোবর, ২০২২
৩ অক্টোবর, ২০২২
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ