পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে এই মুহূর্তে প্রায় ৬ লাখ মানুষ অবরুদ্ধ রয়েছেন। এর তিন-চতুর্থাংশই বাস করেন দামেক্সের বিভিন্ন শহরতলীতে এবং হোমস শহরের আল ওয়ারে এলাকায়। অবরুদ্ধ শহর আল ওয়ারে এলাকায় যারা বাস করছেন কিভাবে টিকে আছেন তারা? আল ওয়ারে শহরে দিনের সব সময় শোনা যায় বোমা হামলা কিংবা মর্টার বর্ষণের শব্দ। কিন্তু তার মধ্যেই বেঁচে আছেন এবং দৈনন্দিন জীবনযাপন চালিয়ে যাচ্ছেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। এখানেই নিজের পরিবারের ছয়টি অনাথ শিশুর প্রতিপালন করছেন ৮২ বছর বয়সি আশফাক। রোজ ভোরে প্রথমে তাকে ভাবতে হয় কিভাবে এই ছয়টি পেট ভরাবেন তিনি। এখানে এখন বাজার তেমন নেই। আর যা আছে তাতে তেমন কোন খাবারও থাকে না। যখন থেকে এই ছয়টি শিশু কিশোরের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছেন তখন থেকে আশফাক তাদের অভ্যাস করিছেন অল্পেই সন্তুষ্ট থাকতে।
আশফাক বলেন, যে রাতে ভয়ঙ্কর সেই রকেট হামলা হল সে রাতে আমরা সবাই আমাদের এক ভাগ্নের বাড়িতে ছিলাম। সেই হামলায় বাড়িটি ধসে গেল। আমার বোন, ভাই আর তার স্ত্রী সবাই মারা গেল। আমি এই বাচ্চা কটিকে নিয়ে বেঁচে রইলাম। জানিনা একে বিশ্ব যুদ্ধ বলব কিনা। সিরিয়ার এখন যে অল্প কয়েকটি শহর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে হোমসের জেলা, আল ওয়ারে তার অন্যতম। এক সময় এই শহরকে বলা হত বিদ্রোহের রাজধানী। পরিবর্তনের দাবি নিয়ে এখান থেকেই শুরু হয়েছিল এক ব্যাপক বিক্ষোভ। এখন শহরটি দখল করে রেখেছে বিদ্রোহীরা। আর তার ওপর অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকারি বাহিনী। ফলে খাবার, পানিয় এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে এক মানবেতর পরিস্থিতি। এমনকি ঢুকতে পারছে না জাতিসংঘের ত্রাণ বহরও।
নিজের চার বয়সি রুগ্ন বোনকে কোলে নিয়ে কিশোর আবু বারাক যাচ্ছিল তার আত্মীয়ের বাড়ির দিকে। উদ্দেশ্য যদি কিছু খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। আবু বারাক বলেন, আমারমত বয়সি যারা আছেন তারা আর কিছু চায় না, কেবল বিস্কুট আর একটু আলু পেলেই খুশি হই আমরা। আমার বোনের দিকে তাকিয়ে দেখুন কেন সে একটু খাবার পাবে না। খাবারের অভাব মেটাতে শহরটির অনেকেই এখন বাড়িতে অল্প কিছু সবজির চাষ করছেন। কেউ কেউ বার্লি দিয়ে রুটি বানাচ্ছেন। তবে সেগুলো বিক্রি করারমত পর্যাপ্ত নয়। বেশিরভাগ সময় পরিবারের সবাইকে তা দেয়া যায় না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শহরের খাদ্যাভাব মেটাতে সাহায্যের আবেদন নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক পেজ। তার মাধ্যমে কিছু কিছু সাহায্যও আসছে। কিন্তু বিদ্রোহী আর সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের কারণে সেগুলো বাঁধা পড়ে শহরের প্রবেশ মুখেই। শহরটিতে খাবার ও ওষুধ নিয়ে জাতিসংঘের ত্রাণবহর ঢুকতে দেয়ার দাবি নিয়ে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির কিছু মানবাধিকার কর্মী। বৃদ্ধ আশফাক বলছিলেন, তিনি আমৃত্যু অনাথ বাচ্চাগুলোর প্রয়োজন মিটিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে তাদের ঘাস খাওয়াবেন। বিবিসি, আলজাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।