মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে পাকিস্তানের তিনটি প্রদেশ। মঙ্গলবার বিকেলে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে নারী ও শিশু সহ নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। আহত হয়েছেন ৪ শতাধিক মানুষ। তার মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্পের আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আজাদ কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও খাইবার পখতুনখাওয়া প্রদেশ। শত শত বাড়ি, গাড়ি ও অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোবাইল ফোন সার্ভিস, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। আক্রান্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারীদের। রাস্তাঘাট, বাড়িঘরের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। চারদিকে বিধ্বস্ত এক পরিস্থিতি। রাস্তাগুলো ফেটে, ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।
এতে বলা হয়, ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব ছিল ৮ থেকে ১০ সেকেন্ড। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রাণহানীতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এবং সেনাপ্রধান জেনারেল জাভেদ বাজওয়া বেসামরিক ও সামরিক এজেন্সিগুলোকে জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। ভূমিকম্পের উৎস ছিল আজাদ কাশ্মীরের মিরপুর শহরের কাছে। এ স্থানটি পাঞ্জাবের ঝিলম থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে। স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার পর এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রধান আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ রিয়াজ বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আজাদ কাশ্মীরের মিরপুর জেলা। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আফজাল বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।
মিরপুর বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তায়েব বলেছেন, যেহেতু আজাদ কাশ্মীরের ভিতরে ছিল ভূমিকম্পের উৎস তাই জাতলান এবং খারি শরিফের মধ্যবর্তী অঞ্চল খুব বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। এতে শত শত বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে যানবাহন ও অবকাঠামোর। মিরপুরে ডিভিশনাল হেডকোয়ার্টার হাসপাতালে আনার পথে অথবা হাসপাতালে কমপক্ষে ১২ জন মারা গেছেন। জাতলান ও খারি শরিফের বিভিন্ন গ্রামে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৩ জন। আহতদের মধ্যে ১৫০ জনকে নেয়া হয়েছে এই হাসপাতালে। ৫ জনকে নেয়া হয়েছে সিএমএইচ মাঙ্গলা ও সিএমএইচ রাওয়ালপিন্ডিতে।
ওদিকে মিরপুরের এফ-ও সেক্টরের বাসিন্দা ওয়াহিদ হামিদ (৪০) ভাট বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় আমি বাড়িতেই ছিলাম। অকস্মাৎ ছাদ ভেঙে আমাদের ওপর পড়া শুরু হলো। টুকরো টুকরো হয়ে কংক্রিট পড়তে শুরু করলো। সঙ্গে সঙ্গে আমরা দৌড়ে বাইরে চলে আসি। আশপাশের অন্যরাও তখন বাইরে এসে সমবেত হয়েছেন। শিশুরা তখন চিৎকার করছিল। বয়স্করা কালেমা পড়ছিলেন। এ এলাকায় ভূমিকম্পের এমন ভয়াবহতা এর আগে কখনো আমি দেখি নি।
ওদিকে মিরপুর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ৮ম সেমিস্টারের ছাত্র হামিদুল্লাহ এতটাই আতঙ্কিত হয়েছিলেন যে, তিনি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন। এতে তিনি মারাত্মক আহত হয়েছেন। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এমন অবস্থায় আজাদ জম্মু কাশ্মীরের স্পোর্টস, যুব ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী চৌধুরী মোহাম্মদ সাঈদ বলেছেন, শহরের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
মোহাম্মদ তায়েব বলেছেন, ভূমিকম্পে বেশ ক্ষতি হয়েছে আপার ঝিলম ক্যানালের বিভিন্ন পয়েন্টে। সেখান থেকে পানি আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ক্যানালের পানির গতিপথ পরিবর্তন করে নেয়া হয়েছে ঝিলম নদীতে। ক্যানালের ওপরকার দুটি সেতু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্যানালের উভয় পাশে যে সড়ক আছে তা নদীর সমান্তরালে তা হয়তো ডুবে গেছে না হয় তাতে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অনেক ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।