বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শিক্ষক নিয়োগ এবং এমপিও বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর ‘মতিঝিল মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ’র বিরুদ্ধে। বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বর্তমান গভর্নিং কমিটি একের পর এক এ নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ নিয়োগ এবং এমপিও বাণিজ্যের নেপথ্যে লেনদেন হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা শামসী।
রেকর্ডপত্রে দেখা যায়, নিয়োগ পরীক্ষায় যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও ‘অভিজ্ঞতা’র দোহাই দিয়ে সমাজবিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ফাতেমা আক্তার এবং লুবনা আক্তারকে। ২০০১ সালের ২৫ জুন অনুষ্ঠিত গভর্নিং বডির সভায় এ দুই শিক্ষকের নিয়োগ সরকারি বিধি মোতাবেক হয়নিÑ মর্মে রেজুলেশন হয়। তাতে বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্ত এ দুই শিক্ষক সরকারি অনুদানের (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার-এমপিও) জন্য আবেদন করতে পারবেন না। বিগত গভর্নিং বডির স্পষ্ট এ রেজুলেশন গোপন করে ফাতেমা ও লুবনার এমপিওভুক্তি নিশ্চিত করে মো. আওলাদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিটি। নেপথ্যে রয়েছে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ। দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখ করে অভিভাবক মো. জামাল খন্দকার সম্প্রতি অভিযোগ দায়ের করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর গত ২৬ আগস্ট তদন্তে নামে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক প্রফেসর মো. মনোয়ার হোসেন এবং সহকারী পরিচালক (কলেজ) মো. এরফানুল হক শোয়েবের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি।
মোটা অংকের লেনদেনের বিনিময়ে এমপিওভুক্তির অভিযোগ তদন্ত চলমান থাকতেই অভিযোগ উঠেছে আরো অন্তত: ৩৫ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার। গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আওলাদ হোসেন এসব নিয়োগের সিদ্ধান্তে বেপরোয়া। কোনো নিয়োগপত্র না দিয়ে অন্তত: ২৭ জনকে দিয়ে ‘খÐকালিন শিক্ষক’ হিসেবে ক্লাস নেয়াচ্ছেন। আওলাদ হোসেনের সঙ্গে গোপন সমঝোতার ভিত্তিতে বিনাবেতনে ক্লাস নিচ্ছেন আঁখি বণিক, নাঈমা আফরোজ চৈতী, রহিমা বেগম, পাপিয়া পাল, মো. রেদোয়ান, তাহমিনা আলম, নাসরিন জাহান, আফরিন আহমেদ, নাজমা জামান, নাসরিন সুলতানা, মাহজাবীন মুনমু, রিফাত নূর, আফসানা আহসান, লামিয়া ইসলাম, মমতাজ আক্তার, রেহেনা পারভীন, সামসুন নাহার, ডলি দাস, সুমী আক্তার লাবন্য, নার্গিস সুলতানা, সামীমা আক্তার, শারমিন সুলতানা, হালিমা আক্তার, ফারজানা পারভীন, নূরসরাত জাহান তানহা, সুমাইয়া আক্তার এবং শামীমা আক্তার। এঁদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের স্ত্রী ও স্বজন। চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বাকীদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের অর্থ। এ বিষয়ে জানতে গতকাল শনিবার বিকেলে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আওলাদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। কথা বলেন গভর্নিং বডির সদস্য সচিব ও প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা শামসী। ৩৫ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার তথ্য স্বীকার করে ‘ইনকিলাব’কে তিনি বলেন, তাদের (নিয়োগের আশ্বাস পাওয়া শিক্ষক) সবাইকে ক্লাস করতে দেয়া হচ্ছে না। কাউকে কাউকে দিয়ে ‘টেস্ট ক্লাস’ নেয়া হচ্ছে। গভর্নিং বডি যদি মনে করেন তাদের নিয়োগ দেবেন তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই হয়তো নিয়োগ দেবেন। তিনি আরো বলেন, দু’জন শিক্ষকের এমপিওভুক্তির বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা গত ৪ সেপ্টেম্বর সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। যদ্দূর জানি এখনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।